Breaking Bharat : স্মৃতিগুলি অস্বচ্ছ দর্পণে ঢাকা – বিদ্যুৎ ভৌমিক
কি যে চল্লিশটা বছর ধরে লিখে চলেছি , সবটাই যে সময়ের কাছে স্বপ্ন ফেরি করার মত ! মনের মধ্যে প্রতিনিয়ত অচেনা মুখের আনাগোনা ,চেনাকে খুঁজে চলা সেই থেকে ৷ অস্বচ্ছ চোখ,মুখ শরীর গুলো স্বচ্ছ করার আপ্রাণ চেষ্টা ৷ লেখার ভেতর প্রথাহীন ভাবে সময় কাটানো ! এই যে সেই চলে আসা সময় এবং বর্তমান এই মূহুর্তের বহতা প্রবাহমানতা, তার আড়ালে কত প্রিয়জনযে থেকেও না থাকার মতোই ! এটা একমাত্র এই আমার কাব্যচর্চা”- র হেতু ! লিখতে লিখতে বাস্তবটাকে উপেক্ষা করেছি !
আপত দৃষ্টিতে এইসব ব্যাপার কিভাবে যে উপেক্ষা করেছি,সেটা এই মূহুর্তে আমার কাছে অস্বাভাবিক বলা যাবে কিনা সেটা অবশ্যই আলোচনো সাপেক্ষ !এক একটা সম্পর্ক অনেকটা আমার কাছে এখন প্রাচীন দর্পণে লোকায়ত ঐতিহাসিক ছবি দেখার মত ! এই কবিতা” লেখার নেশায় আমি আমার অনেক প্রিয় জিনিস ত্যাগ করেছি ৷ অথচ সেগুলো ফিরে পাবার ইচ্ছেটুকুও আমার নেই বললেই চলে !
একটা কিছু পেতে হলে অনেক মূল্যবান বস্তুর লোভ ত্যাগ করতে জানতে হয়,আর এটা আমি করতে পেরেছি বলেই দু’ই বাংলা ছাড়িয়ে পৃথিবীর বেশ কয়েকটা দেশের কবিতা পাগল বাঙালী পাঠকরা আমাকে তাঁদের প্রিয় কবিদের তালিকায় মধ্যে রেখেছেন ! এটাই আমার কাছে পরম পাওয়া,যা চেয়েছিলাম সেটাই তো পেয়েছি ! অন্যকিছুর আকর্ষণে কত চেনা মুখ স্মৃতি থেকে বিস্মৃতির মেঘে ঢেকে গেছে !
আরো পড়ুন- এই মোটর বাইকের দাম প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা, কী কী ফিচার রয়েছে এই বাইকে?
মাঝেমধ্যে সেই মেঘ যখন মন থেকে সরে যায় , তখন সেই প্রিয় মুখেরা সেই মূহুর্তে ঝাপ্সা ঝাপ্সা অচেনাই লাগে ! যাই হোক ,এই সুদীর্ঘ সময় ধরে টানা ৩৫ থেকে ৪০ টা বছর আপনারা আমার কবিতা পড়ে চলেছেন এর জন্য আপনাদের সবাইকে এই সুবাদে অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং সতত ভালোবাসা রইল । সবাই ভালো থাকুন এবং সুস্থ ও সুন্দর থাকুন ।বিদ্যুৎ ভৌমিক ১১/০৫/২০১৭ (The Best of Bengali Poetry by Bidyut Bhowmick’s)
ক বি তা অপ্রমেয় এবং বিপরীত সেতু বিদ্যুৎ ভৌমিক
সাধনতীর্থ থেকে পথ তাঁর জীবন ফেরি করার সময় কোন এক ছদ্মবেশী প্রেত গভীরে একা ও একক নষ্ট চরিত্র নিয়ে অপূর্ব শূন্যতায় দাঁড়িয়ে চৈতন্য চর্চা করছিল মনের মধ্যে করিতকর্মা কিছু প্রশ্নের ঝড় প্রাচীন স্থাপত্যকে ধুলোয় মিশিয়ে ঈশ্বর এবং দেবতাদের চ্যালেঞ্জ করলো ,সেও সুযোগ পেলে ভগবান হয়ে যেতো !
