Breaking Bharat: কুইন অফ হিলস বা পাহাড়ের রানি মানেই একটাই নাম দার্জিলিং (Darjeeling)! কেমন আছে শৈল শহর?
আহা সুন্দর যে কতরকমের হতে পারে তা বোধহয় প্রকৃতিকে না দেখলে বা চিনলে জানা যায় না। একদিকে যেমন নীল আকাশ তেমনই অন্য দিকে নীল সমুদ্র। পাহাড়ের ডাক অস্বীকার করার সামর্থ্য কার আছে? তবে হ্যাঁ সেই ডাকে সাড়া দিতে পকেটের সামর্থ্য লাগে বটে।
সাদা চাদরে ঢাকা , কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য চোখ বন্ধ করে একবার দেখবেন নাকি? গল্পে বা সিনেমায় যাই লেখা হোক, নিজের চোখে না দেখলে শিহরণ যে অনুভূত হবে না। দার্জিলিং মানেই যখন তখন তুষারপাত, ফলে ডুয়ার্সেও প্রবল শীতের আমেজ। সকাল থেকেই কুয়াশায় ঢাকা বহু এলাকা। কনকনে ঠান্ডা অনুভূতি আর এক কাপ স্পেশাল চা! আহা (best time to visit darjeeling)!
দার্জিলিং কিসের জন্য বিখ্যাত (Darjeeling):
প্রকৃতি প্রেমিক মানুষ হিসেবে যদি আপনার পরিচয় নাও থাকে তাও দার্জিলিং পৌঁছে গেলে নিজের অন্য বৈশিষ্ট্য উদ্ঘাটন করবেন আপনি। কারণ আপনি আছেন দার্জিলিং- এ , পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ শৈল শহর হওয়ায় শৈল শহরের রানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে এই স্থান।
সমুদ্র পৃষ্ঠ ৬৭০০ ফুট উচ্চতায় এই শহর অবস্থিত। দার্জিলিং জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ব্রিটিশ রাজত্বের সময় থেকে। পূর্বে দার্জিলিং ছিল প্রাচীন গোর্খা রাজধানী। পরবর্তীকালে সিকিমের রাজা দার্জিলিং উপহার হিসেবে ব্রিটিশদের দেন। এখানকার বহু স্থান পর্যটকদের মুগ্ধ করে তুলেছে।
দার্জিলিং দর্শনীয় স্থান (visit darjeeling):
মন ভালো করা মরসুমে দার্জিলিং আপনার আমার প্রিয় স্থান হয়েছে স্বভাবেই। ধুলোধোঁয়া মাখা নগরের বাসিন্দাদের কাছে দার্জিলিং একটি প্রিয় বিশ্রামের স্থান। ভ্রমণ প্রিয় মানুষ, ট্রেকার, পক্ষিবিজ্ঞানী, চিত্রগ্রাহক, উদ্ভিদবিজ্ঞানী কিংবা শিল্পী সকলের কাছেই দার্জিলিং এমন একটা বেড়ানোর জায়গা, যা তাদের স্মৃতিতে অক্ষয় হয়ে থাকে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৭১০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত দার্জিলিঙের ম্যাল থেকে তুষারধবল কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য বিস্মিত করে। রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিনে সক্কাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকে সপরিবার কাঞ্চনজঙ্ঘা। দার্জিলিং অঞ্চলের শীর্ষতম স্থান (৮৪৮২ ফুট), শহর থেকে ১১ কিমি দূরে টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয়ের স্মৃতি ভোলার নয়।
সিনেমায় বাংলার সৌন্দর্য বোঝাতে বারবার নাম আসে দার্জিলিং এর। পাহার চড়ার নেশা যাদের, দার্জিলিং তাদের বড্ড প্রিয় (Darjeeling Tourism)। আর ভীষণ আকর্ষণীয় ২৯৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত টাইগার হিল। এটি দার্জিলিং থেকে ১১ কিমি দূরে অবস্থিত।
এই স্থান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য বিস্তারিতভাবে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সকালে যখন সূর্যোদয় হয়, ঠিক সেই সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখর আলোকিত হয়ে এটির সৌন্দর্যকে বহু গুনে বাড়িয়ে দেয়। মনে হয় হ্যাঁ এই তো আছে স্বর্গ।
শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা (Kanchenjunga) নয় দার্জিলিং মানে আরও অনেক কিছু। বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই দার্জিলিং কে ঢেলে সাজাবার পরিকল্পনা করেছেন। তৈরি হয়েছে নতুন ক্যাফে হাউস। যেখানে আড্ডা, গান আর গল্প সঙ্গে দার্জিলিং এর নৈসর্গিক সৌন্দর্য। দার্জিলিংয়ের আরেকটি সুন্দরতম স্থান রক গাডেন।
আরো পড়ুন- Bicycle : সাইকেল চালাতে পারলেই কেল্লাফতে! মিলবে রোগ থেকে মুক্তি?
দার্জিলিং থেকে ১০ কিমি দূরে অবস্থিত এই স্থান। পুরো জায়গা জুড়ে বিভিন্ন স্তরে পাথরের সমাহার থাকায় এই স্থানের নামকরণ করা হয়েছে রক গাডেন। পাহাড়ের কোলঘেঁষে রয়েছে সুন্দর জলপ্রপাত। দার্জিলিংয়ের দ্বিতীয় সবচেয়ে পুরনো চা বাগান হল হ্যাপি ভ্যালি চা বাগান।
আরো পড়ুন- Sundarbans forest : সুন্দরবনের জঙ্গল! সুন্দরবনের বন সুন্দরী কেন বিখ্যাত জানেন?
১৮৫৪ সালে হ্যাপি ভ্যালি চা বাগান চালু হয়। দার্জিলিং শহরের ৩ কিলোমিটার দূরে এই চা বাগানটি অবস্থিত। দেড় হাজারেরও বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী এখানে চা বাগানের কাজে নিযুক্ত থাকে। ২০০৮ সালে হ্যাপি ভ্যালি চা বাগানের হ্যান্ড-রোলড চা যুক্তরাজ্যের হ্যারোডসে বিক্রির জন্য নির্বাচিত হয়।
আরো পড়ুন- Urine infection : ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ! প্রস্রাবে জ্বালা ভাব? ইউরিন ইনফেকশন নয় তো?
ভ্রমণকেন্দ্র ছাড়া ও এখানকার উল্লেখযোগ্য বিষয় হল পৃথিবী বিখ্যাত টয়ট্রেন। যা দেখার জন্য বহু পর্যটক এসে উপস্থিত হয়। আকাশপথে এখানকার কাছের এয়ারপোর্ট বাগডোগরা। শিলিগুড়ি থেকে নিয়মিত বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে। নিউ জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি এখানকার নিকটস্থ রেল-স্টেশন। যান একবার ঘুরেই আসুন।