Breaking Bharat: প্রচন্ড খিদে পেয়েছে? গরম গরম কচুরি (kochuri) আপনার জীবন বাঁচাতে পারে সে কথা জানেন? ঠিক তখন রাস্তার ধারের মিষ্টির দোকানে গরম গরম কচুরি আহা এ যেন অমৃত! বাঙালির প্রিয় কচুরি আসলে লাইফ সেভার, ব্রেকফাস্ট হোক বা সন্ধ্যাবেলার খাবার বাঙালির পাতে কচুরি মানেই সুপার হিট,তাই না?
খেতে ভালোবাসে না এমন মানুষ সহজে পাওয়া যায় না। কম হোক বা বেশি খাওয়ার কথা শুনলে চেখে দেখার স্বাদ জাগে সবারই। তবে খাদ্যতালিকায় কিছু জিনিষ বিশেষ ভাবে নজর আর মন কেড়ে নেয় সব সময়। প্রথমেই বলতে হয় ভাজাভুজির কথা। বাঙ্গালীদের এই বিষয়টার প্রতি একটা বিশেষ দুর্বলতা আছে।
শীতের সকালে গরম গরম কচুরি (Koraishutir kochuri):
বাজারে যাওয়া মানেই তেলে ভাজা সিঙ্গারা আর কচুরির খোঁজ করা। যতই কেতাদুরস্থ খাবার, পিৎজা পাস্তার বাহার থাকুক, গরম গরম কচুরি খাওয়ার যে মহিমা, তা আজকেও সমান জনপ্রিয়। আর এই বিষয়ে শহর কলকাতার নাম উল্লেখযোগ্য। আড্ডা থেকে অতিথি সেবা, প্রথম ভাবনায় কচুরি। স্বাদ গন্ধে অতুলনীয়।
বেঁচে থাকতে গেলে খাওয়া দাওয়া অবশ্যই দরকার। রোজ হোক খানা পিনা, ঠিক এমনটাই মনে করেন অনেকে। তাইতো চটজলদি মন ভালো করা খাবার বাড়িতে তৈরি করে প্রতিদিনই পিকনিক মুড। আজকে বলছি কচুরির কথা। আসলে এই কচুরির জনপ্রিয়তা শুধু বাংলা বা কলকাতায় আটকে নেই।
বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন নাম পেয়েছে এই খাবার। কচুরির মূল উপাদান হল ময়দা আর ঘি, আজকাল অবশ্য সয়াবিন বা রিফাইন তেল। কিন্তু স্পেশাল ম্যাজিকটা থাকে এর পুরের মধ্যে। নিরামিষ এবং আমিষ দু’ধরনের পুর পেতে পারেন আপনি।
কচুরি আপনার জীবন বাঁচাতে পারে সে কথা জানেন?
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বাঙালিরা নিরামিষ কচুরি খেতে পছন্দ করেন বটে। সেক্ষেত্রে পুর হিসেবে অনেকে ডালবাটা, কেউ বা কড়াইশুঁটির পেস্ট দিয়ে তারপর তার সঙ্গে পছন্দসই মশলা দিয়ে কিছুটা কষিয়ে এক অসাধারণ পুর তৈরি করে থাকেন। অনেকে আবার মশলার মধ্যে পেঁয়াজ ব্যবহার করেন।
এখন পেঁয়াজ রসুনকে আমিষ বা নিরামিষ ভাবার মধ্যেও কিন্তু বিভিন্ন জায়গার সংস্কৃতির এবং রীতির কথা কথা উঠে আসে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো অনেক জায়গায় কিন্তু কচুরির ভেতর থাকে মাছের পুর, কোথাও আবার হিং এর কচুরি। যেমন স্বাদ তেমন গন্ধ। কচুরি কিন্তু একা নয়, তার সঙ্গে তার জাত ভাই-বোনেরাও আছে। খাস্তা কচুরি বা ডালপুরি।
বাঙালির পছন্দের গরম গরম কড়াইশুঁটির কচুরি:
খাস্তা কচুরিতে আবার ময়দার ময়ান বেশি দেওয়া হয় কারণ এই কচুরি ঢিমে আঁচে অনেকক্ষণ ধরে ভাজতে হয়। ছোলার ডাল বেটে একটু ভেজে নিয়ে পুর ভরে কচুরি আকারে ভেজে নিলে তা হয়ে যায় ডালপুরি। খাস্তা কচুরি অনেকক্ষণ ধরে ভাজতে হয়। ধনেপাতার চাটনি দিয়ে খাওয়া যায়। অবাঙালিরা পেঁয়াজের কচুরিও তৈরি করে থাকেন। তবে বাঙালি কচুরি খায় ডাল বা আলুর দম দিয়ে।
কচুরি আপনার জীবন বাঁচাতে পারে সে কথা জানেন? প্রচন্ড খিদে পেয়েছে মনে হচ্ছে এবার সব শেষ আর পারবোনা বাঁচতে, ঠিক তখন রাস্তার ধারের মিষ্টির দোকানে গরম গরম কচুরি (Hot hot kachuri in the sweet shop) আহা এ যেন অমৃত! তখন সত্যি সত্যি জীবন বেঁচে যায় কিনা বলুন?
