Breaking Bharat: জীবদ্দশায় স্বর্গ দর্শন? এও কি সম্ভব? একটি বিশেষ গ্রাম পেরোলেই স্বর্গ প্রবেশ করা যায়, আপনি জানেন (Mana village)? যেটা ভাবতেও পারছেন না সেটা এবার সত্যি হতে চলেছে! সেই কোন অতীত থেকে স্বর্গ আর নরক নিয়ে কত আলোচনা। মা ঠাকুমারা বলতেন ভালো কাজ করলে মৃত্যুর পর স্বর্গে যাওয়া যায়, আর খারাপ কাজ করলে অবধারিত নরক দর্শন।
কিন্তু সে তো মরনের পরে জীবিত অবস্থায় স্বর্গ দর্শন? সেটা কি সম্ভব নাকি? তাও আবার বিশেষ একটা সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে হবে একটা নির্দিষ্ট গ্রামে, যা কিনা দেশের শেষ গ্রাম। বুঝুন কান্ড! ব্যাপারটা কী হচ্ছে বলুন তো?
যত দিন যাচ্ছে এমন এমন কিছু জিনিস আবিষ্কার হচ্ছে বা ঘটনা সামনে আসছে যার সম্পর্কে আগে ভাবাই যেত না। কদিন আগেই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হল পৃথিবীর শেষ রাস্তা। যে রাস্তা দিয়ে যাওয়া নাকি নিষিদ্ধ। সেটা অবশ্য এই দেশে নয়। কিন্তু এবার সামনে আসছে এমন এক গ্রামের কথা যা কিনা ভারতের শেষ গ্রাম আর তারপরেই স্বর্গ শুরু।
একটি বিশেষ গ্রাম পেরোলেই স্বর্গ প্রবেশ করা যায়?
একবার যদি সেখানে যাওয়া যায় তাহলে ভাবতে পারছেন কি থ্রিলিং হবে ব্যাপারটা! আসলে এই ভারতবর্ষকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে কত কিছু। প্রকৃতির রহস্য ভান্ডারের কতটুকুই বা জানতে পেরেছি আমরা? উত্তরে পর্বত, দক্ষিণে সমুদ্র।
মাঝে আছে মরুভূমি জঙ্গল কত কিছু। বিস্ময়ের ঘোর যেখানে কাটেনা সেখান থেকেই আরো একটা নতুন বিস্ময় তৈরি হয়। আচ্ছা দেশের উত্তর অংশে কেদারনাথ বদ্রীনাথ এইসব তীর্থক্ষেত্রের পাশাপাশি উত্তরাখান্ড বললে আপনার আর কিছু মনে পড়ে? উত্তরাখণ্ডের একটি বিশেষ গ্রাম পেরোলেই স্বর্গ প্রবেশ করা যায়, আপনি জানেন? মানুন বা না মানুন সেই গ্রামের নাম মানা গ্রাম (Mana village)।
এই গ্রাম ভারতের শেষ গ্রাম আখ্যা পেয়েছে:
এখানকার মানুষের বিশ্বাস আর প্রচলিত আখ্যান বলছে এর পরেই সোজা স্বর্গ। ঠিকমতো এটি যেখানে অবস্থিত মানে উত্তরাখণ্ডের সামগ্রী এলাকায় যা কিনা সমুদ্র থেকে প্রায় তিন হাজার দুশ মিটার উঁচুতে। এর পরেই বর্ডার। সরকারিভাবে এই গ্রাম ভারতের শেষ গ্রাম আখ্যা পেয়েছে (This village is known as the last village of India)। তাই এই গ্রামে প্রবেশ করলেই শেষের শুরু আর এই গ্রামের পরিক্রমা শেষ করলেই শেষের শেষ।
বদ্রিনাথ থেকে মানা গ্রামের দূরত্ব এই ধরুন প্রায় ৩ কিলোমিটার মতো হবে। তবে জায়গাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং শ’ চারেকের বেশি লোকজন থাকে না এখানে। এখানেই বয়ে গেছে সরস্বতী নদী আর তাকে ঘিরে নানা প্রাচীন কাহিনী। যা আপনাকে বিশ্বাস করাবে এটিই ভারতের শেষ গ্রাম (mana village history)।
এবার প্রাচীন কাহিনীর দিকে চোখ মেলা যাক। এখানে যে সরস্বতী নদী বয়ে গেছে তা আগেই বলেছি। অনেকেই হয়তো জানেন যে সরস্বতী নদীর নামকরণ হয়েছিল জ্ঞান সংস্কৃতির দেবী সরস্বতীর নামে। এমনকি দেশের সম্পদ শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য এই নদীর তীরে রচনা করা হয়েছিল।
এই নদীকে অদৃশ্য বলা হয় জানেন?
