Breaking Bharat: বলিউডি গ্রেট ভিলেন গব্বর নিজের স্ত্রীয়ের জন্য কী করেছিলেন ভাবতেও পারবেন না! কিতনে আদমি নয় ওই এখনই যথেষ্ট। নৃশংসতা, ভয়াবহতা, নিষ্ঠুরতা, মহিলাদের খারাপ চোখে দেখা- এককথায় ভিলেন কিং মানেই ‘গব্বর সিং‘। কিন্তু আমজাদ খান মানেই কি তাই? কতটা আলাদা গব্বর আর আমজাদ?
ভিলেন হিসেবে যাদের সিনেমাতে দেখা যায় বাস্তবে তারাই হিরো হয়ে ওঠে। এটা কিন্তু বলিউড ছবির ইতিহাস বলছে। বিশ্বাস না হলে মিলিয়ে দেখুন, পুরো বিষয়টা পরিস্কার হয়ে যাবে আপনার চোখের সামনে। আর ভিলেনের কথা বলতে গেলে সবার আগেই ‘রামগড়ের ডাকাত সর্দার‘ কে মনে করেন সবাই এক বাক্যে।
সিনেমা মানে অভিনয়। সবটাই কাল্পনিক। বাস্তবের থেকেই এই গল্প নেওয়া হয় কখনো , আবার মন কখনো নিজের মতো করে গল্প লিখে ফেলে। কিন্তু হিরোদের , অভিনেতাদের টেক্কা দেওয়া আর দর্শকের মনে ভয়াল স্রোত বইয়ে দেওয়া চরিত্রের অভিনেতা বাছাই সহজ কথা নয়। আর এই চরিত্রকেই আইকনিক করেছেন একা ‘আমজাদ খান‘ (amjad khan)।
তিনি ছাড়া শোলে অসম্পূর্ণ শুধু নয়,অসম্ভব। সাধারণ গল্প, এক পুলিশ অফিসারের গোটা পরিবারকে এক ডাকাত শেষ করবে। প্রতিশোধ নিতে সেই পুলিশ আবার ক্রিমিনালদের সাহায্য নেবে। কিন্তু গল্প যত এগিয়ে ভারতীয় সিনেমা বুঝতে পড়ে ওই দুই গুন্ডাকে ছাপিয়ে পর্দায় বড় হয়ে উঠতে যাচ্ছে সেই পুলিশ অফিসার আর ডাকাত।
বাকি তিন মহারথীর সঙ্গে শুধু পাল্লাই দেওয়ায় নয়, “ইহাঁ সে পঁচাশ পঁচাশ কোস দূর গাঁও-মে যব বাচ্চা রোতা হ্যায়, তো মা কহতি হ্যায় কে বেটা শো যা, নেহি তো গব্বর আ যায়েগা” যেন দর্শকের শিরদাঁড়া দিয়ে ভয়ের হিমশীতল স্রোত বইয়ে দিতে পারছে। কিন্তু এরজন্য যে মুখ চাই তিনি কোথায়?
উঠে এল নাম আমজাদ খান। একেবারে নতুন তিনি, আনকোরা। আমজাদ তখন ইন্ডাস্ট্রিতে সেভাবে পরিচিতি পান নি। টাকাপয়সা একেবারেই নেই। সদ্য বাবা হয়েছেন কিন্তু স্ত্রীকে যে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসবেন তার জন্য প্রয়োজনীয় ৪০০টাকাও নেই তার কাছে।
আরো পড়ুন – চিংড়ি মাছ কি আপনার প্রিয়? কিন্তু এই মাছেই যে লুকিয়ে যে মারাত্মক বিপদ! জানেন কি?
সবার কাছে হাত পাততে হয়েছিল তাকে। অবশেষে স্ত্রীয়ের জন্য টাকা জোগাড় করতে ‘হিন্দুস্থান কি কসম’ ছবিতে ছোট্ট একটা সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই ছবির পরিচালক চেতন আনন্দ টাকা দিলে স্ত্রী-কে হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছিলেন। তখন তার নতুন দায়িত্বে দিশেহারা অবস্থা। এমন সময় রমেশ সিপ্পির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সুযোগ আসে।
‘টি সিরিজ’ কোম্পানির গান-বাজনা শোনেন, কিন্তু ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় আছে কি?
সিপ্পি দেখেই বুঝেছিলেন ইনিই তিনি, যাকে পেয়ে ভারতীয় সিনেমা ইতিহাস তৈরী করবে। আর হলো তাই। কিন্তু ডাকাতের কণ্ঠস্বর কিছুতেই মিল খাচ্ছিল না আমজাদের সঙ্গে। আর অন্যকে দিয়ে ডাবিং করিয়ে সিনেমার মেজাজ বদলাতে চান নি পরিচালক। তাই গলায় যা হবে না, সেটা আমজাদ পুষিয়ে দিলেন ম্যানারিজমে।
আরো পড়ুন – পারিবারিক সমস্যায় জীবন জেরবার? আপনার হাতের কাছেই আছে সমাধান, একটু খুঁজে দেখবেন নাকি?
আহা, ডায়লগ থ্রোয়িং-এ এমন এক অদ্ভুত স্টাইল দেখালেন, যা ভারতীয় সিনেমার ট্র্যাডিশনাল ভিলেনরা এর আগে কোনও দিন দেখাতে পারেন নি। “কিতনে আদমি থে” এর স্টাইলাইজেশনে এখনও কেঁপে ওঠে সবাই । এরপর রাতারাতি আমজাদ খান স্টার হয়ে ওঠেন। কিন্তু সত্যি বলতে কি তার মূল্যায়ন সেভাবে হাই নি।
আরো পড়ুন – মধ্যবিত্তদের উচ্চশিক্ষা কি শুধুই স্বপ্ন নাকি আদৌ বাস্তবে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে?
শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’, ‘লাভ স্টোরি’, ‘ইয়ারানা’, ‘উৎসব’-এর মতো কিছু ব্যতিক্রমী চরিত্রদের যদি সরিয়ে রাখেন তবে বলতেই হয় আমজাদ গব্বরের ছায়া হয়েই রয়ে গেলেন বিনোদন জগতে।