Breaking Bharat: শিক্ষা জগতে বড় পরিবর্তন, ডিজিটাল ভারতে সত্যি কি বদলে যাবে অতীতের পড়াশোনা? কতটা নিশ্চিত শিশুদের আগামী শিক্ষা? (Future education of children)
ছোট থেকে বড় হওয়া যে কথাগুলো শুনে তার মধ্যে অন্যতম, “মন দিয়ে লেখাপড়া করে যেই জন, বড় হয়ে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সেই জন”। ঘোড়া চড়া যাবে কিনা সেটা বলা মুশকিল তবে গাড়ি চড়তে গেলে অবশ্যই পড়াশোনা জানা দরকার। কারণ শিক্ষা ছাড়া শুধু কোন যানবাহনে চড়া তো দূরের কথা, নিজে একপাও চলাচল করতে পারবেন না এই চরাচরে।
তাই শিক্ষিত হতে হবে সকলকে। এই শিক্ষা দু ভাগে বিভক্ত। এর দুটো দিক আপনাকে মানিয়ে গুছিয়ে চলতে হবে। অর্থাৎ নম্বর স্কোর করে ভালো রেজাল্ট করতে হবে, আবার যে শিক্ষা ভবিষ্যৎ কে আরো সুন্দর করে তুলবে জীবনে সুযোগ এনে দেবে তাকেও মাথার মধ্যে প্রবেশ করাতে হবে। হাতে-কলমে শিক্ষা এখন অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর, তাই তাকেও রক্ত করতে হবে বৈকি!
পৃথিবী বদলে যাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদল আসছে আমাদের নিত্য নৈমিত্তিক জীবনযাপনে। ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত মোবাইল বা স্মার্টফোন ছাড়া চলে না কারোরই। আজকাল তো বাড়িতে মোবাইল নিয়ে বাচ্চা খেলা করলে বাড়ির পোষা কুকুর বা বিড়াল সেই মোবাইলের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে।
এতেই বোঝা যায় প্রযুক্তির কি মহিমা! সে যাই হোক প্রযুক্তির প্রভাব যে শিক্ষাক্ষেত্রেও পড়েছে সেটার নতুন করে বলার কিছু নয়। আর এই কাজকে ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছে করোনাভাইরাস। শুধুমাত্র দোষারোপ করলে তো হবে না ভালো দিক নিশ্চয়ই আছে।
মজাক ছাড়া কথাটা বললাম বটে, কিন্তু হ্যাঁ করোনা আমাদের প্রত্যেকের জীবনের একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে দিয়েছে। এখন মনে হয় যেন করোনা পূর্ববর্তী সময় আর করোনা পরবর্তী সময় দুটো আলাদা পৃথিবী। এই ভাইরাস আমাদের বুঝিয়েছিল আইসোলেশনে থাকার প্রয়োজনীয়তা।
আর একা থাকলে একলা হওয়া যায় না তার প্রমাণ দিয়েছে মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা। আগে যাকে অনেকেই মনে করতেন সময় নষ্টের জিনিস , একটা ভাইরাস তার সর্বোচ্চ গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়ে গেছে মানুষকে। প্রতিবছর রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যাও।
২০২৫ সালের মধ্যেই আশা করা যায়, ভারতের ৫৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শুরু করবেন। করোনা ভাইরাস প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় দিককে তুলে ধরেছে শিক্ষা ক্ষেত্রে আর যথেষ্ট সফলতার সঙ্গে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। গৃহবন্ধু শিক্ষা ব্যবস্থা হাতের মুঠোয় এসেছে মুঠোফোনে ডিজিটাল ভাবনার মধ্যে দিয়ে।
ভারতের শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবস্থাপনা:
অনলাইন ক্লাস শব্দটা নতুন ভাবে সংযোজিত হয়েছে পৃথিবীর সভ্যতার মানচিত্রে। শুধু পড়ুয়া নয় শিক্ষকদেরও শিখতে হয়েছে অনেক কিছু। গুগল মিট, জুম, মাইক্রোসফট টিমস- এর মত বহু অ্যাপ্লিকেশন। শুধু অনলাইন পড়াশোনা (Online education) না, অনলাইন অ্যাডমিশন, অনলাইন প্রজেক্ট,
