Breaking Bharat (Ghost) : গভীর রাতে কারোর হেঁটে চলার শব্দ, গা ছমছম করা কিছু ঘটনা – তাহলে কি সত্যিই অশরীরীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে আমাদেরই চারপাশে?
সিনেমায় বা গল্পে বারবার করে অশরীরী অস্তিত্বের কথা জানা যায়। গা ছমছমে ভূতের গল্প (ghost story) ভয় ধরিয়ে দেয় শক্তপোক্ত মানুষের মনেও। গভীর রাতে নুপুরের শব্দ, বন্ধ ঘরের ভেতর থেকে খিল খিলিয়ে ওঠা হাসি – যেন বার বার করে বলে,
“গুমনাম হ্যায় কই, বদনাম হ্যায় কই, কিস কো খবর, কৌন হ্যায় ও, আনজান হ্যায় কই “বাড়িতে অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথিদের আগমন নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু অশরীরী অস্তিত্ব থাকা নিয়ে বিশ্বাস আর যুক্তির টানাপোড়েন।
ভূত নিয়ে নানা মানুষের নানা মত। হিন্দু শাস্ত্রে তো আবার ভূত চতুর্দশীও রয়েছে। দীপান্বিতা অমাবস্যার আগে চতুর্দশী তিথিতে হিন্দু মতে ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। হিন্দু মতে বিশ্বাস করা হয় যে এদিন মৃত পূর্ব পুরুষরা মর্ত্যে নেমে আসেন৷ তাঁদের খুশি করতে ও অতৃপ্ত আত্মাদের অভিশাপ থেকে বাঁচতে এদিন নানা আচার পালন করার প্রথা রয়েছে।
ওটা ভূত নাতো? (Ghost):
অনেকটা ভূত চতুর্দশীর মতোই পশ্চিমী দুনিয়ায় হ্যালোউইন পালন করা হয়। যুগ যুগ ধরে অনেকেই ভূতের অস্তিত্ব টের পেয়েছেন! অনেকে খোদ বাড়িতেই ভূতের ভয়ে পেয়েছেন! কিন্তু ভূত যদি অশরীরী হয় তাহলে তাকে দেখা কি সম্ভব? ভূত আছে না নেই তা শীতের দুপুর কিংবা বর্ষার রাতের আড্ডার বড় আলোচ্য বিষয়। এমন কখনো হয়েছে, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল।
আর ঘুম আসছে না। হঠাৎ খোলা জানালার দিকে চোখ গেলো। ওপাশে যেন একটা সাদা ছায়া নড়ে উঠতে দেখা গেল। সঙ্গে সঙ্গেই মনে হলো, ওটা ভূত নাতো? কীভাবে বুঝতে পারবেন আপনার চারপাশে ভূত আছে কিনা? দেখুন বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।
কিন্তু আপনি বুঝবেন কী করে তেনাদের অস্তিত্ব?
সাইকোলজিস্টরা বলেন সবটাই মনের ভুল, দুর্বল চিত্তের উদাহরণ। আমরা কিছুই বলছি না, শুধু বিশ্বাস আর বিজ্ঞানের স্পষ্ট মতামত কে তুলে ধরছি। বিজ্ঞানের কথা বললাম এবার বিশ্বাসের কথা এক লাইনে বলে দেওয়া যাক।
খুব সাধারণ ভাবে বললে বলা যায়, যাদের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে জন্ম, আর চন্দ্র খুব দুর্বল ভাবে বৃশ্চিক রাশিতে থাকে, কালসর্প যোগ থাকে এবং লগ্ন ও সপ্তম এই অক্ষে রাহু-কেতু অবস্থান করে, তা হলে তাদের ভূতে ধরার সম্ভাবনা প্রবল। এটা বলেন জ্যোতিষ চর্চার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা। কিন্তু আপনি বুঝবেন কী করে তেনাদের অস্তিত্ব?
বেশ কিছু ধারনা আর বিশ্বাসের কথা এখানে আলোচনা করা হলো। যদিও এর সত্যতা আমরা যাচাই করিনি। প্রথমত, ভূত আছে এইরকম কোনও বাড়ির কোনও ঘর বা চিলেকোঠা থেকে নানা ধরনের আওয়াজ, শব্দ, যেমন, ধস্তাধস্তির আওয়াজ, কাচের বাসনপত্র মেঝেতে পড়ে ভেঙে গেলে যেমন শব্দের সৃষ্টি হয় তেমন শব্দ, দরজা বন্ধ বা খোলার আওয়াজ, কারও হেঁটে যাওয়ার আওয়াজ, হাসির আওয়াজ—
এই রকম নানা রকম শব্দ শোনা যায়। অথচ যেখান থেকে শব্দ আসছিল সেখানে পৌঁছনোর পর সে রকম কিছুরই হদিস পাওয়া যায় না। আপনার যদি পোষা কুকুর বা বিড়াল থাকে তবে আপনি তাদের আচরণ লক্ষ্য করুন। আপনার পোষ্য কুকুরটি কি অদ্ভুত ভাবে কোনও কিছু লক্ষ্য করে চিৎকার-চেঁচামেচি করছে?
