Breaking Bharat: সঞ্চয়ী আর কৃপণের মধ্যে ফারাক কোথায়? জানেন কি? সঞ্চয়ী আর কৃপণের মধ্যে ফারাক বুঝবেন কী করে?
মানুষের বাঁচার একাধিক কারণ থাকে। কখনো কোনো মানুষের জন্য বাঁচা কখনো আবার কর্মের জন্য। কিন্তু মোটের ওপর জীবন এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে অনেকগুলি পর্যায়ের অতিক্রম করতে হয়। এখানেই একটা বড় ভূমিকা নেয় টাকা-পয়সা বা অর্থ।
উপার্জন এবং খরচের মধ্যে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যদি প্রয়োজনের বেশি খরচ হয় তাহলে সেটা বাড়াবাড়ি কম হলে কিপ্টেমি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কোনটা প্রয়োজন আর কতটা প্রয়োজন সেটা কি সার্বিকভাবে বলা যায়?
কৃপণ এবং অর্থ সচেতন মধ্যে পার্থক্য কি?
যে মানুষটা খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে এতোটুকু পয়সা খরচ করেন না। মানে বলতে পারেন একটু বেশি খরচ মানেই তার কাছে সেটা বাড়তি বা প্রয়োজন নেই বলে মনে হয়। আবার সেই লোকটাই গাড়ি বাড়ি কিনতে বা তৈরি করতে টাকার পর টাকা জলের মতো খরচ করেন। সেই ব্যক্তি মনে করেন তিনি ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করছেন। যিনি খেতে ভালোবাসেন তার ধারণা ওই ব্যক্তি কৃপণ তাই টাকা খরচ করলেন না।
সবটাই আসলে দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক। কেউ আজকের জীবনে কম খরচ করে ভবিষ্যৎকে ভালো রাখতে টাকা সঞ্চয় করার মানসিকতা বজায় রাখেন। সেই কারণে তারা দশ টাকা রোজগার করলে চেষ্টা করেন ৭ টাকা সেভ করে ব্যাংকে রাখতে। তিনি সারা জীবন খারাপ থেকে তার সন্তানদের ভবিষ্যতে ভালো থাকার রাস্তা তৈরি করে দিয়ে যান।
নিজেকে মিতব্যায়ী বলে পরিচয় দেন তারাই। আসলে মিতব্যায়ী শব্দটার সঙ্গে কোথাও যেন সঞ্চয়ী শব্দটাও জড়িয়ে আছে। মনে রাখতে হবে কৃপণতা আর মিতব্যয়ীতার মধ্যে যেই সূক্ষ্ম পার্থক্যটা রয়েছে, সেটা সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে বোধগম্য নয়। দেখুন মিতব্যয়ীতা কথাটার অর্থ হল প্রয়োজনের বেশি খরচ না করা। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই ব্যবহার করা।
আরো পড়ুন – ছেঁড়া জামা প্যান্ট কি আজকের দিনের ফ্যাশন? নাকি এটাই বর্তমান স্টাইল স্টেটমেন্ট?
সেটা খাবার হোক কিংবা জীবন যাপনের নিত্য প্রয়োজনীয় টুকিটাকি কিন্তু কখনোই বিলাসিতা বা বাহালতা নয়। কিন্তু যদি কৃপণ মানুষের কথা বলেন তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনের থেকে কম খরচ করার কথা উল্লেখ করতে হয়। ধরুন কোন জিনিস কিনতে দশ টাকা লাগবে সেই জিনিসটা ৮ টাকার মধ্যে কিনে নেওয়ার প্রবণতা।
ধরুন যদি একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে আপনাকে বিষয়টা বোঝাই তাহলে হয়তো ব্যাপারটা ধরতে সুবিধা হবে। একজন বাবা ১০ মিনিট আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেঁটে অফিসে যান যাতে ১০ টাকা বাঁচাতে পারেন। আবার অন্যদিকে ছেলে ১০ টাকা খরচ করে গাড়ি চেপে অফিসে যায় যাতে ১০ মিনিট বাঁচাতে পারে। এবার তাহলে ভেবে বলুন কে ঠিক আর কে ভুল?
আরো পড়ুন – আপনার কী সবসময় শীত শীত অনুভূতি হয়? লেপ কম্বল চাপা দিয়ে হাত পা ঠান্ডা থাকে?
আসলে সঞ্চয় করতে গেলে খরচ করতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে বিচারটা সবসময় হয় অর্থ দিয়ে। টাকা রোজগার করতে গেলে নিজের পরিশ্রম স্বাস্থ্য সবকিছু খরচ করতে হয় তবে গিয়ে সেই টাকা সঞ্চয় করার একটা উপায় তৈরি হয়। নিজের প্রিয় মানুষের জন্য একটা ভালো ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দায়িত্ব রাখা অত্যন্ত ভালো কথা।
কিন্তু তার জন্য নিজেকে ভালো না রাখা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। মনে রাখবেন প্রতিটা মানুষকে নিজের জীবনটা নিজেকেই বাঁচতে হয়। তাই আপনার কষ্টটা অন্যজন পাবি না আপনার ভালো থাকাটা অন্যজনের সঙ্গে আপনি ভাগ করে নিতে পারবেন না। যেটুকু পড়ে থাকে সেটা হলো সূক্ষ্ম কিছু অনুভূতি আর আমাদের ভাবনা।
আরো পড়ুন – ‘ফাঁসি’ শব্দটা শুনলেই আঁতকে ওঠেন তাই না? সিনেমায় যেভাবে দেখানো হয় আদৌ কি তাই বলে জেল ম্যানুয়াল ?
অবশ্যই সকলকে ভাল রাখার সিদ্ধান্তে অটল থাকুন কিন্তু তাই বলে আত্মাকে কষ্ট দিয়ে কিছু করবেন না। কারণ এই মুহূর্তটা আপনার কাছে আছে, আগামীতে কী হবে তা সকলের কাছেই অজানা। তাই সঞ্চয় যদি করতে হয় মুহূর্তদের করুন, টাকা পয়সার সঞ্চয় হবার হলে সেটা আপনাকে পরিস্থিতি শিখিয়ে আর বুঝিয়ে দেবে।