Never Ask A Woman Her Age: মেয়েদের বয়স জিজ্ঞাসা করেন কি? একবারও ভেবে দেখেছেন এটা করলে মেয়েরা কেন রেগে যায়? প্রতিবেদন লেখা মানে শুধু কিছু তথ্য দেওয়া নয় এমন কিছু কথা তুলে ধরা যেগুলো সচরাচর আলোচনা হয় না। এমন কিছু ভাবনা নতুন করে ভাবতে শেখানো যাতে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তার প্রভাব পড়ে।
তাই আজ এমন একটা বিষয় নিয়ে এলাম যেটা নিয়ে প্রচুর তর্ক বিতর্ক টোন টিটকিরি সবটাই হয়ে থাকে, কিন্তু এর আড়ালে যে সমাজের এক দগদগে ক্ষত লুকিয়ে আছে, সেই খেয়াল কেউ রাখে না। আপনি মহিলা হোন বা পুরুষ মেয়েদের বয়স জিজ্ঞাসা করলেই মুশকিল তাই না? কিন্তু কেন?
মেয়েদের নাকি বয়স জিজ্ঞাসা করতে নেই?
সমাজে একটা প্রচলিত কথা আছে, মেয়েদের নাকি বয়স জিজ্ঞাসা করতে নেই। আপনি কি এই ভাবনায় বিশ্বাসী? অনেক মহিলারাই এর আসল কারণ জানেন না। কিন্তু এটাও ঠিক বেশিরভাগই বয়স সর্ব সমক্ষে প্রকাশ করতেও চান না। আগে বলা হত মেয়েরা লজ্জা পায়। অভিযোগ উঠেছে মেয়েরা নাকি বয়স লুকোয়।
তবে এই ডিজিটাল যুগে এটা কি সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য যে মেয়েরা এই সামান্য বিষয় নিয়ে লজ্জা পায়? তাহলে কী কারণ? আসলে এর উত্তর পেতে হলে বহুযুগ ধরে চলে আসা সংস্কারের দিকেই চোখ দিতে হবে সবার আগে। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে যে মেয়েরা নাকি ২০ তেই বুড়ি।
মেয়ে মানেই বিয়ের কনসেপ্ট:
অর্থাৎ মেয়েদের যোগ্যতার মানদন্ড তার বয়সের ভিত্তিতে। আর এর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায় মেয়ে মানেই বিয়ের কনসেপ্ট। পিরিয়ড শুরু হওয়া মানেই সেই মেয়ে মাতৃত্বের অধিকার পেয়ে যায় অর্থাৎ তাকে এবার বিয়ে দিয়ে দাও। ঠিক এই ভাবনা থেকেই কুড়ি তে বুড়ি কনসেপ্ট উঠে আসে সমাজের বুকে।
যার মাশুল আজও গুনতে হচ্ছে সকলকে। আসলে বয়স টা আসল কথা নয় আলোচ্য হচ্ছে বিয়ের বয়স কত হল সেই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার। যেন কুড়ি পেরোলেই শুনতে হবে , ‘এখনও বিয়ে হল না?’ । এটা সত্যি ঘটে তাই এত কথা বলতে হয়। তাই মেয়েরাও যেন এটা বুঝত শিখে গেছে যে কতটা বয়স পর্যন্ত সে সেফ সমাজের এই প্রশ্নের বিভীষিকাময় ভিলেনের হাত থেকে।
আরো পড়ুন – উচ্চশিক্ষার অন্যতম আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অক্সফোর্ড, পড়তে চান সেখানে?
কুসংস্কার মানুষকে কতটা পিছিয়ে দিতে পারে আমাদের চারপাশে ঘটতে থাকা প্রতিটা ঘটনা থেকে সেটা স্পষ্ট । ধরুন একটা বাচ্চা যদি জেনে যায় তার মুক্তির পথ কোনটা তাহলে সে সহজেই সেই দিকে পা বাড়ায়। কিন্তু যতক্ষন না পর্যন্ত সেটা খুঁজে পাচ্ছে ততক্ষণ তার গুরুজনের শাসন থেকে বাঁচতে তাকে পালাবার পথ খুঁজতে হয়। বলতে পারেন এটাই তার বাঁচার একমাত্র উপায়।
আরো পড়ুন – Manush Manusher Jonno: মানুষ মানুষের জন্য, এই ভাবনায় কি আপনি বিশ্বাসী?
মহিলাদের ক্ষেত্রে এটা সব থেকে বড় সত্যি। আসলে মেয়েদের বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই ভাবনা জন্ম নিয়ে ছিল সেইসময় মেয়ে মানেই বয়ঃসন্ধির পর বিয়ে একমাত্র চাওয়া ছিল তার পরিবার আর সমাজের। এখন সেখান থেকে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি আমরা। কিন্তু সেই যে চলে আসা একটা প্রথা বা কথা সহজে মুছে ফেলা যায় না।
আরো পড়ুন – এক কমপ্লেক্সে থেকেও পাশের ফ্ল্যাটের মানুষকে চেনেন কি? গ্রাম আর শহরের মধ্যে এই তফাৎটা কেন?
আজকের নারী এই নিয়ে ভাবিত নয় ঠিকই কিন্তু আজকের দিনে দাঁড়িয়েও অনেক মেয়েই বয়স প্রকাশ করতে চান না তাকে বুড়ি বলবে সবাই এই আশঙ্কায়। সবারই নিজের যৌবন কাল ধরে রাখার সুপ্ত বাসনা মনে থাকে। কেউ প্রকাশ করতে পারেন কেউ পারেন না।
আরো পড়ুন – অন্যান্য মহাদেশের থেকে এশিয়াতে কুসংস্কার এত বেশি কেন?
কিন্তু তাই বলে ঘটনা মিথ্যে হয়ে যায় না। তাই সেই প্রেক্ষিত থেকে দাঁড়িয়ে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন একমাত্র সম্ভব যদি মানসিকতার পরিবর্তন করা যায়। বয়স নিয়ে ভয় দূর করাতে হবে নারী মনন থেকে। তবে এই অবস্থা একটু একটু করে বদলাবে। আসলে বাঁচা টা দরকার। কীভাবে সেটা নিতান্তই ব্যক্তিগত। কেউই তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।