Breaking Bharat: মন খারাপ? কোনও কিছুই ভালো লাগছে না? দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে? বারবার টেনশন করা, কোন কিছুতেই শান্তি না পাওয়া, সবসময় অস্থির লাগা, মেজাজ বিগড়ে থাকা – এগুলোই প্রাথমিক লক্ষণ। এসব থেকে সত্যিই কি মুক্তি পাওয়া যায়? যত বেশি করে দুশ্চিন্তা আসে তত বেশি করে খারাপ বা নিষিদ্ধতার প্রতি আকৃষ্ট হই আমরা। তাহলে উপায়?
জীবন আসে সমস্যা নিয়ে। সমস্যা ছাড়া কারো জীবন এগোতে পারে না। তাই বলে সমস্যায় কাবু হয়ে হেরে যাবেন এটাও তো হতে পারে না, তাই না? গোটা বিষয়টাই হচ্ছে সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করার ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল। আপনি কী ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন সেটা ইমপর্টেন্ট।
ইদানিং খালি একটা শব্দ আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে যেটা হল ডিপ্রেশন (Depression associated with life)। আমাদের একবার দুই প্রজন্ম আগের মানুষের কথা ভাবুন তো? তারা কিন্তু চিন্তা মুক্ত ছিলেন না কিন্তু ডিপ্রেশনে ছিলেন এমন কথা শুনেছেন কি? আপনি বলতেই পারেন যত সময় যাচ্ছে তত চিন্তা ভাবনার দৃষ্টিকোণ বদলাচ্ছে।
যত বেশি দুশ্চিন্তা তত বেশি নিষিদ্ধতার প্রতি আকৃষ্ট:
এটা একেবারে সঠিক বলেছেন আমরা আপনারই মতামতটি সমর্থন করি। কিন্তু কোনও কিছুই তো জীবনের ঊর্ধ্বে হতে পারে না তাই না? অনেক সময় ডিপ্রেশনে যে চলে যাচ্ছেন আপনি সেটা বুঝতেও পারেন না। আসলে একাধিক কারণ আছে যেগুলোকে গভীরভাবে অনুধাবন করার প্রয়োজন।
চিন্তা প্রতিটা মানুষের আছে। শুধু মানুষের কেন জীবজগতের প্রত্যেকের চিন্তা আছে। চিন্তা মুক্ত কেউই নয়। কিন্তু চিন্তা দুশ্চিন্তার মধ্যে খুব সূক্ষ্ম একটা পার্থক্য আছে। যেটা আমাদের মাঝেমধ্যেই অন্য পথের দিকে ঠেলে দেয়। যত বেশি করে দুশ্চিন্তা আসে তত বেশি করে খারাপ বা নিষিদ্ধতার প্রতি আকৃষ্ট হই আমরা।
মন খারাপ থাকা থেকে দুশ্চিন্তা – টেনশন:
এরপর বাড়তি থাকে অবসাদ আর সেখান থেকে অন্ধকারে তলিয়ে যাবার রাস্তা, ক্রমাগত প্রশস্ত হতে থাকে। ধরা যাক আপনি কোন কিছু পাবেন বলে ভেবেছিলেন কিন্তু সেটা পেলেন না। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আপনার খারাপ লাগবে আর সেটার ওপর যদি আরো পাঁচটা জিনিস নির্ভর করে থাকে তাহলে আপনার চিন্তা বাড়বে।
এবার ধরুন এই সব কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এমন কোন টেনশন যেটা প্রতি মুহূর্তে আপনার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, তাহলে সেটা হয়ে গেল দুশ্চিন্তা। ‘মন খারাপ থাকা থেকে দুশ্চিন্তা’ হওয়া (Anxiety from being upset) পর্যন্ত যতগুলো স্টেজের মধ্যে দিয়ে মস্তিষ্ককে যেতে হয় তাতে আপনার মানসিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে প্রতিমুহূর্তে ।
ক্রমাগত দুশ্চিন্তা আপনার আয়ু ধীরে ধীরে কমতে থাকবে:
এটা হয়তো বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না। কিন্তু এটা চলতে থাকলে একটা সময় পর দেখবেন খুশির খবরেও খুশি হতে পারছেন না। মনে হচ্ছে না এটার এমনকি আমার তো আরো বেশি খুশির খবর পাওয়ার কথা ছিল। আসলে নিজের জীবনটাকে কিভাবে চালাবেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
