Breaking Bharat: বাঙালি মানেই বাংলা ছবি দেখতে ভালোবাসেন “বেদের মেয়ে জোৎস্না” দেখেছেন? এমন নামের ছবি কেন মাইল ফলক? এই বেদের মেয়ে জোৎস্না (Beder Meye Josna) ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যে জানেন?
বাস্তবের দুনিয়ায় যা হয়তো সম্ভব নয় সিনেমায় সেটাই সত্যি হয়ে দাঁড়ায়। তাইতো যুগ যুগ ধরে বিনোদন জগতের প্রতি আমাদের এত আগ্রহ। তবে আজকে হিট বা ফ্লপ ছবির কথা নয় বরং এমন একটি ছবির কথা যেটা নিঃসন্দেহে মাইলফলক হয়ে রয়ে গেছে সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে। এমন একটা ছবি যা ভারত এবং বাংলাদেশ কাঁপিয়ে দিয়েছে। “বেদের মেয়ে জোৎস্না” দেখেছেন নিশ্চয়ই? এই ছবির তৎকালীন সময়ে ব্যবসায়িক সাফল্যের নজির দেখলে চোখ কপালে উঠবে আপনার। আজ সেই কথাই জানাবো।
১৯৯১ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল তোজাম্মেল হক বকুল পরিচালিত ”বেদের মেয়ে জোৎস্না” সিনেমাটি (Beder Meye Josna )। মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, অঞ্জু ঘোষ, অনামিকা সাহা। বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এতো বড় হিট বোধহয় আর কোনো ছবি হয়নি। ।
একটা ছবি হিট বা ফ্লপ যাই হোক না কেন তার পেছনে কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকে। যেমন ছবির গল্প নির্দেশনা বা অভিনয় ক্ষমতা। অনেক ক্ষেত্রে আবার ভালো গান থাকার জন্য সিনেমা সুপারহিট হয়। কিন্তু এই ছবি যে ঠিক কী কারনের জন্য হিট হল বা এত সাফল্য পেল সেটা অজানা।
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। দুই বাংলার মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই ছবি। পরে টলিউডেও একই নামের ছবি তৈরি হয়েছিল। মূল গল্প, গান, নায়িকা সবই এক রাখা হয়েছিল। শুধু বাংলাদেশের নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের (Elias Kanchan) পরিবর্তে এপার বাংলায় অভিনয় করেছিলেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (Chiranjit Chakraborty)।
খুব সাধারন একটা গ্রাম্য গল্প যেখানে বেদেনীদের জীবন সঙ্গে রাজা রানীর রূপকথা আর তার সঙ্গে বাঙালি সেন্টিমেন্টের মেলো ড্রামা। এই ছিল মূল উপজীব্য বিষয়। বড়বড় নায়ক নায়িকারা নাক সিঁটকেছিল ছবিটির গল্প শুনে তাতে অভিনয় করতে। ১৯৯১ সালে দাঁড়িয়ে যে ছবিটা তৈরী করতে ৬০ লাখ টাকা লেগেছিল, সেই ছবিটাই প্রযোজকের ঘরে এনে দিয়েছিল ৩২ কোটি টাকা।
আরো পড়ুন- Sunny Leone : সানি লিওনকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছেন তার স্বামী লিড গিটারিস্ট ড্যানিয়েল ওয়েবার
মাসের পর মাস বেশিরভাগ সিনেমাহলই ছিল হাউসফুল। এই সিনেমা দেখতে লোকজন আগের দিন সন্ধে থেকে এসে লাইন দিয়েছে, এমন ঘটনাও দেখা গেছে। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বাংলার শহর-শহরতলী ও গ্রামকে মাতিয়ে রেখেছিল এই ছবিটি। বিস্ময়কর ব্যাপার এটাই যে আজকের এই ডিজিটাল যুগে IMDb রেটিং অনুযায়ী ১০ এর মধ্যে ৭ , ভাবা যায় !
আরো পড়ুন- Dev : বাংলা সিনেমার খোকাবাবু দেব (দীপক অধিকারী) এখন সিনে দুনিয়ার অনুপ্রেরণা?
সেই সময় দাঁড়িয়ে ছবিটিতে মোট ১১টি গান রাখা হয়েছিল। ১০টি গানই পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুলের লেখা। ‘বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে (Beder Meye Josna Amay Kotha Diyeche)’ এবং ‘আমি বন্দি কারাগারে’ (Ami Bondi Karagare) গান দু’টি আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। এমনকি শোনা যায় যে, সেই সময় প্রেমিক-প্রেমিকারা এই গানের কলি ব্যবহার করেই পরস্পরকে প্রেম নিবেদন করতেন।
তাহলেই ভাবুন কতটা মানুষের মনে জায়গা করেছিল এই ছবি। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন ব্যস্ত জীবনে মানুষ একটু শান্তি আর আরাম খোঁজেন বিনোদনের মাধ্যমে। কিন্তু সেই সময়কার জীবনযাত্রা অনুযায়ী এই ছবি কোনও যুক্তিতেই এতটা হিট করতে পারত না। তবু ইতিহাস তৈরি করে ফেলল “বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না“।
আরো পড়ুন- Sunny Leone : পর্নষ্টার তকমা ঝেড়ে সানি লিওনের নারীত্বের পূর্ণতা পাওয়ার কঠিন লড়াই!
ঠাট্টা বা রসিকতার সুরে বললেও চিরঞ্জিতের জীবনের অন্যতম সুপারহিট মুভির মধ্যে এটির নাম সবার আগে আসে। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক।