Breaking Bharat: বাসে ট্রেনে নিত্য যাতায়াত করেন? কেন গণপরিবহনে সফর মেয়েদের জন্য এত অস্বস্তিকর? আর সে কারণে মারাত্মক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হয় মেয়েদের তাদের নিত্য দিনের গণপরিবহনে সফর কালে।
ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে আজকাল সকলকেই বাইরে বের হতে হয় কাজের জন্য। কিন্তু সব সময় নিজের গাড়িতে করে যাতায়াত করার মত ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী সকলে হন না। তার মানে হাজার একটা ঝড় ঝাপটা সামলে ভিড়ে ঠাসা গাড়িতে গাদাগাদি করে ট্রেন বাস ধরে অফিসে বা ব্যবসার জায়গায় যেতে হয় (Is it safe to travel in bus for girls?)।
কলেজে বা ইউনিভার্সিটি তে পড়াশোনা করতে গেলেও একই রকমের অভিজ্ঞতা হয়। কিন্তু ভিড় বা লোকজন আসল সমস্যা নয়, মূল সমস্যা হলো লোকজনের মানসিকতা। আর সে কারণে মারাত্মক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হয় মেয়েদের তাদের নিত্য দিনের গণপরিবহনে সফর কালে।।
মেয়ে তার বিচার হয় শরীর দিয়ে, এ কথা যেন সমাজ খুব ভালো করে বুঝতে শিখেছে। আর তাই বুঝিয়ে দিয়েছে সকলকে। সে কারণেই মেয়ে দেখামাত্রই তার শরীরের দিকে চোখ পড়ে ছেলেদের। অস্থি, চর্ম, মাংসপিণ্ড, হাড় সবটাই কিন্তু ছেলেদের এবং মেয়েদের দুজনেরই রয়েছে।
অন্তত বায়োলজি সিলেবাসে যেটুকু পড়া গেছে তা থেকে এটা পরিষ্কার। তবুও মেয়ে মানে একটা লোলুদ্ধ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকা। হয়তো মনে হবে এ কেমন কথা বার্তা কিন্তু ভেবে বলুন তো এটাই কি মানসিকতা নয়?
ব্যতিক্রম ধরে হিসেব করবেন না, আমরা বলছি বেশিরভাগ মানুষের পুরুষের ভাবনাচিন্তার কথা। আর যার জেরে ভিড় ট্রেনে বা বাসে মেয়েদের এত কনুইয়ের ঠেলা বা গুতা খেতে হয়। কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের পুরুষ শুধুমাত্র ভিড় জায়গাতে ঘোরাফেরা করে মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত দেওয়ার জন্য। কখনো লোক লজ্জার কারণে আবার কখনো সাহস না জোগাতে পারার জন্য মুখ বুজে মেয়েরা এগুলো সহ্য করে নেয় (Why Women Feel Unsafe on Public Transport)।
এই করে করে দিনে দিনে এইসব মানুষের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে। আজকের দিনে প্রতিবাদ করেও তো লাভ নেই কারণ পরবর্তীকালে সেই মেয়েটিকেই টার্গেট করে যে ধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে রাখা হবে না বা জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়া হবে না তার গ্যারান্টি তো কেউ দিতে পারে না।
আরো পড়ুন – আপনার হাসি নিয়ে অন্যদের হাসাহাসি? চিন্তা নেই, আপনি সঠিক পথে আছেন!
তাই আস্তে আস্তে কুঁকড়ে যাচ্ছি আমরা। ফাঁকা বাসে উঠলে চোখ দিয়ে ধর্ষণ সহ্য করতে হয় প্রত্যেকটা মুহূর্তে, রাতে ট্রেনে একা থাকলে টেনশন নিয়ে নিজের ব্যাগ বুকের সামনে জাপটে ধরে নিজেকে রক্ষা করার মন্ত্র মনে আওড়াতে হয়। এই হলো আপনার আমার ভারতবর্ষ। ছেলে হয়েছে বলে নিশ্চিন্ত আছেন আজকের দিনে পুরুষও নিরাপদ নয়।
আরো পড়ুন – বিয়ের মণ্ডপে বরের জুতো চুরি! কী কেলেঙ্কারি তাই না? তাহলে এটা নিয়ে এত উন্মাদনা কেন?
কারণ তার নিরাপত্তাহীনতাও আজকের সমাজ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আসলে কি বলুন তো? মানসিকতা এতটাই নিম্নগামী যে সেগুলো নিয়ে লিখতে বা বলতে গেলেও সুস্থ মানুষের রুচিতে বাধে। অথচ মানসিকভাবে অসুস্থতার নাটক করা সেই মানুষগুলো এর সুযোগ নিচ্ছে।
আরো পড়ুন – Dream of death in sleep: ঘুমের মধ্যে মৃত্যুর স্বপ্ন দেখছেন? এর পেছনে কি কোনো বিশেষ কারণ আছে?
যে পাগল তার প্রতি সকলেই সহানুভূতিশীল কিন্তু যে সেয়ানা সে কিন্তু পাগলের পাগলামো কেও অসম্মান করছে। কারণ যিনি প্রকৃত অর্থে পাগল তার প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা থাকে , সমবেদনা থাকে। আর মিথ্যে অভিনয় করে বিকৃত মস্তিষ্কের চাহিদা পূরণের নাটককে আড়াল করা যায় না।
ভিড় হোক বা ফাঁকা গণপরিবহনে যখনই আপনি অংশীদার হয়ে যাচ্ছেন তখনই যেন নিজের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন বুকে ট্যাগ হিসেবে লাগিয়ে রাখছেন কারণ পুরুষের চোখের নজর সবার আগে আপনার বুকেই পড়ে। এই অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে আর কতদিন যেতে হবে বলতে পারেন? বাইরে বেরিয়ে এভাবেই কি চিরকাল মেয়েদের ওড়না ঠিক করতে করতে যেতে হবে? খুঁজে আর ভেবে দেখুন উত্তরটা আদৌ জোগাড় করতে পারেন কিনা।