Breaking Bharat: মারাত্মক বিপদ মাকড়সার জালে? কেন দূরে থাকতে বলা হয়? সত্যিই কি মাকড়সার জালে বিদ্যুতের প্রভাব থাকে? আপনি কি মাকড়সার ক্ষমতার কথা জানেন?
অদ্ভুত বলে কিছুই হয়তো হয় না। সব কিছুর পেছনে একটা বৈজ্ঞানিক যুক্তি অবশ্যই থাকে। তাই যত সময় যাচ্ছে কুসংস্কার বিষয় গুলো ক্রমাগত অতীত হয়ে যাচ্ছে। আপনি নিশ্চয়ই ছোটবেলায় মাকড়সার জাল দেখলে ছুঁয়ে দেখতে চাইতেন? বা ধরুন কাঠি দিয়ে জাল ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে হত আপনার?
কিন্তু বাড়ির বড়রা বারণ করেছেন তো! সামনে গেলেই কারেন্ট লেগে যায় বলে সাবধান করা হয়েছে নিশ্চয়ই আপনাকে? সত্যিই কি মাকড়সার জালে বিদ্যুতের প্রভাব থাকে? বিজ্ঞান কী বলছে জেনে নেওয়া যাক (is spider web poisonous to humans)।
হলিউডের সুপারহিরো মানেই সুপারম্যানের, স্পাইডারম্যানের কথা। একজন অসাধারণ পাওয়ারফুল কিন্তু দ্বিতীয় জন একটু অন্য শক্তিতে ফেমাস। আরে ‘মাকড়সা‘ মানব মানেই তার মধ্যে স্পাইডারের বৈশিষ্ট্য থাকবে এটা আর নতুন কী? তবে কল্পনা যেভাবেই কাল্পনিক চরিত্র দের তৈরি করে নিক না কেন, বাস্তব থেকে কিছুটা তথ্য ধার নিয়েই মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি হয় কল্প কাহিনী।
আপনি কি মাকড়সার ক্ষমতার কথা জানেন?
যারা স্পাইডার ম্যানের ভক্ত তারা তাদের হিরোর বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আপনি কি মাকড়সার ক্ষমতার কথা জানেন? নিজের তৈরি জলে যে অনায়াসে অন্যকে জড়িয়ে ফেলতে পারে সে কি কম শক্তিধর? তার জালেও আছে বিশেষ শক্তি। আর সেটা তড়িৎ চুম্বকীয়। হ্যাঁ মানে কারেন্ট লাগার অনুভূতি থেকেই যায়।
আসলে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, মাকড়শাল জাল তার আশেপাশের কিছু স্থানের তড়িৎ ক্ষেত্রকে সহজেই বিকৃত করে ফেলতে পারে। এই জালের মধ্যে এক বিশেষ ধরনের আঠা থাকে। স্পাইরাল আঠা বলা হয়। দেখা গেছে এই আঠা জালের কয়েক মিলিমিটার দূরত্ব পর্যন্ত পৃথিবীর বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে বিকৃত করে ফেলতে সক্ষম।
মাকড়সার জালে তারা কী ভাবে আটকে যায়?
এখন প্রশ্ন হতেই পারে, যে অনেক কীটপতঙ্গ তাদের এন্টেনার ‘ইলেকট্রিক সেন্সর’ এর মাধ্যমে পৃথিবীর তড়িৎ ক্ষেত্রের সামান্য পরিবর্তনও ধরে ফেলতে পারে। তাহলে মাকড়সার জালে তারা কী ভাবে আটকে যায়? আসলে মাকড়সা যে জাল সৃষ্টি করে তার ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠের চৌম্বক ক্ষেত্রের যে পরিবর্তন হয় সেটা খুব একটা বেশি নয়। এবং সেটা বেশি দূর পর্যন্ত কার্যকর হয়ও না।
আরো পড়ুন – বড়দিনে ‘কেক’ খেতে ভালোবাসেন? কেক ছাড়া কেন ২৫ ডিসেম্বর উদযাপন করা যায় না বলুন তো?
তবুও কীটপতঙ্গরা এই তড়িৎ ক্ষেত্রের পরিবর্তন ধরতে কেন সক্ষম হয় না, এ প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া সম্ভব হয়নি। মাকড়সার জালের ফাঁদ সম্পর্কে যে কৌশল গুলো লক্ষ্য করা যায় সেদিকে নজর দিলে হয়তো কিছুটার রহস্য উন্মোচিত হতে পারে। আসলে মাকড়সার তৈরি জালের আঠা তড়িৎ পরিবাহী।
আরো পড়ুন – ক্যান্ডি ফ্লস’ বা ‘কটন ক্যান্ডি’ কিংবা ‘স্পুন সুগার’ বা বুড়ির চুলের আসল রহস্য কি?
ইলেক্টোস্ট্যাটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত হওয়ার কারণে এই আঠা মাকড়সার পুরো জাল জুড়েই বিস্তৃত থাকে। অর্থাৎ কোন অংশে বাদ থাকে না।এর ফলে চার্জযুক্ত যে কোন কিছু হোক যেমন ধরুন ফুলের রেণু কিংবা কোনও ধরণের কীটপতঙ্গ , সেগুলো সহজেই জালে আটকে যায়। সব থেকে অবাক করা তথ্য হলো মাকড়সার এই জাল পরিবেশের জন্য খুব উপকারী।
আরো পড়ুন – পুরুষেরা মহিলার পাশে থাকতে গেলে সমাজের কটাক্ষর শিকার হতে হয় কেন?
বায়ু দূষণ আটকাতে এই জাল দারুন কাজ করে। জালগুলো বৈদ্যুতিক আকর্ষণের মাধ্যমে দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থগুলোকে নিজেদের মাঝে আটকে ফেলে, যার ফলে পরিবেশের অনেকটা অংশের দূষণজাত পদার্থ এই জালে লেগে থাকে। অনেক ব্যয়বহুল যন্ত্রও যেটা করতে সক্ষম নয়, সেই কাজটা একাই মাকড়সার জাল করে দেয়।