আরো পড়ুন- কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি সহ একটি ব্যাতিক্রমী অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা
এই দুনিয়ার দর্পণে দু’ই পক্ষের চাঁদ ডোবে আর ওঠে , স্বদেশের মানচিত্র ছিঁড়ে বৈকালীক ফাল্গুনে পঞ্চশ পেরুনো চ্যানাচুড় বিক্রেতা হাঁক পারে কই-গো নেবেন নাকি গড়ম গড়ম ঘটি গড়ম !ভাগ্যিস সে’সময়ে পৃথিবী ও প্রকৃতির কথাবার্তা বন্ধ ছিল তা-না হলে ধর্ম ষাঁড়ের খোঁয়াড়ে আগুন জ্বলে উঠতো !
এই রাস্তায় অহর্নিশ চোখ বেঁধে ঈশ্বর হেঁটে যান পথের চিন্তা থাকে তাঁর ছায়াশূন্য হবার সময় ! ঘুড়ির সুতোর মাঞ্জা গুটিয়ে নবাবপুত্র যুধিষ্ঠির বিবেক বৈরাগ্য হাই ড্রেনে ফেলে সোনাগাছির বেলা শেষের রোদ্দুর মাখে !ঠিক ওই বিকলাঙ্গ সময়ে পান-বিড়ি-সিগারেটের গুমটি দোকান থেকে চরিত্রহীন দুর্যোধন এক প্যাকেট কন্ডোম কিনে জনতাকে শিক্ষা দেন জন্মনিয়ন্ত্রনের !
আরো পড়ুন- এবার কি মানুষের শরীরেও বার্ড ফ্লু? তাহলে কি এবার ঘুম কাড়বে বার্ড ফ্লু?
সমকৌণিক স্বপ্ন গুলো চেহারা পাল্টে এভাবেই রোজ রাতে ঘুমন্তে দেখা দিলে যাদুঘরের জ্ঞানগর্ভ জ্বলে ওঠে ! কেউ একজন বিজ্ঞ দার্শনিক ঈশ্বরের সমাধি খোঁজে এক বোতল দেশি মদ গলায় ঢেলে !অন্যথায় এখানে প্রাক্তনেরা মনের বিমূর্ত ধ্বংসস্তুপের উপর নির্বাক উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষ ভাগ্যকে ক্রমাগত খিস্তি দিয়ে চলে !
আরো পড়ুন- দেব ও রুক্মিণীর সিনেমা ‘কিশমিশ’ দেখার পর দেবের বাবা কি জানিয়েছিল ?
এই এক হাতে মাটিতে গড়িয়ে দিয়েছি সময় এভাবে চলার মধ্যে হঠাৎ রূপকথার ফুল ফোটে ,এই চলায় পাশাপাশি নাটকীয় দিন-রাত,বৃষ্টি-বাদল ,হাসি ও কান্নার জন্ম কাহিনির কোন তথ্য নেই ! তবু ঈশ্বর অনাবৃষ্টিতে তৃষ্ণার্ত ও একাকীত্ব নিয়ে ভূমিহীন নিমিষেই !
দায়িত্ব নিয়ে সময় তুলে দেব তোর হাতে ,মধ্য বয়সী বিকেল অবশেষে না ভালোবেসে ঘুমিয়ে গেলে দারুণ সর্বনাশে চন্ডাল পাড়ার প্রেত এসে কথা বলে ছবি হয়ে যাওয়া লোকটার সাথে ! কাছের দৃষ্টিতে থমকে দাঁড়ালে বিষণ্ণতা একবুক শোকের অসুখ নিয়ে ইতিহাসের পাতা পোড়ায় বোতম বিহীন যত কিছু আবেগ ও অনুরাগ !
নামী কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক ১৪ বছর ধরে অটো চালাচ্ছেন! কেন জানেন ?
এখানে কোনো তৃতীয় বিশ্ব নেই সময় সেজন্য মূর্তি সেজে মন্ডপে মন্ডপে নিজেকে নিজেই দেবতা বানিয়ে মজা পায় !কি এক কঠিন জ্বালায় ভগবানের অদেখা লিঙ্গ পুড়ে ওঠে ; তবুও তাঁর নির্গমন নলটা রাতের অন্ধকারে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে পুনশ্চ বিজ্ঞ বিবেচকের ছদ্মবেশ নিয়ে !!
লেখনীকাল : ১৩ ই সেপ্টেমবর , ১৯৯৪ স্থান : কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক এর বাসস্থান ছায়ানীড় , শ্রীরামপুর , হুগলী ,মল্লিকপাড়া , ফিরিঙ্গি ডাঙা লেন