Breaking Bharat: কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়া ভাগ্যের ব্যাপারে সেটা জানেন? কী কারনের জন্য কোনও পরিবারের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়? আপনার বাড়িতে কি কন্যা সন্তান আছে? তাহলে মনে রাখবেন ঈশ্বরের আশীর্বাদ আছে আপনার সঙ্গে। অনেক পূণ্য করলে তবে কন্যা সন্তান পরিবারে আসে।
কন্যা সন্তান কত বড় আশীর্বাদ তা জানতে হলে আপনাকে পুরাণের কথা পড়তে হবে। যেখানে পুত্র সন্তান লাভের আশায় পুজো, যজ্ঞ, প্রার্থনা সব কিছু হয় সেখানে কন্যা সন্তানেই যে সৃষ্টির আসল গুরুত্ব এটা কেউ মনে করেন না। ভুল ধারণা থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে আসা দরকার সে কারণেই এই প্রতিবেদন।
কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়া ভাগ্যের ব্যাপার:
নারী সৃষ্টির ধারক বাহক এ কথা সবাই জানেন। তবুও কোন পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মালে এখনো আনন্দ সহকারে মেনে নেয়া হয় না কেন বলুন তো? কিছুটা সমাজের বস্তাপচা চিরাচরিত ধারণা আছেই। আর বাকিটা? ভয় বলুন বা বিশ্বাস, আজও বাড়িতে মেয়ে হলে পুরো পরিবারের সবাই একসঙ্গে খুশি হতে পারেন না। কন্যা সন্তান বরাবরই যেন বোঝা হয়ে পরিবারে আসে।
সবথেকে বড় কথা কন্যা সন্তান ঘরে থাকবে না, তাকে বিয়ে দিয়ে অন্য পরিবারে পাঠাতে হবে। কিন্তু পুত্র সন্তান থাকলে পরিবার বাড়বে, বংশবৃদ্ধি হবে। অথচ যে পরিবারে পুত্র আছে তাদের বংশ বৃদ্ধির জন্য যে কারোর কন্যাকেই প্রয়োজন, সেটা সাদা মাথায় বোধহয় ঢোকেনা সাধারণ মানুষের।
কী কারনে পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়?
এই যুগের পর যুগ ধরে ঠিক এভাবেই চলে আসছে। শাস্ত্রে আছে একবার অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কী কারনের জন্য কোনও পরিবারের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়? গীতায় উল্লেখিত আছে এই বিষয়ে। অর্জুনের প্রশ্নের উত্তরে কৃষ্ণ জানিয়েছিলেন গত জন্মে অনেক পূণ্য সঞ্চয় করতে পারলে তবে পরবর্তী জন্মে গিয়ে সেই মানুষটি কন্যা সন্তান লাভ করতে পারে।
কথিত আছে ভগবান ব্রহ্মা যখন নারীকে সৃষ্টি করছিলেন, তখন তিনি সৌন্দর্য আর বৈচিত্রের বিস্ময়ে নিজেই অবাক হয়ে গেছিলেন। বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকা মানে দুটি পরিবারকে ভালো রাখার গুরু দায়িত্ব তার কাঁধে। একটা নিজের পরিবার আর একটা তার স্বামীর পরিবার যাকে সে অবলীলায় নিজের করে নেয়। প্রতি মুহূর্তে নিজেকে উৎসর্গ করতে থাকে কন্যারা।
আরো পড়ুন – বাঙালি কি ব্যবসায় ভয় পায়? অন্যের কোম্পানিতে কর্মচারী হয়ে কতটা খুশি বাঙালি?
আরো পড়ুন – তালা আবিষ্কার! তালা চাবি ব্যবহার করেন নিশ্চয়ই, তবে উৎপত্তি কীভাবে জানেন?
মা-বাবার জন্য, স্বামীর জন্য, সন্তানের জন্য – জীবনের প্রতি পর্যায়ে আত্মত্যাগের আদর্শ চরিত্র হলো নারী। কন্যা সন্তান যদি ভূমিষ্ঠ না হয় তাহলে অচিরেই পৃথিবীর স্তব্ধ হয়ে যাবে । জীবন আর পরবর্তী জন্ম নিতে পারবে না। অথচ সেই কন্যা সন্তান ঘরে এলে সবাই মিলে একসাথে অন্তর থেকে তাকে বরণ করে নিতে পারে না। এর সঙ্গে কিছুটা সমাজের বাস্তব ছবি জড়িয়ে আছে।
আরো পড়ুন – Titanic: টাইটানিক কি শুধুই জাহাজ নাকি না ভুলতে পারা এক স্মৃতির ক্ষতচিহ্ন?
কারণ যত দিন যাচ্ছে নারীর উপর শারীরিক অত্যাচারের প্রবণতা বেড়েছে। ধর্ষণের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাই বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকলে চিন্তা বাড়ে পরিবারের। এখনো পর্যন্ত যা পরিসংখ্যান তাতে বিশ্ব জুড়ে কন্যা সন্তান হ্রাস বাড়ছে। এর পরিণতি সম্পর্কে কোন আইডিয়া আছে?
কন্যা যেমন লক্ষ্মী তেমন চণ্ডী তাই নারী অপমান নয়, বরং কন্যা সন্তানকে বরণ করুন সাগ্রহে। কারণ আপনার কন্যাই হয়তো দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে লক্ষ লক্ষ নারীদের কাছে।