Breaking Bharat: নিজের ব্লাড প্রেসার চেক করেন নিয়মিত? সাবধান! দেশে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা (High blood pressure)! নিত্যদিন বাড়ছে চাপ, তার মাঝে শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে সময় পান? উত্তরটা এক ঝটকায় না। তাই অচিরেই সমস্যা বাড়ছে।
আর সবথেকে বেশি ঝুঁকি বাড়ছে হৃৎপিণ্ড জনিত সমস্যা নিয়ে। আপনি কি জানেন অজান্তেই উচ্চ রক্তচাপ আপনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। সতর্ক হোন আজই, না হলে বাড়বে বিপদ।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার:
শরীর ঠিক রাখতে বা জীবন চালাতে হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন হওয়া দরকার। সেটা যদি না হয় তাহলে হৃদপিণ্ড স্তব্ধ হয়ে যাবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। তাই সবার আগে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার (Blood pressure should be controlled)। পরিসংখ্যান বলছেভারতে হু হু করে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি।
হয়তো আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছরে মধ্যে দেশজুড়ে মৃত্যুর অধিকাংশ কারণই হবে স্ট্রোক। এই যে হার্ট অ্যাটাক এর ঘটনা ঘটে এর জন্য সবার আগে দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। শরীরের দিকে সঠিকভাবে নজর না দিলে নিয়মিত ডাক্তারি পরামর্শ না নিলে হৃদপিন্ডের সমস্যা হওয়াটা আজও কোন ঘটনা নয়।
উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন:
একবার যদি রক্তচাপ জড়িত সমস্যা হয় তাহলে আজীবন তার চিকিৎসা করে যেতে হবে। আজকাল প্রায় প্রতিটি ঘরেই ব্লাড প্রেসার এর ওষুধ খাওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ বেশিরভাগ মানুষই আজ উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভোগেন (High blood pressure problems)।
অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর ডাক্তারেরা বলছেন, ভারতে যেভাবে স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে ইতিমধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। একমাত্র এই উপায় অবলম্বন করতে পারলে, তবেই মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে। উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় হাইপারটেনশন।
উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন :
এর জন্য ঠিক কতটা পরিমাপ আপনাকে বুঝিয়ে দেবে উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে সেই বিষয়ে একটু তথ্য দেওয়া প্রয়োজন। একেবারে জীবন বিজ্ঞানের বইয়ের পাতা ধরে যদি বোঝাতে হয় তাহলে বলি আমাদের হৃৎপিণ্ড ছন্দবদ্ধভাবে সক্ষম বা সক্রিয় থাকে। এই হৃদপিন্ডের মধ্যে আছে শিরা এবং ধমনী।
এরমধ্যে ধমনীর দেওয়ালের বিরূদ্ধে রক্ত যে চাপ সৃষ্টি করে, তাকেই সাধারণত রক্তচাপ বলা হয়। এই চাপ মেডিকেল পরিভাষায় দু ধরনের হয়, সিস্টোলিক চাপ এবং ডায়াস্টোলিক চাপ। এখন যদি হৃদপিন্ডে রক্তপ্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হিসেবে ধরা হয় (High blood pressure or hypertension)।
উচ্চ রক্তচাপ কি স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে?
একজন প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। ব্লাড প্রেসার মাপার যন্ত্র কে স্ফিগমোম্যানোমিটার বলা হয়। যন্ত্রে যদি রিডিং ১৪০/৯০ বা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন বুঝতে হবে যে, ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে আর দেরি না করে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের মতে ব্লাড প্রেসার যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখা যায় তাহলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে এমনটাই নয় স্ট্রোকের ফলে মানুষের শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এমন কি অঙ্গহানির ঘটনাও ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোখ হয়ে যাওয়ার পর তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না তা না হলে সেই মানুষটিকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায় (High blood pressure can increase the risk of stroke)।
উচ্চ রক্তচাপের কারণ (High blood pressure):
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ জনিত সমস্যা তৈরি হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। তবে ইদানিং কালে যাদের কম বয়স তাদেরও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আসলে যেভাবে টেনশনের পরিমাণ বাড়ছে তাতে শরীরে সবার আগে হৃৎপিণ্ড আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অনেকেই প্রশ্ন করেন উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়? জিনগত কারণ তো আছেই এর পাশাপাশি, অতিরিক্ত ধূমপান করলে বা কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার বেশি খেলে বা অতিরিক্ত স্ট্রেস নিলে এই সমস্যা হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও কারণ:
আমরা অনেকেই হয়তো জানি আমাদের মস্তিষ্কে বিভিন্ন রকমের কোষ রয়েছে। যাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক মুহূর্তে যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ হওয়া প্রয়োজন। এবার যদি কারোর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে তবে ধমনিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয় তার ফলে নালি ছিঁড়েও যেতে পারে।
আরো পড়ুন – lonely man : পৃথিবীর একমাত্র নিঃসঙ্গ মানুষের মৃত্যুতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল বিরল জনজাতি!
এর ফলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষ তার কার্যক্ষমতা হারায়। মেডিকেল পরিভাষায় এই অবস্থাকেই চিকিৎসকরা স্ট্রোক বলে থাকেন। হৃদপিণ্ড জনিত সমস্যার যারা চিকিৎসা করে থাকেন সেই বিশেষজ্ঞদের কার্ডিওলজিস্ট বলা হয়। অধিকাংশ কার্ডিওলজিস্ট মনে করেন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের ৫০ শতাংশই, তাদের বাকি জীবন প্রতিবন্ধী হয়ে কাটান।
আশা করি এবার বুঝতে পারছেন রোগটা কতটা ভয়ংকর। মাথায় রাখতে হবে, স্ট্রোকের অনেকগুলি লক্ষণ আছে যা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা দরকার। যেমন অনেকের কথা জড়িয়ে যায় বা শরীরের কোনও একটা অংশ পড়ে যায় অথবা শরীরের একদিক অবশ হয়ে যায়। কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রেই মুখ বেঁকে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে।
প্রেসার হাই হলে কি খেতে হবে?
এরকম কিছু হচ্ছে মনে হলে, দেরি না করে আগে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ডাক্তার সব সময় বলেন সুস্থ থাকতে নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা জরুরি। পাশাপাশি জীবনধারা পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। উচ্চ কোলেস্টরেল জাতীয় খাবার কম খান , খাবারে নুনের পরিমাণ কমান। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুন – cooking oil : রান্না করার সময় সচেতন হোন। রান্নার তেলের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মহাবিপদ! জানেন কি?
পরিমাণমতো টাটকা ফল ও শাকসবজি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ধূমপান এবং মদ্যপান একদম বন্ধ করুন। কারোর যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয় ঝুঁকি না নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করান।