Breaking Bharat: জীবনে বেঁচে থাকার সময় লড়াই করার অধ্যায়টা মেয়েদের কেন বেশি হয় বলুন তো? পুরুষেরা মহিলার পাশে থাকতে গেলে সমাজের কটাক্ষর শিকার হতে হয় কেন?
একটা জীবনে একাধিক কাজকর্ম করতে হয় আমাদের কিছুটা ইচ্ছেতে কিছুটা অনিচ্ছাতে। জীবন কার মতো করে গতিপথ এগিয়ে নিয়ে যায়। আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সারা জীবন কাটিয়ে শেষ পর্বে পৌঁছে আমাদের মনে হয় নিজের ইচ্ছেটুকুও প্রকাশ করতে পারলাম না।
এই বেশিরভাগই হয় একটাই কারণে সমাজের কথা ভেবে নিজেকে লুকিয়ে গুটিয়ে রাখার মধ্যে । অদ্ভুত সমাজ আমাদের কিছু করলেও দোষ আবার কিছু না করলেও সমস্যা। চলুন সমাজের এই দ্বৈত চরিত্রের খোঁজ নেওয়া যায়।
কিছু সৃষ্টি করতে আপত্তি আর সমস্যা কোথায়?
সমাজে যাই হয়ে যাক না কেন প্রধান চরিত্র হচ্ছে নারী এবং তারপর পুরুষ। যদিও পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তবুও মেয়েদের নিয়ে মাথা ব্যথা বড্ড বেশি। একটা মেয়ে যখন বাবা-মায়ের আঁচল ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে যায় তখন কিছুতেই আর তার অন্য বাড়ির মেয়ে হয়ে ওঠা হয় না বৌমা হয়েই থেকে যেতে হয়।
কেন সমাজ এই নিয়মটা বদলাতে পারে না বা বৌমাকেও মেয়ের চোখে দেখতে পারে না এর উত্তর আজও মেলেনি। আবারো বলি ব্যতিক্রম সবসময় ছিল আছে, আমাদের প্রতিবেদন ব্যতিক্রম নিয়ে নয়। ছোটবেলা থেকে বাবা-মার কথা শুনে বড় হওয়া তারপর স্বামীর কথা শোনা পরবর্তীতে ছেলে মেয়ে এভাবেই মেয়েরা নিজেদের জীবন কাটায়।
অবাধ্য হলে সমাজ কটু মন্তব্য করে, আবার মেয়ে প্রতিবাদ করে কিছু করার চেষ্টা করলে সেখানেও আঙ্গুল ওঠে। একই বিষয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অত্যাচার হচ্ছে দেখি পুরুষ যদি চুপচাপ থাকে তাহলে তাকে নিয়ে সমালোচনা করা হয় আবার প্রতিবাদ করতে গেলেও তাকে স্ত্রৈন বলে কটাক্ষ করা হয়। চিরকালি এই দু ধরনের চরিত্র বহন করে এসেছে সমাজ আর যাকে মান্যতা দিয়ে নিজেদের জীবনের সব ইচ্ছে সব আল্লাহকে বিসর্জন দিয়ে ফেলি আমরা।
আরো পড়ুন – কী করে একটা গোটা গ্রাম রাতের অন্ধকারে গায়েব হয়ে যেতে পারে?
একটি কে নারীর পুজো অন্যদিকে নারীকে ধর্ষিতা হতে হয়। পতিতা নারী মানেই সমাজের চোখে তাকে নিচু স্তরের জীব বলে মনে করা হয়। মানুষ হিসেবে কোন সম্মানই তিনি পান না। এতগুলো দ্বিচারিতার মধ্যে বেঁচে থেকেও এই সমাজ আর তার তথাকথিত নিয়মের সামাজিকতা কেন রক্ষা করাই আমাদের পরম কর্তব্য ধর্ম বলে ছোট থেকে শেখানো হয়।
আরো পড়ুন – ক্যান্ডি ফ্লস’ বা ‘কটন ক্যান্ডি’ কিংবা ‘স্পুন সুগার’ বা বুড়ির চুলের আসল রহস্য কি?
একটু ভেবে দেখুন তো চিন্তা ভাবনা বদলালে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন কি সম্ভব হবে না? চেষ্টা করে দেখতে ক্ষতি কি? বিগত যুগ যুগ ধরে যে নিয়ম চলে আসছে যে বিশ্বাস চলে আসছে যদি সেটা ভুল হয় তাহলে সেটা ভেঙে নতুন করে কিছু সৃষ্টি করতে আপত্তি আর সমস্যা কোথায়?
সময় হয়েছে নিজের দর্পণে দেখে তারপর বিচার করার। প্রতিটা মানুষের অন্তরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আত্মা যাকে ঈশ্বর রূপে কল্পনা করা হয় সেই ভগবান সবথেকে বড় সত্য আর কোন কিছুই নয়।
আরো পড়ুন – সব ভাল কি একসাথে পাওয়া যায়? কেনই বা শেষটুকু ভালো হওয়ার জন্য সারা জীবন লড়াই করতে হয়?
একটা ছেলে বা মেয়ে প্রেম করলে তাকে নিয়ে কথা আবার সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলে ব্রেকআপ হলে তখনও সমালোচনা। বিয়ে না হলে সমস্যা আবার ডিভোর্স হলেও আঙ্গুল তুলতে আর নেতিবাচক কথা বলতে দুবার ভাবে না সমাজ।
এত সংকীর্ণতার মধ্যে থেকে উদার মানসিকতার পরিচয় কি আদৌ দেওয়া যায়? কেন জানিনা আজকের প্রতিবেদনের শেষে একরাশ প্রশ্নচিহ্ন উঠল হয়তো আমাদের নিজেদের দিকে আর অবশ্যই আমাদের তৈরি করা সমাজের নিয়মের দিকে।