অনলাইন প্রেজেন্টেশন, অনলাইন পরীক্ষা এমনকি শিক্ষক দিবসের দিনের অনুষ্ঠানটা পর্যন্ত সারতে হয়েছিল অনলাইনেই। শুধু এটুকুই নয়, এবার ভারতের শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবস্থাপনা আরো কিছু এমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাতে চলেছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে। যা, এর আগে কল্পনাও করা যেত না।
আপনি ভাবতে পারেন ২০২০ সাল থেকে কত পরিবর্তন হয়েছে আমাদের সামাজিক জীবনে। তার প্রভাব শিক্ষাঙ্গনে পড়বেনা তাও কি হয়? ২০২০ থেকে ভারতের অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা (Online education system) একটা অন্য উচ্চতায় পৌঁছানো শুরু করেছে। যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এর আগে মাত্র ২০ শতাংশ ডিগ্রি কোর্স অনলাইনে পড়াত, তারাও ধীরে ধীরে অনলাইনের আলাদা বিভাগ তৈরি করছে।
বিভিন্ন ই-লার্নিং ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলগুলি ভালো কাজ করতে শুরু করেছে। বহু টেকনোলজি নির্ভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি অনলাইনে নিত্যনতুন ডিগ্রী কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স চালানো শুরু করেছে। ম্যানেজমেন্ট, কথোপকথনমূলক শিক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিভিন্ন রকমের কোর্সে ছেয়ে যাচ্ছে গোটা ভারত।
আরো পড়ুন- People : আজকের দিনে ভাল মানুষের বড় অভাব, সৎপথে চলতে বড়ই কষ্ট হয়! কি করবেন ?
যারা এতদিন ইউটিউবকে শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতো, তারাও ইউটিউবের মাধ্যমে নতুন কিছু শেখা শুরু করছে। কোন খারাপ দিক নয় সব সময় ভালো তাকে তুলে আনাটাই আমাদের সকলের মিলিত উদ্দেশ্য হওয়া দরকার। আর তাই আগামী প্রজন্মের কাছে সবথেকে ভালো জিনিসটা পৌঁছে দিতে ব্যবহার করা হবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটিকে।
আরো পড়ুন- cake business : বাড়িতে কেক বানিয়ে দু মাসেই হয়ে যান লাখপতি! নেশাকে পেশা বানান সহজেই
বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সাধারণভাবে হাতে লিখে অথবা ভিডিও তৈরি করে যে সমস্ত বিষয়গুলি বোঝানো সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে কাজে লাগবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। মাথায় রাখতে হবে কোন কাজই এক চান্স পেয়ে সহজেই হয়ে যায় না।
আরো পড়ুন- Game addiction : সর্বনাশা গেমের নেশা আপনাকে সন্তানের থেকে দূরে সরাচ্ছে না তো? সতর্ক হোন!
কঠিন পরিশ্রম দরকার। ভারত সরকারের তরফ থেকেও নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে অনলাইন এবং ইন্টারনেট-নির্ভর শিক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন কিছু আরো আকর্ষণীয় তৈরি করার পরিকল্পনা চলছে।
আরো পড়ুন- Uttam Kumar : মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবনের শেষ দৃশ্যর নাটকীয় মুহূর্ত! কেমন ছিল?
সাবেকি শিক্ষাব্যবস্থা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর নতুন প্রজন্মের শিক্ষাব্যবস্থার মেলবন্ধনে একটি নতুন ধরনের অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা জন্ম নেবে যেটি শুধুমাত্র কোন পড়ুয়াকে পড়াবে না, বরং তার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষকরা একটি ছাত্রকে শেখাতে পারবেন, কী করে নিজে একজন শিক্ষক হতে হয়, কী করে অন্যকে শেখাতে হয়। মানুষ গড়ার কারিগররা তৈরি করবেন আগামীকে প্রযুক্তির কারিগরি বিদ্যা দিয়ে, এটাই এখন নতুন ভারতের প্রধান লক্ষ্য।