Breaking Bharat: পড়াশোনা শেষ করতে কতদিন সময় লাগে আপনার? বিদেশের সঙ্গে এদেশের তফাৎ কি এখানেও?
মন দিয়ে লেখাপড়া করে বড় হওয়ার স্বপ্ন সকলের মধ্যেই থাকে। কিন্তু ভারতের ছাত্রছাত্রীরা সবসময়ই একটু পিছিয়ে আছে বলে মনে করা হয়। এটা শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে বিচার করবেন না। কারণ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মেধাবী ছাত্রী বা ছাত্রদের তালিকায় ভারতীয়দের নাম সব থেকে বেশি করে পাবেন। আমরা যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলছি সেটা হলো পড়াশুনা শেষ করার সময় সীমা।
মোটামুটি ভাবে ভারতীয় পড়াশোনার প্রেক্ষিতে একজন ছাত্রী বা ছাত্রীর মাস্টার ডিগ্রী কমপ্লিট করতে প্রায় ২১ বছর মতো লেগে যায়। এবার ভেবে দেখুন শুধুমাত্র পড়াশোনা করেই কাটিয়ে দেন তাহলে বাকি কাজ গুলো কখন করবেন? বিদেশে এই গোটা বিষয়টা সম্পন্ন হয়ে যায় ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।
মাস্টার বা প্রফেসর হয়ে যাওয়ার সুযোগ?
এই গোটা বিষয়টা বুঝতে গেলে সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রকের নীতি নির্ধারকদের তৈরি করা নিয়মের দিকে চোখ রাখতে হবে। এখানে মোটামুটি নার্সারি থেকে মাস্টার ডিগ্রী পর্যন্ত ডবল প্রমোশনের কোন জায়গা স্কুলের শিক্ষায় নেই। কিন্তু উন্নত দেশগুলোতে এই জায়গাটা একটু অন্যরকম।
অর্থাৎ কোনো পড়ুয়া যদি সরাসরি SSC exam এর জন্য নাম নথিভূক্ত করতে চায়, সেক্ষেত্রে অভিভাবকের স্কুলে একটা অ্যাপ্লিকেশন করতে হয়। আসলে বয়স নয় মেধার মূল্যায়ন হয় উন্নত দেশে , আর যেটা ভারতবর্ষে সম্ভব নয়। আর ঠিক এই কারণেই অল্প বয়সে মাস্টার বা প্রফেসর হয়ে যাওয়ার সুযোগ বিদেশি পড়াশোনা করে যতটা সম্ভব, এখানে ততটাই অসম্ভব।
পাশাপাশি পড়াশোনা সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিগত দিক বা ফ্যাশন জায়গা গুলোকে অনুসন্ধান করে তাকে অনুধাবন করার সুযোগ পড়ুয়ারা সমানভাবে পেয়ে থাকেন। আমি একটা বাংলার উদাহরণ দিয়ে বোঝালে আপনি বুঝতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা নাচ নিয়ে বা গান নিয়ে পড়াশোনা করতে চান।
কিন্তু কোন শিক্ষার্থী যদি ভালো নৃত্যশিল্পী হন তাহলেও দেখবেন তার ফিফ্থ ইয়ারের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য একটা ন্যূনতম বয়সের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে তার যোগ্যতার মাপকাঠি কিন্তু তার প্রতিভা হয় না। এই সিস্টেমটা ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় সর্বত্র ছড়িয়ে আছে আর যার ফল ভুগতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের অর্থাৎ আগামী প্রজন্মকে।
সমাজব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষার মানদন্ড:
প্রথমেই মনে রাখতে হবে শিক্ষা মানুষকে শিক্ষিত করবে ডিগ্রির প্রয়োজনীয়তা ঠিক ততটাই যতটা ন্যূনতম উপার্জনের প্রয়োজন জীবন বাঁচার জন্য। ক্লাস সিক্সে পড়া একটি ছেলে বা মেয়ে হয়তো ক্লাস এইটের অংক করাতে পারে।
আরো পড়ুন – অভিনয় না করেও বলিউডের মালাইকা আরোরা কি করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করে?
কিন্তু সমাজব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষার মানদন্ড এমন ভাবেই রাখা হয়েছে যে কোনোভাবেই তাকে ডবল প্রমোশন দিয়ে ক্লাস সিক্স থেকে ক্লাস এইটে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এইখানেই সমস্যাটা তৈরি হয়ে আছে। আপনাকে বুঝতে হবে মেধার গুরুত্ব কখনোই বয়সের বিচার দিয়ে হয় না।
আরো পড়ুন – ডাক্তারের ব্যবহার কি রোগীর সুস্থতার কারণ হতে পারে? ডাক্তার আমাদের কিভাবে সাহায্য করে?
এই পৃথিবীর বুকে এরকম অনেক প্রতিভা রয়েছে যারা শুধুমাত্র ন্যূনতম বয়সের যোগ্যতা টপকাতে পারিনি বলে অনেক বড় বড় জায়গায় গিয়ে নিজের কীর্তি স্থাপন করার সুযোগই পায়নি। স্কুলের সিলেবাসেও এই একই ঘটনা চোখে পড়ে। ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় যে গতানুগতিক পাঠক্রম বাইরে সেটা একেবারেই নেই।
আরো পড়ুন – আপনি কি যখন তখন ভয় পান? গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায় কি?
তাই বলতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি যে এত বেশি সংখ্যায় ভারত থেকে বিদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা একদিকে যেমন আনন্দের ঠিক তেমনি কোথাও গিয়ে কষ্টের জন্ম দেয়। এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এতটাই খারাপ দশা যে আমাদের প্রতিভা বিদেশে গিয়ে নিজেদের পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে ।আর কবে শিখব আমরা?