কিন্তু ক্রমাগত যদি তার বিরূপ প্রভাব মাথায় পড়তে থাকে তাহলে তো পাগল হয়ে যেতে হবে একদিন। আপনি জানেন গবেষকরা বলছেন ‘ক্রমাগত দুশ্চিন্তা‘ করতে থাকলে আপনার আয়ু ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটা অনিশ্চয়তা থেকে এই সব কিছু শুরু হয়।
বিষণ্ণতা মানবদেহে ট্রিগার পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে:
সেটা আর্থিক হোক বা সামাজিক সম্পর্কের হোক বা ক্যারিয়ারের। যেকোনো ধরনের সমস্যার সূত্রপাত একটা অনিশ্চয়তা, অর্থাৎ যেখানে আপনি নিজেকে সুরক্ষিত মনে করতে বা ভাবতে পারছেন না। চিকিৎসকরা বলছেন অতিরিক্ত মাত্রায় এবং এবং দীর্ঘদিনের বিষণ্ণতা মানবদেহে ট্রিগার পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে। এখনই বুঝতে পারছেন কেসটা কোন দিকে বাঁক নিচ্ছে।
আরো পড়ুন – Makeup : অনুষ্ঠান ছিল? মেকআপ তুলতে ইচ্ছে করছে না ? জানেন কত বড় ক্ষতি করছেন?
আগেই বলেছিলাম এই সমস্ত ক্ষেত্রে একটা খারাপ দিকে চলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। সেটার উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সিগারেট ও অ্যালকোহলে আসক্তি। এটা থেকেই প্রমাণিত , অতিরিক্ত বিষণ্ণতা মানুষকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে। বাইরে থেকে চুপ করে বোঝা যায় না আপনি ধীরে ধীরে মানসিকভাবে দুশ্চিন্তার কবলে পড়ে যাচ্ছেন কিনা (Sleepless at night with worry)।
বারবার টেনশন, কিছুতেই শান্তি না পাওয়া, সবসময় অস্থির?
কিন্তু বারবার টেনশন করা, কোন কিছুতেই শান্তি না পাওয়া, সবসময় অস্থির লাগা, মেজাজ বিগড়ে থাকা – এগুলোই প্রাথমিক লক্ষণ। এসব থেকে সত্যিই কি মুক্তি পাওয়া যায়? একটু মন খুলে হাসুন তো, দেখি একবার সবাই মিলে চেষ্টা করে।
প্রিয় বন্ধু বা প্রিয় মানুষের সঙ্গে নিজের কথা শেয়ার করুন , একা একা থাকবেন না। কাজে অনিশ্চয়তা প্রত্যেকের জীবনে কখনো না কখনো আসে সেটা নিয়ে বসে থেকে ,এক্ষুনি পৃথিবী শেষ হয়ে গেল এই ধরনের ভাবনা ঠিক নয়। আপনাকে মনে করতে হবে জীবন তো একটাই, তাহলে কেন নিজের প্রতি অবহেলা করবেন?
আরো পড়ুন – Mosquitoes : বাড়ির চারপাশে মশাদের উৎপাত? ‘মশার উপদ্রব’ থেকে বাঁচতে অবশ্যই এই ব্যবস্থা নিন
বাড়ির বাইরের চোখ মেলে তাকিয়ে দেখুন প্রত্যেকে সমস্যায় আছি আর কেউই সুখী নয়। প্রতিটা বাড়িতে প্রতিটা পরিবারে প্রতিটা আবাসনে কিছু না কিছু সমস্যা লেগেই আছে আর এর কোনও শেষ নেই। তবু দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এভাবেই তো পৃথিবীতে মানুষ বেঁচে আছে।
আরো পড়ুন – ননদ আর বৌদির সম্পর্ক! দাদা বৌদির মান অভিমানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ননদ
আপনার থেকে ভালো অবস্থায় যেমন মানুষ আছেন খারাপ অবস্থাতেও তো আছেন। চিন্তার সময় কথাগুলো জ্ঞানের মত শোনায়, আমরা জানি। কিন্তু রবি ঠাকুর বলে গেছেন “সত্যরে লহ সহজে”। আপনার মুখে একটা হালকা হাসি অনেকগুলো মানুষকে ভালো রাখতে পারে। আর দিনের শেষে, ভালো রাখার ইচ্ছে গুলোই ভালো থাকাকে বাঁচিয়ে রাখে।