আপনার বিড়াল কি প্রতিনিয়ত অদেখা কিছু দেখছে? আপনার পোষা প্রাণী কি ঘরে প্রবেশ করতে ভয় পাচ্ছে?তাদের অস্বাভাবিক আচরণই আপনার ঘর ভুতুড়ে হওয়ার একটি চিহ্ন। কারণ, প্রাণীরা এমনকিছু দেখতে ও শুনতে সক্ষম করে যা মানুষ পারে না।
বাড়িতে অশরীরি আত্মার উপস্থিতি থাকলে আচমকাই বাড়ির পোষ্য যেমন কুকুর, বেড়াল বা টিয়ার মৃত্যু হয়। এটাও প্রচলিত বিশ্বাস। এখানে আরও একটা বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে। ভূত বিশ্বাসীরা দাবি করেন হঠাৎ করেই বিশ্রী গলার স্বর বা অচেনা গন্ধ পেতে পারেন যদি ভূতের অস্তিত্ব থাকে।
ফিসফিস করে কথা বলা, হাসির আওয়াজ শুনতে পারেন। ধরুন কোনও ফুল, তামাক, আতর ইত্যাদির গন্ধ পেতে পারেন, যা আপনার বাড়িতে ব্যবহৃত হয় না। অদ্ভুত গন্ধ পাবেন, যা কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে। আপনি বাড়িতে হঠাত করেই ঠান্ডা বা গরম অনুভূতি পেলে, সন্দেহ বাড়তে পারে।
এত কিছু শোনার পর নতুন বাড়িতে প্রবেশের আগেই কি কি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করবেন বলে ভাবছেন? খোঁজ নিন সেখানে কেউ আগে মারা গিয়েছেন অথবা যে জমিতে বাড়ি করেছেন, সেটি আগে শ্মশান কিংবা কবরখানা ছিল কিনা।
বাড়ির দেওয়ালে নানা ভাবে বিশ্রী রকম আঁচরের দাগ, বা কাঠের আলমারি বা কাঠের কোনও আসবার পত্রে খোদাই করা কোনও বিকৃত ছবি থাকলে ভয় পাবেন না সেটাকে সরিয়ে ফেলুন না হয়!
ভয় পাওয়া একটা দুর্বল মস্তিষ্কের ঘটনা। বিজ্ঞান এর ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারপরেও বিশ্বাস বিশ্বাসের জায়গাতে থেকে গেছে। তবে একে হাতিয়ার করে অনেকে অনৈতিক এবং অসামাজিক কাজকর্ম করার চেষ্টা করেছেন সেটাকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। ভূত আছে কি না জানি না, কিন্তু ভূতের ভয় তো আছে।
আরো পড়ুন- Hunger Pangs : খিদের জ্বালা বড় জ্বালা! কেউ বা পেল প্রচুর ,আবার কেউ খেলো না মোটেই!
সব মানুষের মধ্যেই সেই ভয় আছে। আর পুরনো বাড়িতে কড়িবর্গা, বিশাল গোলাকৃতি থাম, খড়খড়ির জানালা আর চওড়া দেওয়ালের স্থাপত্য, একটু গা-ছমছম ব্যাপার থাকবেই। যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্করা সর্বদাই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ভূতের অস্তিত্বে।
আরো পড়ুন- Nupur foot jewelry : পায়ে নুপুর পরা হয় কেন? এমনকি নুপুর পরলে পিঠের ব্যথা নাকি কমে যায়?
তারা বার বার বলেছেন, ভূত যে রয়েছে, তার প্রমাণ কোথায়? এর উত্তরে ভূতবাদীরা পাল্টা প্রশ্ন করেছেন সে যে নেই, তার প্রমাণটাই বা কই? ফলে বিশ্বাস আর যুক্তি একে অন্যের সঙ্গে রেললাইনের দুটো প্রান্ত ধরে হাঁটতে থাকবে। মাঝখান দিয়ে বয়ে যাবে ঘটনা। এবার সিদ্ধান্ত আপনার, মন না মাথা কাকে প্রাধান্য দেবেন বলুন দেখি?
আরো পড়ুন- Women : নারীর রূপ যত বেশি সে তত বেশি অহংকারী! এটা কি শুধু নারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ?
Breaking ভারত অবৈজ্ঞানিক কোনও কিছুকে প্রশ্রয় দেয় না। এই প্রতিবেদনে ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে যা যা বলা হল, সবটাই মানুষের ধারণা আর বিশ্বাসের ওপর করা সার্ভে থেকে পাওয়া। যদি কোন ঘটনা বা ব্যক্তির সঙ্গে মিল পাওয়া যায় তার জন্য ব্রেকিং ভারত কোনোভাবেই দায়ী নয়।