Breaking Bharat: জীবন মানে অংক কষা শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ শ্রীধর আচার্যকে (Sridhar Acharya) চেনেন ? বিদ্বান মানুষটি কেন পেলেন না সঠিক কদর? জীবন মানে অংক কষা। এক দুই তিন চার করে হিসেব মেলাতে মেলাতেই জীবনটা শেষ অর্থাৎ শূন্য থেকে শুরু মহা শূন্যেই শেষ।
ভারী অদ্ভুত সংখ্যা তাই না ? তবে বিস্তৃত ব্যাখ্যা আছে । কিন্তু কদর করতে পারেন ক’জন? তা না হলে শ্রেষ্ঠ গনিতজ্ঞ হলেও কেন শ্রেষ্ঠ সম্মানটুকু পেলেন না শ্রীধর আচার্য?
যদি পশ্চিমের দুনিয়াতে জন্মাতেন তাহলে পৃথিবী তাকে অন্য সম্মান দিত, অন্য নামেই চিনতো ,বিশ্বাস করেন তার অনুগামীরা । কিন্তু কেমন ছিল তার জীবন? কী অবদান গণিত শাস্ত্রে? (Sri Dhar acharya Indian Mathematician)
মন দিয়ে পড়াশুনা করেন যারা তাদের কাছে অংক বিষয়টা নিয়ে খুব একটা চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু বাকিদের কাছে কেমন যেন জুজু টাইপ একটা ব্যাপার। কি একেবারে ঠিক বললাম তো? অনেকের তো আবার অংক নামটা শুনলেই আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগার।
কিন্তু এই অংক কেই কতগুণী মানুষ ভালোবেসে গেছেন তাই না? এইটুকু একটা বই তার মধ্যে কত হিসেব নিকেশ, সমাধান করতে আমরা সমস্যায় পড়ি, তাহলে যারা সৃষ্টি করেছেন তারা কত আধুনিক, কত বিদ্বান, কত পণ্ডিত! তাই তো তিনি শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ শ্রীধর আচার্য।
আজ থেকে প্রায় ১১৫০ বছর আগে তৎকালীন রাঢ়বঙ্গের ভুরিশ্রেষ্ঠ গ্রাম যা অধুনা হুগলী জেলার ভুরশুট, সেখানেই জন্ম নিয়েছিলেন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ শ্রীধর আচার্য। বাবা বলদেব, মায়ের নাম ছিল অচ্ছোকা। ছোট থেকেই অংকের প্রতি অগাধ আগ্রহ। বড় হয়ে একের পর এক গাণিতিক আবিষ্কার।
ধারণা করা হয় তিনি অন্তত আরও তিনটি বই লেখেন যেগুলোর নাম ‘বীজগণিত’, ‘নবশতি’ এবং ‘বরাহপতি’। সব তথ্যই অবশ্য বিভিন্ন প্রাচীন সূত্র থেকে পাওয়া। শ্রীধর আচার্য ‘শূন্য’ সম্পর্কে ব্যখ্যা করেছিলেন অতি সহজে।
তিনি বর্ণনা করেন যে, “যদি কোন সংখ্যার সাথে শূন্য যোগ করা হয় তাহলে যোগফল ওই সংখ্যার সমান থাকবে; যদি কোন সংখ্যা থেকে শূন্য বিয়োগ করা হয় তাহলেও ওই সংখ্যার কোন পরিবর্তন হবে না; যদি কোন সংখ্যাকে শূন্য গুণ করা হয় তাহলে তার ফলাফল শূন্য হবে।”
অবশ্য কোনও সংখ্যাকে শূন্য দিয়ে ভাগ করলে কী হবে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি। আপনার পরীক্ষার সিলেবাসে উপপাদ্য আছে এই বছর? যখন আপনি পড়াশোনা করতেন কেমন লাগতো অংকের এই অংশটি? সমীকরণ থেকে উপপাদ্য সবেতেই উঠে আসে শ্রীধর আচার্যের নাম (Mathematician Sridhar Acharya)।
তিনি দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানে গাণিতিক সূত্রটি প্রতিপাদন করেন। সেটি শ্রীধর আচার্যের সমীকরণ নামে পরিচিত। দ্বিঘাত সমীকরণের মাত্রা নির্ণয়ের এই সূত্রটি ‘শ্রীধর আচার্যের উপপাদ্য’ নামেও প্রচলিত। শুধু তাই নয় পাটিগণিত এবং বীজগণিত দুটোকে আলাদা আলাদা বইয়ে রূপান্তরিত করার ভাবনাও তার মস্তিষ্ক প্রসূত।
কিন্তু আক্ষেপের বিষয়, বাঙ্গালী আজ এই মানুষটিকে মনে করে না, প্রাপ্য সম্মান দেওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার । আমরা যত সভ্য আর উন্নত হয়েছি ততই অতীতকে ভুলতে শিখেছি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে গেছি সবকিছুকে পিছনে ফেলে।
শ্রীধর আচার্যের বিস্মৃতি তারই অঙ্গ বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না। তিনি দুটি বিখ্যাত গবেষণামূলক বই লেখেন যথা ত্রিশতিকা এবং পাটীগণিত। তাঁর প্রধান কাজ পাটীগণিতসার কে ‘ত্রিশতিকা’ বলা হয়, কারণ জানেন? আসলে এই বইটিতে প্রায় তিনশ শ্লোক আছে।
এই বইটিতে সংখ্যা গণনা, পরিমাপ, প্রকৃত সংখ্যা, শূন্য, গুণন, ভাগ, বর্গ, ঘন, ভগ্নাংশ, তিন-এর নিয়ম (রুল অফ থ্রি), সুদকষা, অংশিদারিত্বের ব্যবসা, ক্ষেত্রফল ও আয়তন নির্ণয় সহ গণিতের বিভিন্ন তাত্ত্বিক ও প্রয়োগ সংক্রান্ত বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন- Child trauma : শিশু মন বড় আদরের, শিশুমনে মানসিক আঘাত পেলে সে ট্রমা কাটাবেন কিভাবে?
পাটিগণিত এর বর্গমূল ঘনমূল নির্ণয়ের পদ্ধতি এবং ত্রৈরাশিক পদ্ধতি তে সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তার অবদানের কথা বিভিন্ন পুস্তক পাওয়া যায়। কিন্তু অত্যন্ত আক্ষেপের বিষয় তার বেশিরভাগ বই আজ আর খুঁজে পাওয়া যায় না, পুনরুদ্ধার করার কোন তাগিদ দেখা যায়নি (Śrīdhara Acharya was an Indian mathematician)।
আরো পড়ুন- Patharkuchi plant: হঠাৎ করে পাথরকুচি গাছ হয়ে গেল কেন? আর এই পাথরকুচি গাছ যদি কেউ খায় কী হয়?
আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা শ্রীধর আচার্য প্রসঙ্গে কিছু তথ্য তুলে ধরলাম, সৌজন্যে ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন গবেষণা ।আপনি যদি এরকম কিছু জানেন তাহলে অবশ্যই সে বিষয়ে আমাদের জানাতে ভুলবেন না যেন । আমরাও সমৃদ্ধ হব, আর খুশি হবেন পাঠকরাও।