Breaking Bharat: আপনি কি জানেন আমেরিকা ছাড়ার জন্য হিড়িক পড়ে গেছে? হঠাৎ করে কেন এমন কান্ড? ছোটবেলা থেকে আপনি এটা শুনে হয়তো বড় হয়েছেন যে আমেরিকা দেশটাতে সাফল্যের জন্য মানুষ পাড়ি দেয়।
পাড়ার ভালো পড়াশোনা করা দাদা বা দিদিরা বিদেশ যাচ্ছে শুনলেই আপনার চোখের সামনে আমেরিকার নামটাই ভেসে ওঠে। কিন্তু সেই আমেরিকা যদি ছেড়ে দিতে চান নাগরিকরা তাহলে তো প্রশ্ন ওঠে কেন এমন হচ্ছে? (Citizens want to leave America)
আমরা এতটুকু বাড়িয়ে বা কমিয়ে বলছি না সত্যিই দলে দলে ইউরোপে পাড়ি আমেরিকার নাগরিকদের। আমেরিকা ছেড়ে দিয়ে তারা ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নিজেদের বসতি গড়ে তোলা এবং কাজের সন্ধানের চেষ্টা করছেন। বিষয়টা মোটেই হালকা ভাবে নেবেন না তার কারণে নেপথ্যে অনেক কিছু আছে। আজকের এই প্রতিবেদনে সেটাই বিশ্লেষণ করবো আমরা।
আমেরিকা ছাড়ার জন্য হিড়িক কেন?
একটা সময় ছিল যখন ভারত বা বাংলাদেশের মতো উপমহাদেশ থেকে মানুষ কাজের তাগিদে ব্যবসা জমানোর জন্য সোজা আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা হতো। আর এখন সম্পূর্ণ অন্য ছবি সামনে আসছে। একটা সময় ছিল যখন পিছিয়ে পড়া বা উন্নয়নশীল। দেশগুলির একাংশের জনগণের স্বপ্নের ঠিকানা ছিল আমেরিকা।
সেটা পড়াশোনার সূত্রে হোক বা কর্মসূত্রে, এই জায়গায় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করতেন অনেকেই। কিন্তু এখন হঠাৎ করে আমেরিকাবাসীরা মাতৃভূমি ত্যাগ করছেন কেন? এই ব্যাপারে একটু পরিসংখ্যান তুলে ধরলে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।
তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী আমেরিকাবাসীর সংখ্যা সাড়ে ১৫ হাজার থেকে আরো নয় হাজার বেড়ে হয়েছে ২৪ হাজার। পর্তুগালে এই সংখ্যাটি তিন গুণ বেড়ে গত বছর পর্যন্ত ১০ হাজার হয়েছে। স্বপ্নের শহর স্পেনে আমেরিকাবাসীর সংখ্যা ২০ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪ হাজার।
আরো পড়ুন – গদর টু এর সাফল্যের পরও কেন সানিকে শুভেচ্ছা জানান নি অমিতাভ?
২০২২ সালে ডেনমার্কে প্রায় ৫ হাজার জন জন, সুইৎজ়ারল্যান্ডে ৪,৫১৩ জন, আয়ারল্যান্ডে প্রায় চার হাজারের কাছাকাছি মানুষ এবং চেক রিপাবলিকে আড়াইহাজার আমেরিকার নাগরিককে স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি জার্মানি বা ফ্রান্সেও আমেরিকা-বাসীর সংখ্যা বাড়ছে। এই তালিকায় বাদ পড়ে নিব ব্রিটেনও।
আরো পড়ুন – ডেঙ্গি নিয়ে বাড়ছে চিন্তা? কোন কোন নিয়ম মেনে চলতে হবে?
অনেকেই বলছেন আমেরিকার নাগরিকদের ইউরোপের উন্নত চলে যাওয়ার এই যে একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তার জন্য সে দেশের সরকার নিজেই দায়ী। কারণ আগের মত জীবনযাত্রার মান আমেরিকার নাগরিকদের কাছে আর সহজলভ্য নয়। চাহিদা পূরণের জন্য যেভাবে খরচ বাড়ছে তার সঙ্গে তাল মিলানো সম্ভব হচ্ছে না। বাড়ি থেকে শুরু করে জমি সবকিছু দাম বেড়েছে কিন্তু রোজগার বাড়েনি।
আরো পড়ুন – দ্বিতীয় মহাকাশ বন্দর তৈরি করছে ইসরো? কোথায় হচ্ছে সেই বন্দর আর কেনই বা করা হচ্ছে?
ইউরোপের দেশগুলোতে এই খরচ অপেক্ষা কৃত কম। এছাড়া আমেরিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এর জন্য বিশেষভাবে দায়ী। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলে দেশ ছেড়ে চলে যাবেন বলে অনেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবে তা করেও দেখিয়েছিলেন ২০১৬ সালে।
ইতিহাস বলছে বারাক ওবামার আমলে ১১ শতাংশ, ট্রাম্পের আমলে ১৬ শতাংশ আমেরিকান ইউরোপে গিয়ে নিজেদের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। এছাড়াও বর্ণবিদ্বেষ আমেরিকার এক বড় সমস্যা। এই সবকিছুর উপর ভিত্তি করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।