Breaking Bharat: কাশ্মীরে সাদা সোনা ! ভূস্বর্গে ৫.৯ মিলিয়ন টন লিথিয়াম ভাণ্ডারের খোঁজ জানেন? তবে এবার কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবেই সম্পদের ভান্ডার হয়ে গেল কাশ্মীর। কেন সাদা সোনা নিয়ে একটা আলোচনা এবং কাশ্মীর ভারতে কতটা এগিয়ে দেবে এই আবিষ্কারের ফলে সেটা একটু ভেবে দেখার মতো বিষয় বটে।
রাতারাতি বদলে যাচ্ছে কাশ্মীরের ভাগ্য। জানেন কি কাশ্মীরে এমন সোনার খোঁজ পাওয়া গেছে, যা কার্যত ভারতবর্ষের ভাগ্য বদলে দিতে চলেছে। হ্যাঁ ভূস্বর্গের নীচে ৫৯ লক্ষ টন ‘সাদা সোনা’র আবিষ্কার হয়েছে বলে চারিদিকে আলোচনা বাড়ছে। আপনাকে নিশ্চয়ই আর বলতে হবে না, যে লিথিয়াম কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
আজকের দিনে ইলেকট্রিক গাড়ি থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন বা সোলার প্যানেলের ব্যাটারিতে লিথিয়াম ব্যবহার করা হয়। মানে লিথিয়ামের আবিষ্কার হওয়া মানে বিশ্বের দরবারে কোন একটা দেশ কতটা এগিয়ে যেতে পারে সেটা কথায় বা ভাষায় বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আর সেই কারণেই আজকে সকলের নজর চলে গেছে সোজা কাশ্মীরের দিকে।
এমনিতে কাশ্মীর পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু আবার রাজনৈতিক কারণে চর্চায় থাকে। তবে এবার কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবেই সম্পদের ভান্ডার হয়ে গেল কাশ্মীর। কেন সাদা সোনা নিয়ে একটা আলোচনা এবং কাশ্মীর ভারতে কতটা এগিয়ে দেবে এই আবিষ্কারের ফলে সেটা একটু ভেবে দেখার মতো বিষয় বটে।
৫.৯ মিলিয়ন টন লিথিয়াম রিজার্ভের আবিষ্কার:
প্রতিবেদনের শুরুতে যেটুকু লেখা হয়েছে তাতে প্রশ্ন আসতেই পারে সারা দেশ এবার থেকে তবে কাশ্মীরমুখী? দেখুন ভূস্বর্গ এমন এক বিষয়ের খোঁজ দিল যা দেশকে তো বটেই, বিশ্বকেও আগ্রহী করে তুলবে এই জায়গার প্রতি। আপনি কি জানেন ইলেকট্রিক ভেহিকেল শিল্পের বিরাট ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে ভারতের সবচেয়ে অশান্ত এই রাজ্য?
দেশকে সাড়া জাগানো এই খবরটি জানিয়েছে দ্য জিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া । এই প্রথম ভারতের উত্তরাঞ্চলে জম্মু ও কাশ্মীরে ৫.৯ মিলিয়ন টন লিথিয়াম রিজার্ভের আবিষ্কার আমাদের দেশকে বিশ্বব্যাপী আলোচনার মঞ্চে নিয়ে এসেছে। এবার একটু লিথিয়াম নিয়ে কথা বলাটা দরকার এবং কেন সেটা এত গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝার দরকার আছে।
রসায়ন বলছে লিথিয়াম একটি অ-লৌহঘটিত ধাতু , যা বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির অন্যতম প্রধান উপাদান। এই ধাতু মানে লিথিয়াম নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা সন্ধান চালিয়েছে জিএসআই। দেখুন এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি কমছে, পাশাপাশি এই জ্বালানি পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর তাও নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরো পড়ুন – খাদের ধারে ঝুলন্ত দোকান দেখে চমকে গেলেন? প্রায় ৩৯৩ ফুট উপরে দোকানটির অবস্থান
আজকের দিনে পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশই গ্যাসোলিন-জ্বালানির ইঞ্জিন থেকে সরে আসছে ব্যাটারির দিকে। আর এই কারণেই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে ব্যবহৃত লিথিয়াম, নিকেল এবং কোবাল্টের চাহিদা বিশ্বজুড়ে বাড়ছে। ভারতবর্ষে এবার লিথিয়ামের খনির সন্ধান মিলেছে।
জানা যাচ্ছে পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত সরকার লিথিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজ সুরক্ষিত করার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ বিজ্ঞানী মহলের একাংশ মধ্যেই দাবি করেছে যে লিথিয়ামের আবিষ্কারটি ভারতকে আগামী ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পূরণেও সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন – প্রতি ৬ মিনিটে একটা করে ফোন চুরি? যেকোনো মুহূর্তে আপনার ফোন চুরি হয়ে যেতে পারে?
ভারতে এই মুহূর্তে শিল্পের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা ৩০ শতাংশ বাড়াতে বদ্ধপরিকর রাষ্ট্র। তাই সে ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা যত বাড়বে যতই লিথিয়ামের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে।
যে হারে ভারতকে প্রতি বছর বিদেশ থেকে এই লিখিয়া আমদানি করতে হয় তাতে লাভের অংশের অনেকটা বেরিয়ে যায় এবং এতে কোনোভাবেই অর্থনৈতিক উন্নতি হয় না। সেখানে দাঁড়িয়ে নিজের দেশে লিথিয়ামের খনি আবিষ্কার অনেক বেশি কার্যকরী হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। তাই এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে একটা মাইলফলক।
আরো পড়ুন – আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর পরে কেমন হবে এ বিশ্বের অবস্থা, জানেন?
ভারত এই মুহূর্তে লিথিয়াম এবং ব্যাটারি আমদানি করে হংকং, চিন, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনাম থেকে। এবং ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত এই আমদানিতে ২৬,৭০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছে ভারত।
পরিসংখ্যান বলছে এই মুহূর্তে চিলিতে বিশ্বের বৃহত্তম লিথিয়াম আকরিক মজুদ রয়েছে, পরিমাণ প্রায় ৮ মিলিয়ন টন। তারপরেই অস্ট্রেলিয়ার ২.৭ মিলিয়ন টন, এরপর একে একে আর্জেন্টিনার ২ মিলিয়ন টন এবং চিনের ১ মিলিয়ন টন লিথিয়ামের সন্ধান জানে বিশ্ব। কিন্তু ভারতের আবিষ্কার বাকিদের প্রায় ব্যাকফুটে ফেলে দিল বলাই যায়।