কথিত আছে মহাভারত রচনা করার সময় এই নদীর গর্জনে রচনার কাজ বাধা প্রাপ্ত হয়। আর তাতেই অভিশাপ পায় নদী অদৃশ্যে বিলীন হয়ে যাবার, সেই থেকেই এমন নাম। আপনি এই মানা গ্রামের রাস্তা দিয়েই যেতে যেতে দেখতে পাবেন ব্যাস গুহা । পুরাণে কথিত আছে একসময় মহাঋষি ব্যাসদেব চারটি বেদ সংকলন করেছিলেন এবং প্রথম মহাভারতের বর্ণনা করেন – ঠিক এই স্থানে বসেই।
আরো পড়ুন- Princep Ghat : নৌকা চড়ে,গঙ্গায় প্রেম করতে গেলে প্রিন্সেপ ঘাট কে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না , তাই না?
ভাবতে পারেন এখানেও এক সেতু আছে যা ঠিক প্রাকৃতিক নয় আবার অতিপ্রাকৃতিক সেটাও বলা যাবে না ,নাম ভীম সেতু। কথিত আছে, পঞ্চপাণ্ডব এবং দ্রৌপদী যখন স্বর্গের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন, তখনই সরস্বতী নদী পেরোনো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মহা শক্তিশালী ভীম তখন এই নদীর উপর পাথর ফেলে সেতু তৈরি করেন। তাই হল ভীম পুল।
আরো পড়ুন- Uterus : হিস্টেরেক্টোমি বাড়ছে কেন? কর্পোরেট অফিসের চাপেই কি জরায়ু বাদ দিচ্ছেন মহিলারা?
ভীমশিলা পেরিয়ে সরু পাথর ফেলা রাস্তা সোজা উঠে গেছে উপরের দিকে। দুর্গম এই পথে বেশ খানিকটা যাওয়ার পর মেলে বসুধারা ফলস। সেখান থেকে আরো উপরে উঠতে হবে আপনাকে কিন্তু যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব। তাই মহাকাব্য অনুসারে শুধু যুধিষ্ঠিরই যেতে পেরেছিলেন , বাকিরা নয়। মানা গ্রামে যেতে কারুর মানা নেই কিন্তু স্বর্গের পথে যাওয়া সম্ভব হবে কি?
আরো পড়ুন- Bapuji Cake : মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রিয় বাপুজী কেক, এই বাপুজী কেক আজও বাঙালির নস্টালজিয়া!
মে মাস থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রেনের টিকিট কেটে ফেলুন। হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠে হরিদ্বার স্টেশনে নামুন সেখান থেকে সোজা বদ্রীনাথ। বিমানে গেলে নামতে হবে দেরাদুন। বদ্রীনাথ থেকে তিন চার কিলোমিটার দূরত্বেই মানা গ্রাম। আফসোস হচ্ছে তো ভাবছেন কতবার তো বদ্রীনাথ বা দেরাদুন গেছেন কিন্তু এটা জানা ছিল না।তবে এবার চেষ্টা করে দেখতেই পারেন।।