Breaking Bharat: পড়াশোনা শেষ করার কোনও বয়স হয় কি? মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা দিতে কেন ৩৮ বছর লাগল অটো চালকের? শিক্ষা মানুষকে অনেক বেশি করে সমৃদ্ধ করে। মানুষ ধীরে ধীরে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে সমাজে সর্বক্ষেত্রে তার অবদান রাখতে পারেন। আর পড়াশোনার সঙ্গে শিক্ষার বিষয়টি আমরা অনেকেই গুলিয়ে ফেলি ।
আসলে নম্বর পাওয়া আর জ্ঞান অর্জন করা দুটো সম্পূর্ণ বিপরীত ব্যাপার। কিন্তু একটা ছাড়া আরেকটা ভাবা প্রায় অসম্ভব বলতেই পারেন। পড়াশোনা করে নির্দিষ্ট ডিগ্রি লাভ করতে না পারলে আপনি কোন ভাবেই সমাজের নামী প্রতিষ্ঠিত জায়গায় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পাবেন না। আর সেটা ছাড়া কি আর কোন ভাবে নিজের শিক্ষার পরিচয় দেওয়া সম্ভব, বলুন দেখি?
কেন ৩৮ বছর লাগল অটো চালকের?
এই কথা অন্তর থেকে উপলব্ধি করেছিলেন অটো চালক। আর তার সঙ্গে জুড়েছিল পড়াশোনার প্রতি তার ভালবাসা। তাই ডিগ্রি না পাওয়া বা পড়াশোনা শেষ না করতে পারার আক্ষেপ কিছুতেই ভুলতে পারেননি তিনি। সময় কেটে গেছে অনেকটা কিন্তু ইচ্ছে শক্তিকেই প্রাধান্য দিয়ে ৩৮ বছর পর ইংরেজি পরীক্ষা দিয়ে মাধ্যমিক পাশ না করার আক্ষেপ ঘোচালেন বেঙ্গালুরুর অটোচালক।
যারা বলেন যে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিলে আবার নতুন করে তা শুরু করা মুশকিল, তাঁদের প্রত্যেককে ভুল প্রমাণ করে দিলেন তিনি।
দেখুন এই দুনিয়ায় অনুপ্রেরণার গল্প নেহাত কম নেই। টাকা পয়সা না থাকার কারণে অনেকেই পড়াশোনা শেষ করতে পারেন না। আবার এটাও ঠিক যে একবার পড়াশোনা ছেড়ে কর্ম জগতে প্রবেশ করে গেলে সেখান থেকে সময় বাঁচিয়ে মূল স্রোতে পড়াশোনা করা খুব একটা সহজকাজ হয় না। সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করার পর বাড়ি ফিরে আবার পড়াশোনা করতে বসাও সত্যি সহজ নয় বটে।
আরো পড়ুন – অসুস্থ ব্যক্তি ট্রেন যাত্রায় ঠিক কতটা ছাড় পেতে পারেন, আপনি কি জানেন?
কিন্তু এখানেই ব্যতিক্রম হলেন বেঙ্গালুরুর এক অটোচালক। আজ থেকে প্রায় ৩৮ বছর আগে ১৯৮৫ সালে দশম শ্রেণিতে থাকাকালীন এক প্রকার বাধ্য হয়েই পড়াশোনা ছেড়েছিলেন বেঙ্গালুরুর এক অটোচালক। কিন্তু মন মানতে চাইছিল না। বারবার মন খারাপ হত তার। পড়াশোনা করতে না পারার আক্ষেপ প্রতি মুহূর্তে কাজ করত তাঁদের মনে।
আরো পড়ুন – অভিনয় না করেও বলিউডের মালাইকা আরোরা কি করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করে?
তাই প্রায় তিন যুগ পরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে তিনি সেই আক্ষেপ ঘোচালেন। আর সমগ্র ঘটনা দেশের সকল প্রান্তের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করলেন সমাজমধ্যম প্রভাবী নিধি আগরওয়াল। এই এত বড় এক বাস্তব কাহিনী তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তিনি সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ভাস্কর নামের ওই অটোচালকের। ওই ব্যক্তির ছবি আজ সবার চোখে চোখে ঘুরছে।
আরো পড়ুন – কমছে গ্যাসের দাম? কেন কমানো হল গ্যাসের দাম? মধ্যবিত্তের চিন্তা মুক্তি?
সেই ছবি তুলে ধরে নিধি লেখেন,” যে ভাস্কর ক্লাস টেনের ইংরেজি পরীক্ষা দিয়েছেন সম্প্রতি। এই দীর্ঘ ৩৮ বছর পর আবার নতুন করে পড়াশোনা করার এই উৎসাহ ফিরে পাওয়া সহজ নয়। যাঁরা মনে করেন এই বয়সে এসে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করা অসম্ভব, তাঁদের জীবনে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতেই পারেন ভাস্কর।”
তাহলে এটাই সত্যি যে শেখার কোন শেষ নেই এবং মানুষ চাইলে ইচ্ছেশক্তির জোরে সব কিছু করতে পারে।