Breaking Bharat: কারো সামনে ভনভন করছে? মশার কামড়ে অতিষ্ঠ? গায়ে আপনার বসা মানে রোগ তো হবেই, সঙ্গে আপনার সব রক্ত খেয়ে নিতে পারে এই পতঙ্গ?
মশা মানুষকে খুঁজে পায় কী করে?
পৃথিবীতে এরকম কোন মানুষ নেই যিনি মশা পছন্দ করেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই মশারও দুর্ভাগ্য যে এমন কাজকর্ম সে করে বেড়ায় কারোর পছন্দের পতঙ্গ হয়ে উঠতে পারে না। মানে তাকে এমন অতিথি বলা যায় যাকে দেখলেই বাড়ির লোক তাড়ানোর জন্য চঞ্চল হয়ে ওঠেন।
তার প্রথম এবং প্রধান কারণ মশা বিভিন্ন রোগ জীবাণুর বাহক এবং রোগ সৃষ্টিকারীও বটে। স্বাভাবিকভাবেই যেচে কেউ বিপদ ঘরে নিতে চাইবেন না এটা সকলেই জানে। কিন্তু এই যে মশার রক্ত খাওয়ার বিষয়টি মানে নিজের পুষ্টিকে পরিপূর্ণ করার টেকনিকটির সম্পর্কে আপনার কোনও আইডিয়া আছে (How do mosquitoes find people?)?
মশা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর রক্ত খায়:
প্রাণী বিজ্ঞানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অধ্যায় মশার বংশবিস্তার থেকে শুরু করে তার কার্যাবলী। জেনেটিক থিসিসে দেখা গেছে মশার জীবনযাত্রার বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে যা প্রকারান্তরে পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে। শুধুমাত্র মানুষের দেহেই নয় বিভিন্ন গাছে এবং ফুলে মশা বসতে দেখতে পাওয়া যায়।
মশা সাধারণত ফুলের মধু খেতে পছন্দ করে। তবে শ্রী মশা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর রক্ত খায়। আসলে ডিম উৎপাদনের জন্য মানুষের রক্তই এদের বেশি পছন্দের। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে মশা মানুষকে খুঁজে পায় কী করে? আসলে অন্ধকারের মধ্যেও মশা মানুষকে কামড়াতে পারে এর থেকেই আন্দাজ করা যায় যে এই পতঙ্গ কতটা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন।
আসল ব্যাপারটা হল মশাদের সংবেদনশীল এন্টেনা আছে যার মাধ্যমে মানুষের দেহের তাপ ঘাম এমনকি নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসকেও অনুভব করতে পারে এরা। সেটা ক্লু হিসেবে কাজে লাগিয়ে সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে। শুধুই কি অ্যান্টেনা শ্রবণেন্দ্রিয় ঘ্রানেন্দ্রিয় সবটাই রয়েছে মশার।
আরো পড়ুন – বোল্ড বৌদির বুলেট কাণ্ড জানেন? ঘোমটা দিয়ে শাড়ি পরে কাঁপিয়ে দিলেন বুলেট বৌদি!
সঙ্গে রয়েছে দু জোড়া পুঞ্জাক্ষী। গবেষকরা বলছেন মশার অ্যান্টেনা তে বিশেষ ধরনের অল ফ্যাক্টরি রিসেপ্টর থাকে যার মাধ্যমে মশা মানুষের দেহের ঘামের রাসায়নিক উপাদানকে সনাক্ত করতে পারে। মানুষের ঘামের মধ্যে ল্যাকটিক এসিড ,cঅ্যাসিটিক এসিড এর মত মশাকে আকর্ষণ করার তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধের এসিড থাকে, যা মশাকে সহজেই নিজের দিকে টেনে আনে।
একাধিক ভয়ংকর রোগের কারণ মশা:
এই রিসেপ্টরটি আয়োনোট্রপিক রিসেপ্টরটি নামে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। মশা মানুষের দেহের উপরে বসে। এরপর চামড়ার উপরের একটা উপযুক্ত স্থান নিজের পছন্দমত বেছে নেয় এবং শুঁড় দিয়ে রক্ত শোষণ করে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা ক্রিসপার জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন মশার দেহে।
আরো পড়ুন – সম্পর্ক নষ্ট করার ক্ষেত্রে একটা ইগো যথেষ্ট, তাই নয় কি? ইগো আসলে একটা অহংকার বোধ!
এর ফলে আয়োনোট্রপিক রিসেপ্টর জিনকে সরিয়ে মিউট্যন্ট মশা তৈরি সম্ভব হয়েছে। এবার এই পরিবর্তনের পর মশার আচরণ পাল্টাচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। আপনি হয়তো জানলে অবাক হবেন যে গবেষণায় দেখা গেছে, মিউট্যান্ট মশা ল্যাকটিক অ্যাসিডের প্রতি আর আকৃষ্ট হচ্ছে না।
আরো পড়ুন – লেখাপড়া করা আর জ্ঞানী হওয়া দুটোই কি এক? জ্ঞানী হওয়া বোধহয় সকলের দ্বারা সম্ভব হয় না।
একাধিক ভয়ংকর রোগের কারণ মশা। তাই বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন মশা মানুষকে ঠিক কোন কোন ভাবে শনাক্ত করতে পারে সেই দিকগুলো খুঁজে বের করা। যদি মশার রিসেপ্টরের কার্যকারিতা আটকানোর কৌশল ব্যবহার করা যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে মশা মানুষের প্রতি আর আকর্ষণ বোধ করবে না।
ইতিমধ্যে বাজারে অনেক সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলি গায়ে মেখে নিলে মশা ধারে কাছে আসে না বলে দাবি করা হয়। হয়তো আগামী দিনে এটাই বড় বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।