Breaking Bharat: এই ধরনের মহিলাকে চুম্বন করলে পুরুষের মৃত্যু অবধারিত? কিন্তু কারা এরা (Poisoned girls)? এই জগত সংসারের অনেকটাই কল্প বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। জীবজগতের বিভিন্ন কার্যকলাপে যেমন বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি আছে তেমনি কল্পনাও রয়েছে সমান পরিমাণে।
আর সেই কল্প জগতের কিছু কিছু আখ্যান বাস্তবে সঙ্গেও হুবহু মিলে যায়। আপনি কি বিষকন্যাদের নাম শুনেছেন? জানতে চান এদের আসল কাহিনী? কারা এরা এমন প্রশ্ন জাগে মনের মধ্যে? শুধু কল্পনা নয় ভারতের প্রাচীন সাম্রাজ্যের বিভিন্ন আক্ষানে পাওয়া যায় এদের কাহিনী।
এই কন্যাদের ভুল করে চুম্বন করতে গেলেই মৃত্যু অবধারিত:
নারী এবং পুরুষের মিলন খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা। এরই সঙ্গে জুড়ে থাকা নানা কাহিনী পৌরাণিক এবং ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ধারণা করা হয় যে খ্রিস্টপূর্বাব্দে অর্থাৎ যীশুখ্রীষ্টের জন্মের আগে এই বিষ কন্যাদের উপস্থিতি। এক্ষেত্র পুরুষের কারণেই এই নারীর সৃষ্টি আর পুরুষের ধ্বংসের কারণও এই নারীরাই।
শত্রুপক্ষের রাজাদের ধ্বংস করতে এককালে রাজারাই বিষকন্যা সৃষ্টি করেছিলেন। এই কন্যাদের ভুল করে চুম্বন করতে গেলেই মৃত্যু অবধারিত কারণ এদের ঠোঁটের মধ্যেই লাগানো থাকতো বিষ (poison was placed in the lips)! প্রাচীন ইতিহাস ঘটলে দেখা যায় স্বাস্থ্য বলা আছে রমণীদের আপন করার আগে তার ওষ্ঠ ধুয়ে নেওয়া দরকার।
বিষ কন্যাদের নিয়ে কিছু বিতর্কিত তথ্য:
এর থেকেই পুরস্কার তাদের বিষকন্যা হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন স্বয়ং চাণক্য। বিভিন্ন প্রাচীন উপাখ্যান ঘাটলে বিষ কন্যাদের নিয়ে কিছু বিতর্কিত তথ্য পাওয়া যায় তবে তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয় না। আসলে শৈশব থেকে প্রতিদিন অল্প অল্প বিষ খাইয়ে এই সমস্ত কন্যাদের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়িয়ে দেওয়া হতো অর্থাৎ সহ্য ক্ষমতা বাড়ানো হতো।
পরবর্তীতে এইসব পালিতা বিষকন্যাদের ব্যবহার করা হতো মূলত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং প্রতিপক্ষকে মিল ফেলার জন্য। নারীর রূপে কাবু ক্ষমতাবান পুরুষেরা সহজেই বশ হয়ে যেতেন। কখনো নর্তকী হিসেবে কখনো বা গুপ্তচর হিসেবে শত্রুপক্ষের শিবিরে বিষ কন্যাদের পৌঁছে দেওয়া হতো । তারপর তাদের শরীরের আবেদনে সাড়া দিয়ে পুরুষ যদি ঠোঁটে ঠোঁট লাগাতো ব্যাস সব শেষ।
ভেঙে পড়েন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য,ছুটে আসেন চাণক্য:
চাণক্য কে নিয়ে যখন কথা বলতে শুরু করেছিলাম তাহলে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কথা বলতেই হয়। মৌর্য সম্রাটের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় তাকে সব দিক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন চাণক্য। চন্দ্রগুপ্ত কে বিষ পুরুষ করে তোলার জন্য প্রতিদিন তার খাবারই অল্প অল্প করে বিষ মিশিয়ে তার সহ্য শক্তিকে বাড়াতেন চাণক্য।
কিন্তু একদিন চন্দ্রগুপ্ত তার অন্তঃসত্তার স্ত্রীর সঙ্গে নিজের খাবার ভাগ করে নেন আর তাতেই দুর্ভাগ্য নেমে আসে তার পরিবারে। ভেঙে পড়েন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ছুটে আসেন চাণক্য। কোনমতে রক্ষা করা হয় তার সন্তানকে। একফুটে নীল বিষ তখন সদ্যোজা তোর কপালে, সেই হলো বিন্দুসার।
অনেকটা সাপেদের মতই বিষ কন্যাদের বিষ ফুরিয়ে যেত:
তবে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের জীবনেও এসেছেন বিষ কন্যা। জনশ্রুতি আছে এক বার ক্ষমতালোভী ধননন্দ চন্দ্রগুপ্ত কে শেষ করে উদ্দেশ্যে এক বিষ কন্যাকে পাঠান মৌর্যের দরবারে। চাণক্য সবটা বুঝতে পেরে সেই বিষ কন্যাকে পাঠিয়ে দেন পর্বতক এর যুদ্ধে ।
আরো পড়ুন – clean teeth : টয়লেটের সঙ্গে টুথপেস্ট এর সম্পর্ক! দাঁতের যত্ন নিতে প্রস্রাব দিয়ে দাঁত পরিষ্কার?
তারপর সে বিষকন্যার ওষ্ঠে চুম্বনের পরই যা হবার সেটাই হলো মারা গেলেন পর্বতক। বিষকন্যাই সরিয়ে দিল চন্দ্রগুপ্তের পথের কাঁটা! তবে একবার বিষ ঢেলে দিতে পারলে অনেকটা সাপেদের মতই বিষ কন্যাদের বিষ ফুরিয়ে যেত। আলেকজান্ডার নিজেও বিষ কন্যার রূপে মোহিত হয়েছিলেন।
বিষকন্যাদের নিয়ে যেসব কল্পিত কাহিনী:
কিন্তু মহান দার্শনিক সক্রেটিস সবটা বুঝতে পেরে আলেকজান্ডার কে সাবধান করে দেন। এখানে মনে রাখা দরকার যে বিষকন্যাদের নিয়ে যেসব কল্পিত কাহিনী (Myths about poisoned girls) এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে ইতিহাস প্রচলিত আছে , তার ওপ র বিশ্বাস রেখে বিষ পুরুষের কথাও প্রসঙ্গে আনতে হয়।
আরো পড়ুন – Black magic : যেখানে অমাবস্যায় যেতে ভয় পান সকলেই? জাদু করে বশ করা হয় মানুষকে?
মনে করা হয় বিষকন্যা দের উৎপত্তিস্থল ভারতেই ছিলো বিষপুরুষ। গুজরাতের সুলতান মাহমুদ শাহ তারই মধ্যে অন্যতম।ভারতের ইতিহাসে আরো একজন বিষপুরুষের নাম পাওয়া যায় তার নাম নাদির শাহ। শোনা যায় তার নিঃশ্বাসেও নাকি ছিল বিষ।
আরো পড়ুন – Kottankulangara : শাড়ি কি শুধুই মহিলাদের পোশাক? ভারতের কোন স্থানে পুরুষ শাড়ি পরে, জানেন কি?
সবটাই করা হতো শত্রু নিধনের জন্য। ওই যে একটা কথা প্রচলিত আছে, everything is fair in love and war. সেটাই যেন বাস্তব প্রাচীন ভারতের কাহিনীতে ফুটে ওঠে।