Breaking Bharat : ৩০ গ্রাম ওজনের মাছের দাম ১৮ হাজার টাকা? চোখ কপালে উঠে যাওয়ার মত তথ্য ,তাই না? কোন সেই মাছ ? (Caviar fish) আর কী স্পেশালিটিইবা আছে?
ভালো খেতে কে না ভালোবাসেন! সারাদিন ধরে এত যে পরিশ্রম শুধু তো একটু ভালো খাওয়া আর ভালো থাকার জন্য। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি, তারপর যদি একটু ভালো খাওয়া না হয় তাহলে কি আর চলে ? কিন্তু যে সে বা যেমন তেমন খারাপ হলে পেট ভরলেও মন ভরে না।
তাই এমন খাবার খেতে হবে যাতে স্বাদও মিলবে সাথে পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ হবে। এই তালিকায় সবার আগে নাম আসে মাছের যা খেতেও সুস্বাদু, অন্যদিকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হয় এই প্রাণী। বাঙ্গালীদের কাছে এমনিতেই যে কোন শুভ অনুষ্ঠানে মাংসের আগেই মাছের ডাক পড়ে।
বর্ষায় ইলিশ কেনার হুড়োহুড়ি দেখে বোঝাই যায় ইলিশ মহা মূল্যবান মাছের রাজা। কিন্তু ভাবতে পারেন ৩০ গ্রাম ওজনের কোন মাছের দাম প্রায় ১৮ হাজার টাকা হতে পারে? এটা তো শুরু মাত্র, ওজন বাড়লে দাম বাড়ে চড়চড়িয়ে।
আজ যে মাছ নিয়ে কথা তার নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন বা শোনেননি ।
পৃথিবীতে ক্যাভিয়ার মাছের ডিমের দাম এত বেশি হওয়ার কারণ কী? কী উপাদান আছে, এই ডিমের মধ্যে? যার জন্য এর দাম এত বেশি? আসলে ঠিক মাছ নয় মাছের ডিমের কথা বলতে চাইছি। নাম ক্যাভিয়ার (is caviar fish eggs)। এটি প্রকৃতপক্ষে আ্যসিপেনসারিডি পরিবারের অন্তর্গত স্টার্জন মাছের ডিম। সাধারনত সামান্য নুন মিশিয়ে কাঁচা পরিবেশন করা হয়।
কালো, জলপাই, সবুজ, ধূসর এবং কমলা রঙের দেখতে হয় এগুলিকে। স্টার্জন মাছের এই ডিম গুলো শুধু দুষ্প্রাপ্য নয় মহা মূল্যবানও বটে। বুঝতেই পারছেন কোনওভাবেই এটিকে বাজারজাতও করা সহজ ব্যাপার নয়। বিরল প্রজাতির এই মাছ আর তার থেকে ডিম পেতে হলে খুব স্বাভাবিকভাবেই মাছকে মেরে ফেলা প্রয়োজন (caviar benefits)।
আরো একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় এই ডিম বের করা দরকার । একটু পরিণত হলে সেটি আর খাওয়ার উপযুক্ত হয় না, অন্তত কাঁচা তো একেবারেই পরিবেশন করা যায় না। সাধারণত একটি বেলুজা স্টার্জন পূর্ণবয়স্ক হতে সময় নেয় প্রায় ধরুন পনেরো থেকে কুড়ি বছর।
সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাভিয়ার পেতে হলে আপনাকে বেলুজা স্টার্জন খুঁজতে হবে। কিন্তু চাহিদা যোগানের ভারসাম্য না থাকায় এই মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এত যখন দাম তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন বড়লোকদের খাবার এই মাছ। তবে কি জানেন ইতিহাস ঘেঁটে যারা যাচ্ছে শুধু যে বিত্তবান মানুষেরাই এই মাছ খেতেন তা নয়।
একটা সময় ছিল যখন রাশিয়ার জেলেরা বা মৎস্যজীবীরা নিয়মিত এই মাছ তাদের মেনুতে রাখতেন। ক্যাভিয়ার স্টার্জন প্রজাতির মাছ সে তো আগেই বলেছি কিন্তু আপনি কি জানেন যে এই মাছ প্রায় ২৬ ধরনের প্রজাতির হতে পারে। এদের আয়ু ১০০ বছর পর্যন্ত হয় বলে জানাচ্ছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা।
এই ক্যাভিয়ার মাছের ডিমের যেমন স্বাদ তেমনই এই মাছের ডিমগুলিকে দেখতে অপরূপ। বাজারে বিভিন্ন ধরণের ক্যাভিয়ার পাওয়া যায়। গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে বাড়তে থাকে দাম (caviar fish price)। বাজেট হিসেবে আপনাকে ৮০০০ টাকা থেকে শুরু করতে হবে। মোটামুটি ১৮,০০০ হাজার টাকার মধ্যে ৩০ গ্রাম মতো ক্যাভিয়ার পাবেন। স্টার্জন মাছের মহিলা প্রজাতির দাম সত্যিই বেশ বেশি, বেলুগা ক্যাভিয়ার সবচেয়ে ব্যয় সাপেক্ষ।
প্রথমে এর গুণগত মান সম্পর্কে অর্থাৎ পুষ্টিগুণ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যা়ক তারপর না হয় কীভাবে এই মাছ খেতে পারেন সেই বিষয়ে আলোচনা করা যাবে। ক্যাভিয়ারে প্রচুর ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ই রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এখানেই শেষ নয়, এতে জিঙ্ক,
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন খুব বেশি পরিমাণে থাকায় শরীরে খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ হয়। ক্যাভিয়ার নামের এই সামুদ্রিক মাছের ডিম পৃথিবীর অন্যতম দামী খাবার বটে (Caviar is the egg of this marine fish)। বিদেশের মাটিতে ২৫০ গ্রাম ক্যাভিয়ার খেতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে প্রায় ১,৮৭৫ ইউরো ।
আরো পড়ুন- Brain death : ৯ মাসের অন্তঃসত্তার ব্রেন ডেথ, সুস্থভাবে জন্ম নিল যমজ ফুটফুটে দুই সন্তান!
এবার ভারতীয় মুদ্রায় টাকাটা হিসেব করে নিন। এতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও রয়েছে যা শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম ঠিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা নেয়।
আরো পড়ুন- Zion Clark : অদম্য শক্তি থেকেই পা না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব জয় করলেন জিওন ক্লার্ক? কীভাবে?
খাবার ব্যাপারটা যে যার নিজের পছন্দের। যেভাবে খেতে ভালো লাগবে সেভাবেই খেতে পারেন এই ডিম। আমরা কিছু আইডিয়া দিতে পারি যেমন, ক্যাভিয়ার (Caviar fish), টোস্ট বা বিস্কুট দিয়ে পরিবেশন করা যেতে পারে। অথবা ধরুন আপনি যদি চান তবে ক্রিম, কাটা পেঁয়াজ দিয়ে গার্নিশ করার জন্য ব্যবহার করবেন সেটাও চলবে।
আরো পড়ুন- Govindamma: ভাবতে পারছেন ৭৭ বছর ধরে শুধু জলেই কাটালেন এক বৃদ্ধা মহিলা? নাম গোবিন্দাম্মা
ডিম যখন, তখন সেদ্ধ হিসেবে খেতে আপত্তি নেই। তবে ঘরের তাপমাত্রায় রাখলে খারাপ হয়ে যাবে ফ্রিজে রাখাই বাঞ্ছনীয়। একবার ট্রাই করে দেখতেই পারেন ,জানাতে ভুলবেন না কেমন লাগল।