Breaking Bharat: মধ্যবিত্তদের উচ্চশিক্ষা কি শুধুই স্বপ্ন নাকি আদৌ বাস্তবে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে? ছেঁড়া কাঁথা তে শুয়ে মধ্যবিত্ত কি লাখ টাকা স্বপ্ন দেখতে পারে?
মানুষ একাধিক ইচ্ছের জোরে নিজেকে ছোট থেকে বড় প্রমাণ করে। এই ছোট মানে বয়সের কথা বলা হচ্ছে না। আর্থিকভাবে বা সামাজিকভাবে পরিস্থিতির শিকার হওয়া নিম্নস্তরের কথা বলা হচ্ছে। একটু চাইলেই এই অবস্থার সহজে পরিবর্তন করা যায়। তবে এর জন্য ভাগ্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
মধ্যবিত্তের উচ্চশিক্ষা এখনো দুঃস্বপ্ন:
আবার এটাও তো সত্যি ঈশ্বর তাকেই সাহায্য করে যে নিজেকে সাহায্য করে। তাই বড় কিছু করার স্বপ্ন যদি দেখতে হয় তার জন্য ছেঁড়া কাঁথা তে শুয়ে আছেন নাকি অলীক কল্পনা করছেন এই ভাবনাকে প্রশ্রয় দিলে চলবে না। শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই তাই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েই নিজেকে সমাজে এবং চারপাশে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। তবু বাধা আসে আর তা মোকাবেলা করার ক্ষমতাও জুটিয়ে নিতে হয়।
বাংলা প্রবাদ আছে ছেঁড়া কাঁথা তে শুয়ে লক্ষ টাকার স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। কিন্তু স্বপ্ন দেখতে গেলে চারপাশের কী পরিস্থিতি সেটাকে গুরুত্ব দিলে বোধহয় স্বপ্ন দেখা যায় না। মধ্যবিত্ত পরিবারে সবথেকে বড় স্বপ্ন হয় উচ্চশিক্ষা কিন্তু সেটার জন্য পকেট সায় দেয় না (Higher education is the dream of the middle class)।
নিজের স্বপ্ন পূরণে বাধা:
মেধাবী যে মেয়ে বা ছেলেটা আরো বেশি পড়াশোনা করতে চায় তাকে সংসারের দায়ভারের কারণে বা টাকা জোগাড় করতে না পারার জন্য নূন্যতম পড়াশোনার পরই চাকরি বা ব্যবসার পথে হাঁটতে হয়। বাড়িতে অসহায় পরিস্থিতি দেখলে কোনভাবেই আর নিজের স্বপ্ন পূরণের দিকে ছুটে যাওয়ার মত সাহস জোগাড় করা যায় না।
যে মেয়ে বা ছেলেটা পড়াশুনা করতে চায় তাকে যদি প্রতি মুহূর্তে মনে করতে হয় সংসারের অভাব অনটনের কথা, টাকা জোগাড় করার কথা কোনোভাবেই সে নিজের মানসিকতা কে স্থির রাখতে পারে না। এটা সম্ভব নয়। আবার এই সব কিছু কি এড়িয়ে গিয়ে যদি নিজের ক্যারিয়ারের দিকে মন দেয় তাহলে সমাজের চোখে সে হয়ে যায় স্বার্থপর। তাহলে কোন পথে যাবে সে?
মধ্যবিত্তদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন:
ঠিক এই কারণের জন্য কি প্রশ্ন ওঠেনা , যে মধ্যবিত্তদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা বিলাসিতার নামান্তর ছাড়া কিছুই নয়। এটা কি আবার অনেকে বাংলা প্রবাদ হিসেবে ব্যবহার করে বলেন বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করা।
মধ্যবিত্তদের মধ্যে থেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যাওয়া ছাত্র বা ছাত্রীর সংখ্যাটা কম এমন তথ্য পরিসংখ্যান ইন্টারনেট ঘেঁটে পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে প্রথমেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন টাকা পয়সার সমস্যা একটা প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও রয়েছে অনিশ্চিত জীবনের আশঙ্কা কারণ বিদেশে গিয়ে কেউই সমস্যায় পড়তে চান না।
আরো পড়ুন – মন দিয়ে লেখাপড়া করতে গেলে কলম সবার আগে দরকার তাই না? কিন্তু এই কলম এলো কোথা থেকে?
উচ্চশিক্ষার জন্য অনেকটা সময় লাগে। সেক্ষেত্রে আশপাশে তারই সমগোত্রীয় বন্ধু-বান্ধবরা যদি ততক্ষণে ক্যারিয়ারে সেটেল করে যায় চাকরি করে বা ব্যবসা করে, সেক্ষেত্রে পরিবার এবং সমাজ আঙ্গুল তুলে বলে এখনো পড়াশোনা? এত পড়ে লাভ কী?
আরো পড়ুন – টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সিরিয়াল কি খারাপ প্রভাব ফেলছে সমাজে?
সভাপতি মাইন্ড সেট করার একটা সমস্যা তো দেখা দেয়। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজনীয় তথ্য দরকার সেটাও সব সময় উপলব্ধ হয় না। আর এই সব কিছুর থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্ক।
আরো পড়ুন – নিজে নিজেকে সম্মান না দিলে, বাকি পৃথিবী কি গুরুত্ব দেয়?
এত সময় খরচ করে,লোকজনের এত বারণ অগ্রাহ্য করে, টাকা-পয়সার সমস্যা সহ সবকিছুর মোকাবেলা করে যদি শেষমেষ পরীক্ষায় পাস করা না যায় তখন কী হবে? একটা ছোট্ট কথা বলা দরকার চিন্তা ভাবনা না বদলালে কখনোই পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
যদি সত্যি সত্যি ইচ্ছে থাকে তাহলে কোনো না কোনোভাবে ব্যবস্থা হয়ে যায়। কিন্তু নিজের মাইন্ডসেটকে ঠিক রাখা আগে দরকার । কারণ সেটা না করতে পারলে সবটাই ব্যর্থ।