Breaking Bharat: শ্রী কৃষ্ণের প্রেমলীলায় আজও মজে রাজ্য থেকে দেশ, কেন? কৃষ্ণ মানেই প্রেমের লীলা (Lord Sri Krishna), কৃষ্ণ মানেই অবতারের ভাবধারায় বিলীন হয়ে যাওয়া। বাংলার আকাশ বাতাস জুড়ে যার জুড়ি মেলা ভার তিনিই তো নারায়ণ। তার আবির্ভাব তিথি মানে জন্মাষ্টমীর পুজো। দ্বাপর যুগের পরিত্রাতা তিনি।
কৃষ্ণলীলার মত্ততায় যে প্রেমসাধনার সূত্রপাত হয়, চৈতন্যদেবের ভক্তি রসে তার পূর্ণতা প্রাপ্তি। তাই বৃন্দাবন হোক বা বাংলা সর্বত্রই কৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি সাড়ম্বরে পালিত হয় (lord krishna biography)।
সকল প্রেমের আঁধার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ (lord krishna story) :
মথুরায় কৃষ্ণের জন্ম , দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান তিনি। ছোটবেলা থেকে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম (Birth of Krishna) বৃত্তান্ত সকলেই জানা। কংসের অত্যাচার থেকে সন্তানকে বাঁচাতে বসুদেব কৃষ্ণের জন্মের রাতেই অষ্টমী তিথিতে দুর্যোগ মাথায় নিয়ে গোকুলে রেখে আসেন গোপালকে। যশোদার স্নেহে ভালোবাসায় কৃষ্ণের বড় হয়ে ওঠা।
ছোট্ট গোপাল গোকুলের ঘাত প্রতিঘাত থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষা করে সকলের নয়নের মণি হয়ে উঠে, কৃষ্ণ রূপে নিজের মহিমা প্রকাশ করেন পরবর্তীতে। সকল প্রেমের আঁধার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাই বাংলার প্রতিটি ঘরে পূজিত নানা রূপে। দেবতা মানেই তার আরাধনা করতে হয় ,ভক্তি ভরে সাধনা করতে হয়।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মের রাতে প্রবল ঝড় বৃষ্টির দাপট:
এই ধারণাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা নিজেদের মধ্যে পোষণ করে থাকেন। তবে সম্ভবত শ্রীকৃষ্ণই একমাত্র দেবতা যাকে সন্তানের মত ছোট্ট শিশুর মত বাংলার প্রতিটি ঘরে স্নেহের পরশে বড় করে তোলা হয়। কৃষ্ণের জন্মদিন বরাবরই স্পেশাল। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্রের আবির্ভাবেই পালন করা হয় জন্মাষ্টমী তিথি।
তাই জন্মাষ্টমীকে ‘অষ্টমী রোহিণী’ও বলা হয়। অনেকে আবার এই লগ্ন কে কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী ও শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী হিসেবেও নাম দিয়ে থাকেন। কথিত আছে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের রাতে প্রবল ঝড় বৃষ্টির দাপট সামলে বসুদে ব সন্তানকে নিয়ে গেছিলেন গোকুলে। ছাতার মতো মাথার উপর ছিল শেষনাগ।
শ্রীকৃষ্ণ মানেই একের পর এক লীলা কাণ্ড:
যেন প্রভুকে সব দুর্যোগ থেকে রক্ষা করছে ভক্ত। শ্রীকৃষ্ণ মানেই একের পর এক লীলা কাণ্ড। গীতার প্রতিটি অধ্যায় শ্রীকৃষ্ণের বাণী শ্লোক বর্ণনা করা আছে। ধর্মের উপর ভিত্তি করে মানুষকে সঠিক জীবন যাপনের মার্গ দর্শন করিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
ঘর অমানিশায় তার জন্ম কোথাও তিনি কৃষ্ণবর্ণ, আবার কোথাও তিনি পীতবর্ণ। কোথাও আবার তার দেহের রং নীলাভ। হাতে বাঁশি মাথায় ময়ূর পালক। শুধুমাত্র বঙ্গদেশেই নয়, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য যেমন মহারাষ্ট্র, গুজরাট, রাজস্থান, ওড়িশা সহ উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন স্থানে শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি অর্থাৎ জন্মাষ্টমী ধুমধাম করে পালন করা হয় (lord krishna birth date and time)।
সবটাই যেন কৃষ্ণ লীলা (Sri Krishna):
বৃন্দাবন থেকে শুরু করে মথুরা সর্বত্রই জন্মাষ্টমীর দিন কি ঘিরে এক আলাদা উৎসবের মেজাজ তৈরি হয়। আর বাংলার বুকে জন্মাষ্টমী শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলার স্থাপত্য, ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতির মেলবন্ধন হয়। অনেক জায়গায় মেলার আয়োজন করা হয় জাতি বহু মানুষের কর্ম এবং অন্নসংস্থানও হয়।। সবটাই কৃষ্ণ লীলা (the real story of Krishna)।
বঙ্গদেশে জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণ গোপাল রূপে পুজিত হন। বাড়ির ছোট্ট সন্তানকে যেভাবে তার পছন্দের খাবার দিয়ে খুশি করার চেষ্টা হয় একই ঘটনা দেখা যায় গোপাল পূজোর ক্ষেত্রেও। মাখন, তালের বড়া, ক্ষীর, মালপোয়া, মোহনভোগ, নারকেল নাড়ু, বাসন্তী পোলা, লুচি সঙ্গে নানা ধরনের মিষ্টি প্রসাদ হিসেবে অর্পণ করা হয় গোপালের পুজোয় জন্মাষ্টমী তিথিতে।
আরো পড়ুন – Qatar World Cup : কাতার বিশ্বকাপের পিছনে অতীতের জঘন্য স্মৃতি ! লুকিয়ে কোন রহস্য?
শুধু আরাধনা নয় যেন অন্তর আত্মার শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া হয়ে যায় এই পুজোর উপচারে। দেশের কথা তো বললাম কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না বিদেশেও মহা ধুমধাম করে জন্মাষ্টমী ব্রত, পুজো, উৎসব পালন করা হয়।
ভারতের বাইরে বাংলাদেশ, ফিজি দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি স্থানে, নেপাল এবং পাশ্চাত্য দেশের কয়েকটি অঞ্চলেও শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব পালন করা হয় (Krishna’s birthday is celebrated)। নন্দের দুলালকে সারা বিশ্ব প্রণাম করে। আর তার জন্ম তিথিতে গড়ে ওঠে বৈচিত্রের মধ্যেও ঐক্য।