আভিজাত্যের কচুরির সঙ্গে কিভাবে জড়িয়ে?
এই প্রতিবেদনে কোন বিজ্ঞাপন পরিবেশন করা আমাদের লক্ষ্য নয়। কিন্তু উত্তর থেকে দক্ষিণ কিছু বিখ্যাত প্রচুর দোকানের কথা উল্লেখ করা যেতেই পারে। তাহলে অভিজাত এলাকা আভিজাত্যের কচুরির সঙ্গে কিভাবে জড়িয়ে? এই প্রশ্নের উত্তর বলতে উত্তর কলকাতা দিয়ে শুরু।
আরো পড়ুন – Dada Boudi Biryani : দাদা বৌদির বিরিয়ানি! কোন ম্যাজিকে মানুষের মন জয় করল এই বিরিয়ানি?
খুব যে বেশি সৌখিনতা আছে বা সাজানো গোছানো পরিপাটি দোকান এমনটা নয়। আমরা বলছি, বাগবাজারের পটলার দোকানের কচুরির কথা । প্রায় ১০০ বছরের প্রাচীন দোকানে কচুরির স্বাদ এতটুকু বদলায় নি। ঠিকানা, বাগবাজার স্ট্রিটে ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের ঠিক বিপরীতে । এক ডাকে সবাই চেনেন।
কচুরি আর ছোট আলুর তরকারি:
কচুরি আর ছোট আলুর তরকারি শালপাতায় করে বিক্রি করা হয়। উপচে পড়া ভিড় সকাল থেকে। মানিকতলার সুখিয়া স্ট্রীটে ঢুকে বাঁ হাতে রয়েছে ‘গীতিকা’। এখানকার কচুরি দারুণ মুচমুচে। নন্দলাল সুইটস রয়েছে উল্টোদিকে। যুগ যুগ ধরে এর প্রসিদ্ধি। বিশেষ। বিশেষত্ব হিং এর কচুরি।
আরো পড়ুন – Fuchka History: ফুচকার প্রথম আবিষ্কার! মহাভারতে ফুচকার সূচনা দ্রৌপদীর হাত ধরে?
শ্যামবাজার মোড়ে হরিদাস মোদকের দোকানের বয়স প্রায় ২৫০ বছর। কিন্তু কচুরি না স্রেফ সাদা লুচি পাওয়া যায়। তাতেই কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। এদিকে আছে হাতিবাগানের ‘গদার কচুরি’ । স্পেশালিটি তরকারি তে। আলু , কুমড়ো, বাঁধাকপির পাতা কী নেই? তবে স্বাদ ওয়ান অ্যান্ড ওনলি টাইপ।
আরো পড়ুন – Naga Sanyasi : মকর সংক্রান্তিতে যাদের ভিড় গঙ্গাসাগর জুড়ে, সেই নাগা সন্ন্যাসীদের জীবন কেমন?
উত্তর থেকে সোজা দক্ষিণ, ভবানীপুরের শ্রী হরি মিষ্টান্ন ভান্ডার। আটটা সাড়ে আটটার পর দোকানে আর কচুরি থাকে না । এবার রাসবিহারী থেকে বাঁদিকে ঘুরে যান। দেশপ্রিয় পার্ক থেকে সার্দার্ন অ্যাভিনিউয়ের দিকে গেলে দেখতে পাবেন ‘মহারাণী’।
এখানে কচুরি খেতে গেলে হাতে সময় নিয়ে যাবে। বড়লোক হোক বা গরিব লোক লাইনে দাঁড়াতেই হবে। ধর্মতলার বিভিন্ন জায়গাতেও নানা আর স্বাদের কচুরি পাওয়া যায়। ট্রাই করে দেখে জানাবেন কিন্তু।