Breaking Bharat : জানেন ভারতের কিছু পবিত্র তীর্থে স্বয়ং উপবিষ্ট হয়েছিলেন শ্রীরামচন্দ্র (Sri Ramachandra) ? পৃথিবীতে মানুষ যেমন আছে, তেমনই আছে পশু পাখি। ঠিক সেভাবেই বিশ্বাস করা হয় রয়েছেন ভগবান।
নাস্তিক মানুষেরা বারবার ভগবানের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন তারা এটা ভেতর থেকে উপলব্ধি করেন, যে ঈশ্বর ভাবনার মধ্যেই মানুষের মুক্তির উপায় লুকিয়ে আছে। হিন্দু পুরান মতে যুগে যুগে অবতার হিসেবে পৃথিবীতে এসেছেন স্বয়ং ঈশ্বর।
ভগবান শ্রীরামচন্দ্র তিনি নিজে গিয়েছিলেন তীর্থক্ষেত্রে!
নানা রূপে মানুষকে শিক্ষামূলক উপদেশ বাণী এবং মহিমার কথা ঈশ্বর নিজেই প্রকাশ করে গেছেন। সত্য যুগ বা ত্রেতা কিংবা কলি যুগ, প্রতিযোগী অবতার হিসেবে ঈশ্বর আত্মপ্রকাশ করেছেন পৃথিবীর বুকে। আমরা এই তথ্য প্রমাণ বা পরীক্ষিত সত্য এই কথা বলতে পারছি না কারণ সবটাই বিশ্বাসের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে।
এবং সেই গভীর বিশ্বাস থেকেই অজানা অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে যা অকল্পনীয়। ঠিক সেভাবেই আপনাদের জানিয়ে রাখি ভগবান শ্রীরামচন্দ্র তিনি নিজে গিয়েছিলেন তীর্থক্ষেত্রে! (Lord Sri Ramachandra himself went to the pilgrimage!) অবাক লাগলেও বেশকিছু এমন তীর্থক্ষেত্র আছে যার সম্পর্কে অনেক তথ্যই এখনো অজানা।
রামায়ণের প্রতিটি ছত্রে রামচন্দ্রের কীর্তির বর্ণনা:
ছোটবেলা থেকে রামায়ণ এবং মহাভারত পড়ে বড় হয়ে উঠি আমরা। সপ্ত কাণ্ডের রামায়ণের প্রতিটি ছত্রে রামচন্দ্রের কীর্তির কথা বর্ণনা করা আছে। সকলে ই রাম সীতা এবং লক্ষণের ১৪ বছরের বনবাসের কথা জানেন। এই সময় গভীর অরণ্যে কি কষ্ট করে থাকতে হয়েছে তাদের সেটা কারো অজানা নয়।
কিন্তু এই সময় এক বা দুই নয় ছয়টি বিশেষ স্থানে গিয়েছিলেন রাম, সেটা জানেন কি? আজ সেই জায়গার কথাই বলবো আপনাদের যার নাম গুলো শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠতে পারে। দীর্ঘ ১৪ বছরের বন পর্ব। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নিজের রাজ্যপাট থেকে অনেক দূরে ছিলেন রাম সীতা এবং লক্ষণ।
রাম এবং হনুমানের ঠিক কোথায় দেখা হয়েছিল জানেন?
জানা যায় এই সময়কালে বহু স্থান ভ্রমণ করেছিলেন রাম, লক্ষ্ণণ এবং সীতা। সেই তালিকায় রয়েছে উত্তর ভারতের অযোধ্যা থেকে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জায়গা। তবে আজ সেই রামও নেই, সেই রামায়ণও নেই। কিন্তু সেই জায়গাগুলো রয়ে গেছে। আপনি নিশ্চয়ই রামায়ণে রামচন্দ্র এবং হনুমানের সখ্যতার কথা সম্পর্কে অবগত।
শুধু তাই নয় রামভক্ত হনুমানের কথাও সর্বজনবিদিত। প্রভু রামের জন্য নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন হনুমান। কিন্তু এই দুজনের অর্থাৎ রাম এবং হনুমানের ঠিক কোথায় দেখা হয়েছিল জানেন? তাহলে এই বিষয়ে আপনাকে জানতে হলে পরিচিত হতে হবে ঋষ্যমুখ পর্বতের সঙ্গে।
ঋষ্যমুখ পর্বত হল রাম-হনুমানের মহামিলনের স্থল:
এই পর্বতের কাছেই কর্ণাটকের অঞ্জনেয়া পর্বত এলাকায় জন্মেছিলেন বীর হনুমান। ঋষ্যমুখ পর্বত হল রাম-হনুমানের মহামিলনের স্থল, যা হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। অবশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষেরা বলেন ঋষ্যমুখ পর্বতে ট্রেকিং-এর অভিজ্ঞতাই আলাদা।
আরো পড়ুন – Singabad : রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া জীবন অচল? পৃথিবীর শেষ রেল স্টেশন কোথায় আছে জানেন ?
