Breaking Bharat: ‘বিরিয়ানি’ নামটা শুনলেই ৮ থেকে ৮০ সকলের মনটাই চনমন হয়ে ওঠে। বাঙালির মনে যে বিরিয়ানি রাজত্ব করে। বিরিয়ানির সুগন্ধে জিভে জল আসে না এমন জুড়ি মেলা ভার । সুগন্ধি চাল, ঘি, গরম মশলা এবং মাংস মিশিয়ে রান্না করা এই বিশেষ প্রকার খাবার কলকাতার মানুষদের হার্টথ্রব হল কি ভাবে জানেন ? শুধু কলকাতাই বলি কেন , বিরিয়ানির গন্ধ ম ম করছে দাপটের সাথে পুরো ভারতবর্ষে ।
তবে এই সুস্বাদু খাবারের (Delicious food) নিরিখে রয়েছে নানা অজানা ইতিহাস ,যেমন
- কিভাবে এলো এই বিরিয়ানি ?
- কলকাতার বিরিয়ানিতে (Kolkata Biryani) আলুর আভির্ভাব কেই বা ঘটালো ?
- আচ্ছা বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড়ই বা দেওয়া হয় কেন ?
চলুন আমার সাথে এই সব ইতিহাসের পাতাই আজ উল্টে পাল্টে দেখি ।
উর্দু শব্দ বিরিয়ানি যা ফরাসি ভাষা থেকে এসেছে যার অর্থ রোস্ট বা ভেজে নেওয়া। যেহেতু বিরিয়ানি রান্নার (Biryani cooking) আগে সুগন্ধি চাল ঘি দিয়ে ভেজে নেওয়া হয় তাই এই রূপ নামকরণ। যত দিন পার হচ্ছে এর ভিন্নতাও বাড়ছে , তবে বহুল প্রচলিত বিরিয়ানির মধ্যে -কাচ্চি, ঢাকাই, হায়দ্রাবাদি, কলকাতার বিরিয়ানি ইত্যাদি খ্যাতি বেশি । তবে আজ প্রবেশ করবো কলকাতার বিরিয়ানির সফরে –
ইতিহাসের পাতা ঘাটলে জানা যায় যে , কলকাতা বিরিয়ানি লখনউ রীতি থেকে বিকশিত হয়েছিল, যখন আউধের শেষ নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ ১৮৫৬ সালে মতিয়াবরুজের শহরতলিতে কলকাতায় নির্বাসিত হয়েছিলেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত শেফকে নিয়ে এসেছিলেন। কলকাতার দরিদ্র পরিবারগুলির কথা ভেবে বিরিয়ানিতে আলু এবং সিদ্ধ ডিম যোগ করত, যা পরবর্তীকালে কলকাতা বিরিয়ানির একটি বিশেষত্ব হয়ে উঠেছিল।
কলকাতা বিরিয়ানিতে প্রাথমিকভাবে মাংস এবং আলু এবং মাঝে মধ্যে সিদ্ধ ডিম ব্যবহার করা হত। কলকাতা বিরিয়ানিতে আরো একটি ভিন্নতা হল ,এখানকার বিরিয়ানির মশালা অনেক হালকা। বিরিয়ানিতে সাধারণত জায়ফল , লবঙ্গ , এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা, ধনিয়া, পুদিনা পাতা ইত্যাদি মসলা ব্যবহার করার ফলে বেশ অন্যরকম স্বাদ এনে দেয় ।
সর্বোপরি , বিরিয়ানিতে ব্যবহৃত লাল কাপড় (Red cloth used in biryani) এর রহস্য উন্মোচন করতে উঠে আসে যেই কারণটি তা হল, মোগল আমলের রীতি অনুযায়ী খাবার পরিবেশনে লাল কাপড় ব্যবহার করা হত । লাল রং ভালোবাসার প্রতীক । তবে মনে করা হয় আভিজাত্য এবং ঐতিহ্য রক্ষাত্বে লাল কাপড় ব্যবহার চলে আসছে যুগযুগ ধরে।
রায়তা , চাটনি বা স্যালাড সাথে পরিবেশন করা এই বিশেষ প্রকার সুগন্ধি খাবারের সাথে টেক্কা দেবে এমন দুঃসাহস আহার মেলা মুশকিল ।