Naihati boro Maa Mandir: নৈহাটির বড়মাকে দর্শন করতে গেছেন কখনো? ইতিহাস জানলে শিহরিত হবেন আপনি! আমরা আজকে কথা বলব নৈহাটির বড়মাকে নিয়ে। এই ঠাকুরের ইতিহাস এবং ব্যাখ্যা জানলে রীতিমতো রোমাঞ্চিত হবেন আপনি।
নৈহাটির বড়মা কালি মন্দির:
ঈশ্বরের প্রতি মানুষের ভক্তি একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম। বলা হয় এই পৃথিবীতে হিন্দুদের মধ্যে যেমন বৈষ্ণব ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ রয়েছেন ঠিক সেরকমই কালী ভক্তের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। পৃথিবীতে যুগে যুগে একাধিক সাধক এবং অবতারের কথা হিন্দু ধর্মের প্রসঙ্গক্রমে উঠে এসেছে যারা মা কালীর বন্দনা গীতি গেয়ে গেছেন আজীবন।
রামপ্রসাদ বামাক্ষ্যাপা শ্রী রামকৃষ্ণ -নামের তালিকা টা কিছুতেই ছোট হওয়ার নয়। হিন্দুদের ৩৩ কোটি দেবদেবীর কথা বলতে গেলে মা কালীর বিভিন্ন রূপের কথা সবার আগে মনে আসে। বাংলার বারো মাসের প্রায় প্রত্যেক মাসেরই শনি কিংবা মঙ্গলবার অমাবস্যা তিথি মেনে কোথাও না কোথাও কালী মায়ের পূজো করার রীতি রয়েছে (naihati boro maa puja time)।
নৈহাটিতে পুজিতা বড় মায়ের বর্ণনা:
প্রথমেই মা কালীর রূপের বর্ণনা দেব। উচ্চতা প্রায় ২১ ফুট। ১৪ হাত লম্বা এই কালি নৈহাটিতে পুজিতা হন। প্রায় ১০০ বছর হতে চললো এই পূজো। নৈহাটির বড় মায়ের পূজো নিয়ে আর মাহাত্ম্য নিয়ে ভক্তদের মধ্যে অটুট বিশ্বাস রয়েছে। এই মায়ের মন্দিরে সব ধর্মের মানুষ আসেন নিজেদের মনোবাঞ্ছা পূরণের উদ্দেশ্যে।
এখানকার মা কালী এতটাই জাগ্রত যে কাউকে তিনি খালি হাতে ফেরান না বলেই লোকমুখে বিশ্বাস। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির অরবিন্দ রোডে অমাবস্যার রাতে এই পুজোকে ঘিরে লক্ষ লক্ষ ভক্তদের ঢল নামে। এখানকার মায়ের পুজোর ইতিহাস জানতে গেলে প্রায় ৯০- ৯৫ বছর আগে ফিরে যেতে হবে আমাদের।
আরো পড়ুন – iPhone: আইফোনের স্বপ্ন সবার কি পূরণ হয়? কেন মধ্যবিত্তের কপালে জোটে না আইফোন?
কথিত আছে স্বর্গীয় ভবেশ চক্রবর্তী এবং তাঁর চার বন্ধু মিলে ভাঙা রাসের মেলা দেখতে গিয়েছিলেন।সেখানে গিয়েই রাধাকৃষ্ণের বিশালাকার মূর্তি দেখে, নৈহাটির ছোট রক্ষাকালীর মূর্তিকে বড় আকার দেওয়ার পরিকল্পনা ভবেশবাবুর মাথায় আসে (naihati boro maa history)।
প্রাথমিকভাবে চক্রবর্তী বাড়িতে পুজো শুরু হলেও পরে তা সর্বজনীন পূজোর আকার নেয়। এই পূজোর জন্য আলাদা করে কোন চাঁদার প্রয়োজন হয় না। ভক্তদের দান থেকেই পূজোর সব খরচ উঠে আসে।
আরো পড়ুন – স্বাস্থ্য সাথী কার্ড-এ ক্যান্সারের চিকিৎসা কি সম্ভব? স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে নয়া বদল আনল রাজ্য সরকার?
বড়মার মাতৃমূর্তি সম্পর্কে একটু জানা যাক:
এখানকার মা কালীর মূর্তি আগাগোড়াই সোনা এবং রুপার গয়নায় মোড়া থাকে। ভক্তদের দেওয়া প্রায় দেড় কোটি টাকার গয়না ব্যাঙ্কের লকারে সারা বছর রাখা থাকে। শুধুমাত্র পূজোর সময় গয়না বের করে এনে মাকে সাজানো হয়। মায়ের জন্য বর্তমানে ১০০ ভরি সোনা আর ২০০ ভরি রুপার গয়না রাখা আছে।
আরো পড়ুন – বিছানায় পড়লেই যাদের ঘুম আসে চোখে, তারা সব থেকে সুখী মানুষ জানেন কি?
বিসর্জনের আগে সেই আসল গয়না খুলে মাকে ফুলের গয়নায় সাজানো হয় এবং প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। দুর্গাপুজোর পর কোজাগরী পূর্ণিমার দিন থেকেই কাঠাম প্রস্তুত করা হয়। প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন হাজার হাজার ভক্তের ঢল নামে মায়ের কাছে।
বৈষ্ণবমতে দক্ষিণা কালী রূপে মা এখানে পূজিতা হন। পাঁচ দিন ধরে হৈ হৈ করে মায়ের পূজার শেষে বিসর্জনের দিন মন ভারাক্রান্ত হয় এলাকার সকলের। অপেক্ষার আবার একটা বছরের দিন গোনা শুরু হয়ে যায় তখনই।