উচিত আছে উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশর সীমান্তে অবস্থিত চিত্রকূট পর্বত সংলগ্ন এলাকায় ভ্রমণ করতে করতে এসে পড়েছিলেন রাম সীতার লক্ষণ। এবং এই পর্বতে তারা কিছুদিন বসবাস করেছিলেন। এমনকি নিজের বাবার মৃত্যুর সংবাদ এই পর্বতে বসেই পেয়েছিলেন রামচন্দ্র।
শ্রীরামচন্দ্রের নামে উৎসর্গ করা একটি মন্দির রয়েছে:
তারপর সেই ঘটনা অর্থাৎ ভরতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান রামের আর তারপর, দাদার খড়ম নিয়ে রাজ্যে ফিরে যাওয়া। এই চিত্র খুব পর্বে শ্রীরামচন্দ্রের নামে উৎসর্গ করা একটি মন্দির রয়েছে বলে জানতে পারা যায়। উত্তর ভারতের ভ্রমণ করতে গেলে প্রয়াগের কথা সবার আগে মনে আসে। অনেকে হয়তো এই জায়গায় এক বা একাধিকবার গেছেন।
আরো পড়ুন – Singabad : রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া জীবন অচল? পৃথিবীর শেষ রেল স্টেশন কোথায় আছে জানেন ?
কিন্তু আপনি কি জানেন, প্রয়াগের গা ঘেঁষে যাওয়া গঙ্গা নদী পেরিয়েই বনবাসের পথে রওনা দিয়েছিলেন রাম , সীতা এবং লক্ষ্মণ? কথিত আছে অযোধ্যাবাসী প্রয়াগ পর্যন্ত রাম-লক্ষ্ণণ-সীতাকে অনুসরণ করেন। এখানে আরো একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য। বিশ্বের সবথেকে বড় ধর্মীয় সমাবেশ বলতে সবার আগে যে নামটা মনে আসে সেই কুম্ভমেলা কিন্তু এখানেই হয়।
রামায়নে লেখা আছে রামচন্দ্রের জীবনীর বেশ কিছু কথা:
রামচন্দ্রের জীবনীর বেশ কিছু কথা রামায়নে লেখা আছে। দণ্ডকারণ্য নামটা বললে অনেকেই বুঝতে পারবেন যে এই স্থানের গুরুত্ব কতটা। দীর্ঘদিন কুটির তৈরি করে এখানেই থেকেছেন রাম ,সীতা আর লক্ষন। আয়তনের সুবিশাল এই অরণ্য ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড় -এই তিন রাজ্যজুড়ে বিস্তৃত ।
আরো পড়ুন – Haridwar : তীর্থ ভ্রমণে গিয়ে টাকার চিন্তা! এবার হরিদ্বার গেলে থাকা খাওয়ার কোন খরচ লাগবে না!
দুধসাগর জলপ্রপাত এবং সুলা আঙুর খেতটি এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য। রাবণের বোন সূর্পণখার রামের প্রতি প্রেমের সূচনা হয়েছিল এইখানে। রামায়ণ অনুসারে এর পরের ঘটনা মহারাষ্ট্রের নাসিকের পঞ্চবটি বনে। বলা যেতে পারে এই স্থানের ঘটনায় রামায়ণের প্রেক্ষিতটাই বদলে গেছিল।
কারণ সীতা হরণ পর্বের এখানে সূত্রপাত। এই বোন থেকেই রাবণ সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে যান বলে জানা যায়। দর্শনীয় স্থান হিসেবে এই স্থানে রয়েছে বিখ্যাত রাম কালা মন্দির। এরপরে যে জায়গার কথা বলব সেটিও সবার বহু পরিচিত ।
আরো পড়ুন – Kambala festival : কর্ণাটকের কাম্বালা খেলা জানেন? কৃষকরা শুধু কৃষিকাজই করেন না, খেলতেও জানেন!
কর্ণাটকের হাম্পির কাছে তুঙ্গভদ্রা নদী সংলগ্ন এলাকা নাম কিষ্কিন্ধ্যা। অতীতকালে বানর রাজ্য ছিল বলেই অনুমান করা হয়। সীতা অপহৃত হওয়ার পর রাম লক্ষণ এখান থেকেই সংকেত এবং সাহায্য পেয়েছিলেন রাবণ বধের।