Breaking Bharat: রাজ্যে ফের ‘ঘুরে দাঁড়াচ্ছে’ বামেরা (CPIM )! চারকেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামেদের ভোটের হার তো তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছে। এমনকী, সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে আশায় বুক বাঁধতে দেখা গেছে শীর্ষ নেতৃত্বকেও। এবার সেই পরিসংখ্যানেই নতুন সংযোজন। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ১ নম্বর ব্লকের বাদলপুর কৃষি উন্নয়ন লিমিটেডের পরিচালন কমিটি নির্বাচনে এবার তৃণমূলকেই হারাল বামেরা।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে (2019 Lok Sabha elections) বামেদের ভরাডুবি দেখেছে গোটা বাংলা। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেড ভরলেও ভোটবাক্সে তার প্রভাব চোখে পড়েনি। সেখানেও শোচনীয় পরাজয় এবং রাজ্যে বিরোধী দল হিসেবে গেরুয়া শিবিরের প্রভাব বেশ চোখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাত্র কয়েকমাসের ব্যবধানেই যেন বদলাচ্ছে সমীকরণ! বিশেষত দিনহাটা, গোসাবা, খড়দহ ও শান্তিপুরের উপনির্বাচনে বামেদের পরাজয় হলেও পরিসংখ্যানের নিরিখে বেড়েছে ভোটের শতকরা হার।
আলাদা আলাদা করে এই চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের পরিসংখ্যান দেখেও অনেকে আঁচ করছেন বামেদের প্রত্যাবর্তনের কথা। পরিসংখ্যান বলছে, দিনহাটায় ২০২১-এ জয়ী হন বিজেপি-র নিশীথ প্রামাণিক। সেই নির্বাচনে বাম তথা ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আবদুর রউফ পেয়েছিলেন ৬০৬৯ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ২.৪৯ শতাংশ। উপনির্বাচনে সেই কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পেয়েছেন ৬২৯০ ভোট। অর্থাৎ শতাংশের বিচারে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের থেকে এবারে বামেদের ভোট বেড়ে হয়েছে ২.৭৯ শতাংশ।
অন্যদিকে একই ধারা দেখা গেল শান্তিপুর কেন্দ্রে। ২০২১-এ এই আসনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। মোর্চা মনোনীত কংগ্রেস প্রার্থী ঋজু ঘোষাল পেয়েছিলেন ৯৮৪৮ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ৪.৪৯ শতাংশ। এবার সেই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী পেয়েছেন ৩৯,৯৫৮ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১০.৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ এই কেন্দ্রে আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ভোটের হার বেড়েছে বামেদের।
এক্ষেত্রে গোসাবার ফলাফল বামেদের বিপক্ষেই। ২০২১ সালে এই আসনে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত নস্কর। বাম তথা আরএসপি প্রার্থী অনিলচন্দ্র মণ্ডল সেবার পেয়েছিলেন ৪,৮৭১ ভোট। শতাংশের বিচারে যা ২.৪৯ শতাংশ। উপনির্বাচনে সেই কেন্দ্রে আরএসপি প্রার্থী পেয়েছেন ৩০৭৮ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১.৬৬ শতাংশ।
খড়দহেও কমেছে বামেদের ভোটের শতকরা হার। ২০২১-এ এই আসনে জয়ী হন তৃণমূলের কাজল সিনহা। বাম তথা সিপিআইএম প্রার্থী দেবজ্যোতি দাস পেয়েছিলেন ২৬৯১৬ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১৪.৭ শতাংশ। এবার সেই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দেবজ্যোতি দাস পেয়েছেন ১৬,১১০ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১০.৩৯ শতাংশ।
আরো পড়ুন- আপনি কি চা প্রেমী? দুধ দিয়ে চা খেতে ভালোবাসেন? এবার সাবধান !
চারটি কেন্দ্রের মোট ভোটের শতকরা হার দেখলেও বোঝা যায়, বামেদের ভোটব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বমুখী গ্র্যাফ। ২০২১ সালে বামেদের ভোট ছিল ৫.৬ শতাংশ। এবার তা বেড়ে হল ৮.৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে লাল শিবিরের ভোট বেড়েছে ২.৮২ শতাংশ ভোট। আর ২০২১-এ সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪.৭৩ শতাংশ। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে, ৭.২৭ শতাংশ। অর্থাৎ একক দল হিসেবে সিপিআইএম-এর ভোট ২.৫৪ শতাংশ বেড়েছে।
আরো পড়ুন- রাতের বেলায় ঘুমের দেশে যাওয়ার আগে এই সেরা অভ্যাসগুলো মেনে চলুন!
এই ফল প্রকাশ্যে আসতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথাতেও আশার সুর শোনা গেছে, তিনি বলেন,‘চার কেন্দ্রে বিজেপির ভোট প্রায় অপরিবর্তনীয়। সবাই চেষ্টা করছিল বিজেপি বা তৃণমূল-কে আনতে, কিন্তু ৬ মাসেই ভারতীয় জনতা পার্টির ভোট কমেছে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার।’ দিলীপ ঘোষ, তথাগত কেন, স্বয়ং মোদীও যে বাংলায় বিজেপি-কে দাঁড় করাতে পারবেন না, এমনটাও শোনা গেছে সুজনবাবুর কথায়।
আরো পড়ুন- Water: খেয়ে উঠেই জল খান? সাবধান! এতে বিপদ বাড়তে পারে
এরই মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ১ নম্বর ব্লকের বাদলপুর কৃষি উন্নয়ন লিমিটেডের পরিচালন কমিটি নির্বাচনে জিতল বামেরা। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল-কে হারিয়েই এই জয় ছিনিয়ে নিল লালশিবির। ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেখানে পরিচালন কমিটির দায়িত্বে ছিল বামেরা। কিন্তু মেয়াদ শেষ হলেও করোনা আবহে ভোট করা যায়নি। গত রবিবার সেই পরিচালন কমিটির মোট ৯টি পদের জন্যই লড়াই করে তৃণমূল। দু’টিতে লড়াই করে বিজেপি। অন্যদিকে ৯টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বামেরা এবং ন’টি আসনই জিতেছে লালশিবির। তাহলে কি ফের পুরনো ছন্দে ফিরছে বামেরা? বাংলার রাজনৈতিক তর্জায় সেই প্রশ্নই ঘুরেফিরে আসছে।