Breaking Bharat : Mohammed Siraj: ২০২০ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (Indian Premier League) ভাল পারফরমেন্সের জন্যই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজ। তাও আবার অস্ট্রেলিয়ার (Australia) মতো প্রতিপক্ষ। সেখানেও নিজের জাত চিনিয়েছেন জাতীয় দলের (National team) এই ডানহাতি বোলার। এমনকী, এক ইনিংসে পাঁচটি উইকেটও নেন তিনি। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তারপর। অথচ আইপিএল (IPL)-এ বেঙ্গালুরুর জার্সিতে খারাপ পারফরমেন্সের জন্য মুখ বুজে সহ্য করতে হয়েছিল অনেক অপমান।
শুধু তা-ই নয়, ২০১৯ সাল নাগাদ সিরাজকে বোলিং ছেড়ে তাঁর বাবার সঙ্গে অটো চালানোর পরামর্শও দিয়েছিলেন অনেকে। তবে সেই সময়ে পাশে পেয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে (Mahendra Singh Dhoni)। ক্যাপ্টেন কুলের মন্ত্রেই আজ সব অপমানের জবাব দিচ্ছেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের এই ডানহাতি জোরে বোলার।
সাল ২০১৯। বেঙ্গালুরুর জার্সিতে চূড়ান্ত খারাপ পারফরমেন্স। সিরাজের ইকনমি রেট তখন ১০-এরও বেশি। সেবারের আইপিএলে ৯ টি ম্যাচ খেললেও তাঁর ঝুলিতে উইকেট সংখ্যা মাত্র ৭. এমনকী, কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) বিরুদ্ধে এক ওভারে পাঁচটি ছয়ও হজম করতে হয়েছিল এই মুহূর্তের জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারকে।
সব মিলিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সেবার বেঙ্গালুরুর ফলাফলও ছিল একবারে তলানিতে। তখন মহম্মদ সিরাজকে নিয়ে নিন্দার ঝড়। কেউ কেউ বলেছেন, বোলিং ছেড়ে দিন, বাবার সঙ্গে অটো চালান। বিশেষত ওভারে দুটি ব্যাটসম্যানের কোমরের চেয়ে বেশি উচ্চতায় ছোড়া ফুলটস বা বিমার দেওয়ার জেরে বোলিং থেকেও বাদ দেওয়া হয় সিরাজকে।
আরো পড়ুন- Narendra Modi : ডিপোজিট বিমা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
সেই প্রসঙ্গেই আরসিবি-র। একটি পডকাস্টে সিরাজ বলেন, বিমার বোলিং করার পরে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। তখনই বাবার সঙ্গে তাঁকে অটো চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পাশে ছিলেন বিরাট কোহলি এবং আরসিবি ম্যানেজমেন্ট।
সেই কথা একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েওছিলেন সিরাজ। তিনি বলেন, ‘আরসিবি ম্যানেজনেন্ট আমার উপর ভরসা রেখেছিল। আমিও ভেবেছিলাম নিজের শক্তি অনুযায়ী বল করলে সাফল্য পাব। ২০২০ সালে কলকাতার বিরুদ্ধে ম্যাচ আমার জীবন বদলে দিয়েছিল।’
তবে যাঁর মন্ত্র তাঁজে অনুপ্রাণিত করেছিল, তিনি আর কেউ নন, ক্যাপ্টেন কুল মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)। সিরাজের কথায়, ‘এরপর যখন আমি প্রথমবার ভারতীয় দলে নির্বাচিত হয়েছিলাম, মহেন্দ্র সিং ধোনি আমাকে আমার কেরিয়ারে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছিলেন।’
সিরাজকে কোন মন্ত্র শিখিয়েছিলেন ধোনি?
সিরাজের এই খারাপ সময়ে সাহস জুগিয়েছিলেন ধোনি। এমএসডি সেদিন সিরাজকে বলেছিলেন, লোকে কী বলছে তাতে ভেঙে পড়বেন না। আপনিই যখন ভাল পারফর্ম করেন, তখন একই লোকেরা আপনার প্রশংসা করেন। এই ধরনের প্রতিক্রিয়া কখনওই গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত নয়।
ধোনির বলা সেই কথাগুলোই যে সঠিক ছিল, তা স্বীকারও করেছেন সিরাজ। তিনি বলেন, ‘মাহি ভাইয়ের এই বক্তব্য সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। যারা আমাকে ট্রোল করছিল তারা পরে বলেছিল তুমি সেরা বোলার। সেই কারণে এখন আমার ওপর কারও প্রতিক্রিয়ার কোনও প্রভাব পড়ে না।’
২০১৯ আইপিএল তাঁর ক্রিকেটজীবনে অভিশপ্ত সময়পর্ব, তা অন্যান্য সাক্ষাৎকারেও স্বীকার করেছেন সিরাজ। সেই সময় ক্রিকেট ছেড়ে দেবেন বলেও সিদ্ধান্ত নেবেন ভেবেছিলেন তিনি। সিরাজ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘২০১৯ মরসুম আমার সব থেকে খারাপ গিয়েছিল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ২.২ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়েছিলাম। সবাই সমালোচনা করে বলেছিল ক্রিকেট ছেড়ে বাবার সঙ্গে অটো চালাতে। আমি ভেবেছিলাম আমার আইপিএল কেরিয়ার শেষ।’
তবে সব অপমানের জবাব দিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। আর দিয়েও চলেছেন। আর আজ তাঁর ঘুরে দাঁড়ানোয় তিনি বাদে যদি অন্য কারও প্রধান ভূমিকা থাকে, তিনি নিঃসন্দেহে মহেন্দ্র সিং ধোনি। অন্তত খোদ সিরাজই তো তেমনটাই মনে করেন।