Breaking Bharat : ছেলেবেলায় চাঁদের নানান গল্প শুনে বড় হয়েছি আমরা প্রত্যেকেই। বেশ কিছুদিন ধরেই পৃথিবীর নানান ব্যক্তি চাঁদে জমি কিনছেন (Land of the Moon) ৷ অবাস্তব শোনালেও এমনটাই সত্যি করেছেন এক ব্যবসায়ী। ভারতীয় টাকায় একর প্রতি মাত্র ১৮০০ টাকায় কিম্বা বিদেশি মুদ্রায় মাত্র ২৫ ডলার খরচ করেই চাঁদে জমি কিনে নিতে পারেন আপনিও (You too can buy land on the moon)।
শুনতে অবাক লাগলেও ডেনিস হোপ (Dennis Hope) নামের এক ব্যক্তি যিনি নিজেকে ‘চাঁদের মালিক’ (The owner of the moon) বলে দাবি করেন। তিনিই বিক্রি করছেন চাঁদের জমি। কিন্তু এভাবে চাঁদের জমি বিক্রি করা কতটা বৈধ? (But how legal is it to sell the land of the moon?)
জানা যাচ্ছে, এই জমির মালিকানা আইনত বৈধ। উপযুক্ত দলিলও রয়েছে তাঁর কাছে। রয়েছে মৌজা-পরচার মতো আইনি নথিও। ইতিমধ্যেই ৬০ লক্ষেরও বেশি ক্রেতাকে চাঁদের ৬১.১ কোটি একর জমি বিক্রি করেছেন হোপ। অকপটে তিনি জানাচ্ছেন, ‘চাঁদের জমির চাহিদা প্রচুর। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা জমি কিনতে যোগাযোগ করেন আমার সংস্থার সাথে।
এ পর্যন্ত ৬৭৫ জন নামী তারকা জমি কিনেছেন আমার কাছ থেকে। এদের মধ্যে রয়েছেন আমেরিকার তিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, জিমি কার্টার এবং রোনাল্ড রেগনও। হোপের সংস্থার নাম লুনার এমব্যাসি। যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় চন্দ্র দূতাবাস।
আগেই বলা হয়েছে, চাঁদ জমির মালিকানা বৈধ। অথচ ১৯৬৭ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে বলা হয়েছিল, ‘বিশ্বের কোনও দেশ বা কোনও দেশের সরকার সৌরজগতের কোনও মহাজাগতিক বস্তুর উপর নিজেদের অধিকার, মালিকানা বা আইনি স্বত্ত্ব দাবি করতে পারবে না।’ তা সত্ত্বেও কীভাবে চাঁদের জমি বিক্রি করছেন হোপ (How Hope is selling the land of the moon)? জানা যাচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই প্রস্তাবে ছিল খানিক অসম্পূর্ণতা। আর তাকে কাজে লাগিয়েই এই কাজ করছেন তিনি।
আসলে মহাজাগতিক বস্তুর উপর সরকার বা দেশের অধিকার নিয়ে কথা বললেও রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবে এমনটা কোথাও বলা ছিল না যে, কোনও ব্যক্তি এই দাবি করতে পারবেন না। হোপ এই অসম্পূর্ণতাকে কাজে লাগিয়েই চাঁদের মালিকানা দাবি করে বসেন একদিন। জানা যাচ্ছে, ১৯৮০ সাল থেকে শুরু হয়ে গত ৪১ বছর ধরে বেশ রমরমিয়ে চলেছে হোপের চাঁদের জমির ব্যবসা।
তারকা থেকে সাধারণ চাকুরিজীবী, সবাই রয়েছেন ক্রেতার তালিকায়। এমন কি ম্যারিয়ট হিলটনের মতো বেশ কিছু নামকরা হোটেলও জমি কিনেছে হোপের সংস্থা থেকে। সূত্রের খবর, হোলের বিক্রি করা জমির একর পিছু সর্বনিম্ন দাম ২৪.৯৯ মার্কিন ডলার এবং সর্বোচ্চ দাম ৫০০ মার্কিন ডলার। হোপ জানিয়েছেন চাঁদের সবচেয়ে বড় জমির অংশটিতে ৫৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৭৪০ একর জায়গা আছে। যদিও এখনও এই জমির ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তিনি জানিয়েছেন, বিক্রির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ১৮০০-২০০০ একরের জমির।