Breaking Bharat: ভুতে বিশ্বাস করেন ? কোনওদিন গেছেন ভুতুড়ে কোনও স্টেশনে? বেশি দূরে নয় পশ্চিমবঙ্গেই আছে এমন ঠিকানা, জানেন?
“ভূত আমার পুত পেত্নী আমার ঝি” – এই লাইন ছোট থেকে বড় সবার জানা। যে যাই বলুন নাস্তিক বা আস্তিক, সংস্কারাচ্ছন্ন বা কুসংস্কারে জর্জরিত মানুষ, ভূত এবং ভৌতিক ব্যাপার নিয়ে জানতে আগ্রহী সকলেই। আর ছোটবেলায় পড়া গল্পের বই ভুতের প্রসঙ্গ এলেই নাম আসতো কোনো-না-কোনো ভুতুড়ে স্টেশনের (haunted railway station)।
তেমনই এক স্টেশন হল বেগুনকোদর। যাবেন নাকি?
বেগুনকোদর, পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় একটি গ্রাম (in Begunkodar railway station)। এখানকার রেলস্টেশন লোকের মুখে মুখে পরিচিত তার ভৌতিক কান্ড কারখানার জন্য। গ্রাম হিসেবে পরিচিতির চাইতেও, অধিক পরিচিতি, বেগুনকোদর রেল স্টেশনটির। এই রেলস্টেশনেই অশরীরীদের বিচরন বলে লোক মুখে শোনা যায়। কোনও একটা কথা বাইরে চাউর হলে তার পিছনে থাকে অনেক কাহিনী। এই ক্ষেত্রেই শুরুটা বহু বছর আগে। শোনা যায় কোনও একদিন রেল স্টেশনের রেল লাইনে একজন মহিলা কাটা পড়েন (begunkodar station history in bengali)।
আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা সেটা স্পষ্ট নয়। পরবর্তী সময়ে স্টেশন মাষ্টার রাতের অন্ধকারে ওই মহিলাকে সাদা কাপড় পড়ে ট্রেন লাইনে ঘোরাঘুরি করতে দেখতে পান। আর এই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই স্টেশন মাষ্টার ও তার পরিবারকে কোয়ার্টারে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ব্যাস এর পর থেকেই স্টেশনটি ভুতুড়ে স্টেশন বলে সকলের কাছে পরিচিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে লোকজনের যাতায়াত কমতে থাকে, একপ্রকার পরিতক্ত স্টেশন হয়ে থেকে যায় এটি (begunkodar station ghost story) l
প্রায় চল্লিশ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই স্টেশনটি অন্য যে কোনও রেল স্টেশনের মত স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে সরে যায়। শোনা যায়, পরবর্তী সময়ে গ্রামের বিভিন্ন লোক রাতের দিকে স্টেশনে বিশেষ কারোর উপস্থিতি টের পেয়েছেন। ফলে দুয়ে দুয়ে চার, স্টেশন মাস্টারের ভূত দেখার কাহিনী একটি বিশ্বাসযোগ্যতায় পর্যবসিত হয়। সৃষ্টি হয়, ভূতের ভয় (most haunted railway station)।
বিজ্ঞান যদিও এসব মানে না ।তাই কিছু যুক্তিবাদী কিছু মন বিষয়টি চাক্ষুষ করতে স্টেশনে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখিয়েছিলেন বটে।রাত কাটিয়ে এসেছেন এবং ভূতটুতের কোনও অস্থিত্ব নেই বলেই জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কেন্দ্রীয় সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন স্টেশনটিকে আবার চালু করার জন্য উদ্যোগ নেন। চালুও হয় স্টেশন, তবে ওই অনেকটা হল্ট স্টেশনের মতোই। সন্ধ্যের পর সেখানে কোনো ট্রেন থামে না, কারণ সেই সময় স্টেশনে লোকজন থাকেন না। ভয় যে এখনও রয়ে গেছে। সরকারীভাবেও জনসচেতনতা প্রচার করা হয়েছে, তবু ও সেরকম বিশেষ কোনও পরিবর্তন দেখা যায় নি (haunted railway station of India)।
আরো পড়ুন- আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কোনটি? যাকে ছাড়া আপনি অচল?
আরো পড়ুন- বিস্কুট খেতে কে না ভালোবাসে, কিন্তু খাওয়ার সময় বিস্কুটের বিশেষ বৈশিষ্ট লক্ষ্য করেন কি?
এ নিয়ে যুক্তিবাদী সংস্থার অনেকেই স্টেশনে গিয়ে তাঁদের ধারণা, কিছু সমাজবিরোধী লোকজন, তাঁদের কুকর্ম সাধনের জন্য স্টেশনটিকে ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন রকম কায়দা করে, ভূতের ভয়কে জিইয়ে রাখে, যাতে স্টেশনে জনসমাগমের জন্য, কুকর্ম সাধনে অসুবিধে না হয়।বেগুনকোদর রেল স্টেশনের কোড BKDR। ওখানে যেতে হলে, ট্রেনে যাওয়াই সুবিধে হবে।
আরো পড়ুন- Car tires : গাড়ির টায়ারে কেন বারে বারে হাওয়া দিতে হয় ? নিরেট টায়ার কেন বানানো হয় না?
হাওড়া স্টেশন থেকে চার পাঁচটি ট্রেন, অন্য স্টেশন যাওয়ার পথে বেগুনকোদরে থামে। দূরত্ব প্রায় একশো চল্লিশ কিলোমিটার, ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে। ভূত দেখতে যদি চান তাহলে একবার চলে যান। অবশ্য ভূত আছে কিনা সেই গ্যারান্টি আমরা দিতে পারব না। আমরা কোনও রকম অন্ধবিশ্বাস বা কুসংস্কারকে সমর্থন করি না বা প্রশ্রয় দিই না ।আমরা শুধু বলি “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।”