Breaking Bharat: আপনি কি জানেন দ্বিতীয় মহাকাশ বন্দর তৈরি করছে ইসরো? কোথায় হচ্ছে সেই বন্দর আর কেনই বা করা হচ্ছে?
চাঁদে ভারতের মহাকাশযান পৌঁছে যাবার পর থেকে কিন্তু ইসরো অর্থাৎ ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সংস্থা নিয়ে লোকের মনে আগ্রহ বেড়েছে। শ্রীহরিকোটার স্পেস সেন্টার থেকে চন্দ্রযানের পর আদিত্য এল ওয়ান লঞ্চ করেছে। আগামী দিনে চাঁদে রোবট পাঠানো থেকে শুরু করে গগনযানের মাধ্যমে মানুষ পাঠাবার কাজও করবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
সূর্য মিশনের সূচনা হয়ে গেছে পরবর্তীতে আরও অনেকগুলো ধাপ আসবে। সেক্ষেত্রে একটা রকেট লঞ্চ প্যাড কি কম হতে পারে? সেই কারণেই কি দ্বিতীয় মহাকাশ বন্দর তৈরির ভাবনা? কোথায় হচ্ছে বলুন তো? অনেকগুলো প্রশ্ন একে একে উত্তর দেব আর শেষ থেকে শুরু করব। আমাদের দেশের দ্বিতীয় মহাকাশ বন্দর তৈরি হচ্ছে তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন জেলার কুলশেখরপট্টিনমে। সেখানে জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে।
ইসরোর দ্বিতীয় মহাকাশ বন্দর:
আমরা সকলেই জানি যে এই মুহূর্তে দেশে একটিই মহাকাশ বন্দর রয়েছে ইসরোর। সেটা হল বঙ্গোপসাগরের শ্রীহরিকোটা দ্বীপে, যা দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলায় পড়ে। আজ থেকে ২১ বছর আগে অর্থাৎ ২০০২ সালে এই মহাকাশ বন্দরের নামকরণ করা হয় ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যানের নামে।
আমরা সাধারণত কোন রকেট উৎক্ষেপণ হলে তবে এই সম্পর্কে জানার সুযোগ পাই আর এখন যখন মহাকাশ গবেষণা নিয়ে এত বেশি করে আলোচনা হচ্ছে তাহলে চলুন এই লঞ্চ প্যাড সম্পর্কে একটু জানা যাক। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ বন্দরে বর্তমানে দু’টি কার্যকরী লঞ্চ প্যাড রয়েছে যেখান থেকে রকেট, মহাকাশযান, পোলার এবং জিওসিঙ্ক্রোনাস উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা সম্ভব।
এখনো পর্যন্ত ইসরোর চন্দ্রযান-১, ২ এবং চন্দ্রযান-৩ এখান থেকেই উড়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলযান থেকে আদিত্য-এল১ পর্যন্ত এই মহাকাশ বন্দর থেকেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এখন যেভাবে মহাকাশ বিজ্ঞানী একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পদ্ধতির ওপর কাজ চলছে সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে রকেট উৎক্ষেপণের সংখ্যা বাড়বে। তাহলে একটা মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের উপর চাপ পড়তে পারে সেই জন্যই বিকল্প তৈরির ভাবনা শুরু হয়ে যায়।
আরো পড়ুন – সমুদ্রের তলায় অন্য গ্রহের দানব আছে জানেন? হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা?
এই বিষয়ে আমরা একটা তথ্য আপনাদের দিতে পারি যা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। ইসরো বলছে দ্বিতীয় মহাকাশ বন্দরটির এলাকা শ্রীহরিকোটার চেয়েও অনেক বড় হবে। সেটি গড়ে উঠবে প্রায় ২,৩০০ একর জমির উপর এবং ইতিমধ্যেই যার ৮০ শতাংশের বেশি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। আসলে শ্রীহরিকোটা PSLV এর মতো ভারী রকেট উৎক্ষেপণের জন্য আদর্শ।
আরো পড়ুন – ১২৫ বছর পর প্রকৃতির কোলে কোন পাখি ফিরল জানেন? ১২৫ বছর তেমনটাই যে হল!
কিন্তু সেখান থেকে ছোট রকেট উৎক্ষেপণের সময় অনেক ক্ষেত্রে নানারকম সমস্যায় পড়তে হয় ইসরোকে।SSLV তুলনামূলকভাবে ছোট রকেট এবং প্রায় ৫০০ কিলোগ্রামের কাছাকাছি ওজনের উপগ্রহ পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠাতে এটি ব্যবহার করা হয়।
এখানে মনে রাখতে হবে শ্রীহরিকোটা থেকে যখন রকেটগুলিকে পৃথিবীর মেরু কক্ষপথের উদ্দেশে পাঠানো হয়, তখন খুব স্বাভাবিক ভাবে সেগুলি দক্ষিণ দিক বরাবর উড়ে যায়। কারণ যদি সোজা পথে উড়ে যেতে হয় তবে প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার ওপর দিয়ে উড়ে যেতে হবে।
আরো পড়ুন – সূর্যের পথে পাড়ি দিয়ে কতদূর যাবে আদিত্য এল ওয়ান? নাসার মহাকাশযান কি সত্যিই এখন সূর্যতে?
এবার কোন কারনে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়লে শ্রীলঙ্কায় বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। সোজা পথের পরিবর্তে ঘুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ বহন করতে হয় ভারত সরকারকে। বড় রকেটের সমস্যা না হলেও ছোট রকেটের ক্ষেত্রে এত জ্বালানি বহন করার ক্ষমতা থাকে না। তাই বিকল্প লঞ্চ প্যাড তৈরির চিন্তাভাবনা।