Subarnarekha River: যে নদীর সঙ্গে জুড়ে আছে ‘সোনার সম্পর্ক’! আজও কিংবদন্তি আর রহস্যে মোড়া সুবর্ণরেখা? সোনার কেল্লা বা সোনার খনির কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন? কিন্তু যদি নদীগর্ভেই থাকে সোনা? এই ‘সুবর্ণরেখা নদীকে বিয়ের প্রস্তাব’ আবার কখনো প্রেমের কাহিনী আর সোনার গল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এই ‘সুবর্ণরেখা নদীতে’! এই প্রতিবেদনে জানুন বিস্তারিত।
প্রকৃতি তার রূপ রস গন্ধ নিয়ে নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে। সেই সম্পর্কে সবটা জানার ক্ষমতা আমার আপনার নেই। আমরা বিস্ময়ের বিস্ময় দেখে অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না। আসলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে নানা সৌন্দর্য।
সুবর্ণরেখা! যে ‘নদীর সঙ্গে জুড়ে আছে সোনার সম্পর্ক’:
আর ভারতীয়রা অত্যন্ত ভাগ্যবান কারণ এই দেশেই রয়েছে প্রকৃতির অপার সম্ভার। ছোটবেলা থেকে ভূগোল বইতে পড়া, যে ভারতবর্ষ নদীমাতৃক দেশ। তাইতো? কূল কিনারা করে ওঠা যাবে না কতগুলো নদী এই ভারতের বুকে বয়ে চলেছে। ৪০০ সাড়ে ৪০০ নদীর নাম মুখস্ত বলা বেশ কঠিন ব্যাপার।
ধর্মীয় কারণ হোক বা সামাজিক কারণ ভারতের সব নদীরই তাৎপর্য রয়েছে। তবে সব নদীর সম্পর্কে আমরা জানিনা। এমনই এক নদীর কথা বলব যে নদীর সঙ্গে জুড়ে আছে সোনার সম্পর্ক। নাম সুবর্ণরেখা (Subarnarekha River)।
সুবর্ণরেখা নদীর ইতিহাস (subarnarekha river gold):
এই পৃথিবীতে একাধিক জায়গায় বা একাধিক বস্তুর একেক রকমের নাম। সবের তাৎপর্য বোঝা সম্ভব হয় না। আজকের আলোচ্য ‘সুবর্ণরেখা নদী‘ নিয়ে বেশ কিছু কথা জানিয়ে রাখা দরকার। আপনি কি জানেন আজও কিংবদন্তি আর রহস্যে মোড়া সুবর্ণরেখা (subarnarekha river upsc)?
সুবর্ণরেখা নদীর উৎপত্তিস্থল:
শুধু তাই নয় প্রায়ই সোনা পাওয়া যায় ভারতের এই নদীটিতে। সুবর্ণরেখা নামের অর্থ হলো, ‘সোনার রেখা বা, আঁকড়’। ভৌগলিক অবস্থান বললে ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে প্রায় ধরুন১৬ কিলোমিটার দূরে ছোটনাগপুর মালভূমিতে পিস্ক নামের একটা জায়গা থেকে উৎপত্তি হয়েছে এই সুবর্ণরেখা নদী।
এরপর সেই নদী পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এই নদীর আশপাশ দিয়ে যে সমস্ত পর্যটকরা গেছেন তারাই দেখতে পেয়েছেন ‘নদীর চড়ায় এদিক-ওদিক সোনা ছড়িয়ে আছে‘। ভাবতে একটু অস্বাভাবিক লাগলেও এটাই সত্যি।
‘সুবর্ণরেখা’ নদীর গতিপথ:
সোনার পাথর থেকে শুরু করে সোনার নুড়ি সবটাই রয়েছে এখানে। এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা মোটামুটি ভাবে এই সোনা পরিশ্রুত করেই কেটে যাচ্ছে। আসলে জল-পাথরের গা ঘষে আসার সময় নিয়ে আসে সোনার কণা।
আরো পড়ুন – Neelakurinji: নীলকুরিঞ্জি! যে ফুল ১২ বছরে একবার ফোটে, এমন ফুল সম্পর্কে জানেন কি?
জল-বালিতে মিশে থাকা সেইসব সোনাকে গ্রামের আদিবাসী মানুষ একটা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নেয়। এই সোনা যারা কিনতে আসেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘নেহারা ধুলাইওয়ালা’। এই নদীতে অনেক ছোট ছোট নদী এসে মিশেছে যেমন কাঞ্চি, করকরি, খরখরি, গরা, শঙ্খ, জুমার, ডুলুং ইত্যাদি।
তবে নিঃসন্দেহে ‘নদীর মধ্যে সোনা পাওয়া যাচ্ছে‘ (Gold is found in the river), ব্যাপারটা কিন্তু বেশ রহস্যময়। তবে এই সোনার গল্পে রয়েছে একটা মিষ্টি প্রেমের কাহিনী। জানা যায় ছোট এক নদ খড়খড়ি সুবর্ণরেখার প্রেমে পড়ে যায়।
আরো পড়ুন – ‘রসুন চাষে’ দু লাখ আয়? সামান্য বিনিয়োগেই লাখপতি? রসুন চাষে বিরাট সাফল্য!
সুবর্ণরেখা উপন্যাস:
আর এই ‘নদীকে বিয়ের প্রস্তাব’ দিলে সুবর্ণরেখা বলে যতদিন তাকে সোনায় মুড়ে রাখা যাবে ততদিনই সে সংসার করবে। সেই থেকেই খড়খড়ি সোনা দিয়ে আগলে রেখেছে সুবর্ণরেখাকে। উড়িষ্যার মানুষজন স্থানীয়রা কিন্তু ঠিক এই গল্পটা কি যুগ যুগ ধরে বিশ্বাস করে আসছেন। প্রায় ৪৭৪ কিলোমিটার লম্বা সুবর্ণরেখা নদীকে স্থানীয় লোকরা ‘করকরি নদী’ নামে ডেকে থাকেন (subarnarekha river Odisha)।
আরো পড়ুন – রাতে ঘুমের মধ্যে কাশি আসে? আসলে ‘রাতের কাশি ঘুমের দফারফা’ করে দেয়। কিন্তু এর কারণ কী?
প্রেমের কাহিনী আর সোনার গল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় ‘সুবর্ণরেখা নদীতে’। জনশ্রুতি এভাবেই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে, যদিও আমরা এর সত্যতা যাচাই করতে যাইনি। তবে এখানকার মানুষ মোটামুটি ভাবে এই সোনা পরিশ্রুত করার কাজ করে মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা দিব্যি রোজগার করেন।
আরো পড়ুন – বলিউড স্টারদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে জানেন কি? প্রেম হোক বা যৌনতা সবেতেই লাইমলাইটে তারা!
সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে বলতে হয় সুবর্ণরেখা আশেপাশের মানুষকে আগলে রেখেছে। কি মনে হচ্ছে এত তথ্য জানা ছিল না তো? তাহলে এবার সুবর্ণরেখা ঘুরতে গেলে মনে রাখবেন এই প্রতিবেদনের কথা, আর এদিক ওদিক চলতে ফিরতে আপনিও পারলে কিছু সোনা নিজেই খুঁজে নিন।