Breaking Bharat: আইসক্রিম খেতে ভালোবাসেন? আহা! জিভে আনা স্বাদ আর মন ভালো করা মেজাজ। কী করে কোথা থেকে এল আইসস্ক্রীম (Ice Cream) ?
গরমে হাঁসফাঁস? আর পারা যাচ্ছে না। এই তো চোখের সামনে লাল ঘণ্টা বাজানো গাড়ি। এক ছুটে চলে গিয়ে , দাদা কতদাম? কাকু ভ্যানিলা আছে? স্ট্রবেরী? কী মনে পড়ছে সেই ফেলে আসা দিনের কথা? ‘শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা – আইসক্রিমেই ভরসা’।
আইসক্রিম আবিষ্কার যিনি করেছেন তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ – এই কথা স্বীকার করবেন প্রত্যেকেই। অতীতে আইসক্রিম ছিল এক বিরল এবং মূল্যবান ডেজার্ট। সাধারণের কাছে এই খাবার ধনীদের মতো সহজলভ্য ছিল না। তবে আজকাল সময় বদলেছে।
আর আইসক্রিম অনেক সহজে আপনার কাছে চলে আসে। কিন্তু জানতে ইচ্ছে করে না যে এই স্বর্গীয় স্বাদ কার মাথা থেকে বেরোল? খ্রিস্টপূর্ব ২০০ শতকে চিনে প্রথম আইসক্রিম তৈরি হয় যখন কিছু মানুষ দুধের সঙ্গে ভাত মিশিয়ে বস্তাবন্দি করে তা বরফের মধ্যে ফেলে রাখে।
আবার চিনের রাজা ট্যাং অফ স্যাং দুধ দিয়ে আইসক্রিম তৈরির পদ্ধতি জানতেন (Method of making ice cream)। ট্যাং এর নিজস্ব ৯৪ জন লোক মিলে এই খাবার বানাত। এই ডিশ তৈরি করা হত দুধ, ময়দা/আটা এবং কর্পূর মিশিয়ে। তারপর ওই মিক্সচার ধাতব এক বোতলে ভরে বরফের তলায় রেখে দেওয়া হত।
কী করে, কোথা থেকে এল আইসস্ক্রীম ? (Ice Cream):
এই ডিশ চিনের রাজকন্যারা মজা করে খেতেন। এইভাবেই দুধ দিয়ে আইসক্রিম তৈরির চল প্রথমে চিনেই শুরু হয়। তাই বলে চিন মানেই চোখ কপালে তুলবেন না। এখানে বিরোধিতা করে লাভ নেই। তবে এবার পারস্য দেশের কথা জানিয়ে রাখা দরকার।
আমরা সকলেই হয়তো জানি যে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ফুলের মধুর সঙ্গে বরফ মিশিয়ে খেতে ভালোবাসতেন। আরেকটা কথা, আপনি কি জানেন যে রোমের রাজা নিরো ক্লডিয়াস সিজার তার রাঁধুনির কাছে মুখের স্বাদ বদলের জন্য কিছু ভিন্ন ধরণের খাবার খেতে চাইলেন।
তার আদেশ মতই বাবুর্চি এক কর্মচারীকে পাঠালেন অ্যাপেনাইন পাহাড় থেকে কিছু বরফ নিয়ে আসতে। বরফ এলে পরে বাবুর্চি তার সাথে কিছু ফল আর মধু মিশিয়ে রাজাকে পরিবেশন করলেন। রাজা ভয়ে ভয়ে এক চামচ মুখে তুললেন এবং মিনিট খানেক মতো চোখ বন্ধ করে রইলেন।
সবাই ভাবছেন কী হয় কী হয়?
পরক্ষনেই রাজা দারুণ খুশি! প্রশ্ন , কোথা থেকে পেলে এমন মজাদার জিনিস?’ ফলে বাবুর্চির রান্না যে হিট হয়েছিল তা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। এরপর থেকেই বরফের সাথে ফল আর মধু মেশানো এই খাবার বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। মানে এখানেও নিশ্চয়ই বুঝছেন আইসস্ক্রিম প্রীতি!
আরো পড়ুন- Tension : মোবাইল হারিয়ে গেছে, তাই নিয়ে আপনার টেনশন? মনোবিজ্ঞান একে কি বলে জানেন?
রোম থেকে ঠাণ্ডা পানীয়র জাদু ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। এরপর এই এলাহি জিনিস এসে পড়ে বাগদাদের খলিফাদের হাতে। তাদের বাদাম কুচি, পেস্তা, বিভিন্ন শুকনো ফলের জাদুতে এক অন্য মাত্রা প্রায় আইসক্রিম। এই খলিফারাই প্রথম বরফের মিশ্রণে চিনির ব্যবহার শুরু করেন।
আরো পড়ুন- Kadaknath chicken : কড়কনাথ মুরগি চাষ করেই লাখোপতি? এই মুরগি চাষে রয়েছে মোটা লাভ!
দশম শতাব্দীর দিকে আরবের প্রধান শহর যেমন বাগদাদ, দামেস্ক এবং কায়রোয় আইসক্রিম ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে (Ice cream gained popularity)। তাদের আইসক্রিমগুলো তৈরি হত বরফ, ক্রিম, বাদাম, দুধ, গোলাপ জল, শুকনো ফল ইত্যাদি দ্বারা। খলিফারাই প্রথম আইসক্রিমের আধুনিক যুগের সূচনা করেন এবং বাণিজ্যিক ভাবে তার প্রসারে সাহায্য করেন।
প্রথম আইসক্রিমের চলন শুরু কোথায় শুরু হয়?
আনুমানিক ১২৬০ সালে ভারতের দিল্লিতে প্রথম আইসক্রিমের চলন শুরু হয়। মোঘল শাসকগন সেই সময় আইসক্রিম খেতেন এবং তাকে বেশ পছন্দও করতেন। তাদের জন্য হিন্দুকুশ পর্বত থেকে ঘোড়ায় করে বরফ আনা হত। সেই বরফ দিয়ে তাদের ও তাদের সঙ্গীদের জন্য তৈরি হত আইসক্রিম।
আরো পড়ুন- Raghu Dakat : অত্যাচারী জমিদার-মহাজনদের ত্রাস, চিনুন গরিবের রবিনহুড রঘু ডাকাতকে!
মন খারাপ হোক কিংবা পার্টি বা বন্ধুর সাথে জমিয়ে আড্ডা, খেলা দেখা, সিনেমা দেখা সবেতেই আজ আইসক্রিম চাইই চাই। বলতে গেলে প্রায় সব দেশই এখন নিজস্ব স্বাদের আইসক্রিম ব্র্যান্ডকে আরও সুস্বাদু করে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছে (to make the ice cream brand)।
আমাদের দেশেও নানা ধরণের ফ্লেভারের আইসক্রিম পাওয়া যাচ্ছে যেমন – চকোলেট, ভ্যানিলা, স্ট্রবেরি, ম্যাঙ্গো, লিচি আরও কত কী। তাহলে এবার আইসক্রিম খেতে গিয়ে এসব মনে থাকবে তো?