Breaking Bharat: কেন আজও ৮ থেকে ৮০ এর পছন্দ কলকাতা আলিপুর চিড়িয়াখানা (Alipore Zoo) ?
কলকাতা কত সুন্দরী তা তার বাইরের রূপ দেখেই বোঝা যায়। শীতের দুপুর হোক বা বর্ষার বিকেল চিড়িয়াখানা যাওয়ার মজাই আলাদা। কেন অমোঘ আকর্ষণ বলুন তো ? ডিজিটাল যুগে পায়ে হেঁটে চিড়িয়াখানা যেতে কয়েক হাজার মানুষ টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করেন (Zoological Garden, Alipore Zoo)।
কলকাতা আলিপুর চিড়িয়াখানা সম্পর্কে (alipore zoo safari):
গত দশ বছরের খতিয়ান দেখে সহজেই বোঝা যায়, এই স্থানের মত জনপ্রিয়তা কলকাতার আর কোনো দ্রষ্টব্য স্থানের আর নেই। দ্বিতীয় তৃতীয় স্থানে কে থাকবে সেটা বলা খুব কঠিন হলেও, প্রথম স্থানটি বছরের বছরের পর ধরে আলিপুর চিড়িয়াখানা নিজের নামে করে রেখেছে। (alipore zoo opening time)
আজ আলিপুরের বুকে কলকাতার গর্ব হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে চিড়িয়াখানা। আজ থেকে ২১৭ বছর আগে, ১৮০০ খ্রীষ্টাব্দে বাংলার তদনীন্তন গভর্নর জেনারেল আর্থার ওয়েলেসলি উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুরে নিজের বাসভবনে একটি ছোট পশু উদ্যান গড়ে তোলেন। এই পশু উদ্যানের ভার দেওয়া হয় স্কটল্যান্ডের বিশিষ্ট প্রাণীতত্ববিদ ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিলটন কে।
আলিপুর চিড়িয়াখানার ইতিহাস (Alipore Zoo):
১৮১০ সালে বিখ্যাত শিকারী স্যার স্টাম্ফোর্ড র্যাফেল এই পশু উদ্যানে এসে টাপি শিকার করেন। এই ছোট চিড়িয়াখানা অথবা পশু উদ্যান সেই সময় এতটাই জনপ্রিয় হয়, যে লন্ডন চিড়িয়াখানাও এখান থেকে বেশ কিছু জিনিস অনুকরণ করে। আলিপুর পশুশালার আয়তন ৪৫ একর। তবে গত পঞ্চাশ বছর এই চিড়িয়াখানার বিস্তার সম্ভব হয়নি। যদিও ইদানিং কালে নানা রকমের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে।
আলিপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণ (alipore zoo timing):
আধুনিকীকরণের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার (Alipore Zoological Garden, Kolkata Zoo)।আলিপুর কলকাতা শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। দক্ষিণ কলকাতার একটি অভিজাত স্থান হল আলিপুর। এখানে ট্রেন পথে আসতে হলে প্রথমে শিয়ালদহ বা হাওড়া আসতে হবে। শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে বহু বাস রয়েছে যা ২০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে আপনাকে আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে নিয়ে আসবে।
এছাড়া কলকাতার যে কোনো স্থান থেকে আপনি ট্যাক্সি করেও কলকাতা আলিপুর চিড়িয়াখানায় আসতে পারেন। মেট্রো করে যারা আসবেন তারা নেতাজী ভবন বা রবীন্দ্রসদন মেট্রো স্টেশান নেমে সেখান থেকে বাস বা ট্যাক্সি করে নিতে পারেন। আলিপুর চিড়িয়াখানা এবার ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এখানে তৈরি করা হল ‘চাইল্ড কেয়ার সেন্টার’। কারণ চিড়িয়াখানায় পরিবারের সঙ্গে আসে শিশুরাও।
আলিপুর চিড়িয়াখানা (alipore zoo online ticket):
এখানে এসে তাদের খিদে পেলে অসুবিধায় পড়তে হয় শিশুর মাকে। কারণ নির্দিষ্ট কোনও জায়গা ছিল না। এবার অত্যাধুনিক ধাঁচেই তৈরি করা হয়েছে এই চাইল্ড কেয়ার রুম। যেখানে মা তাঁর শিশুর পরিচর্যা করতে পারবেন। এখানে কিছু নিয়ম আছে সে কথা জানেন কি? পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য টিকিটের দাম ১০টাকা। পাঁচ বছরের বেশি বয়সিদের জন্য টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা।
সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে চিড়িয়াখানা। টিকিট পাওয়া যায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪:৩০টে পর্যন্ত। সাধারণত বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ছুটির দিন হলে খোলা থাকে চিড়িয়াখানা। বন্ধ থাকে তার পরের দিন। এখন অনলাইনে টিকিট কাটা যায় সহজেই।
আরো পড়ুন- Dakshineswar : সতীপীঠ নয়, তবুও দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দির কেন এত আকর্ষণ?
১৯৭০ সালে বাঘ ও সিংহের মধ্যে প্রজনঅন ঘটিয়ে টাইগন নামের এক নতুন প্রজাতির জন্ম দেওয়া হয়, রুদ্রানী(১৯৭১) এবং রঞ্জিনী (১৯৭৩)। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং আফ্রিকান লায়নের মধ্যে এই প্রজনন ঘটানো হয়। আফ্রিকান সিংহের সাথে মিলিত হয়ে রুদ্রানী আবার আরও সাতটি লিটিগনের জন্ম দেয়। এই শংকর প্রজাতীর প্রাণীগুলি প্রজননে অক্ষম ছিল এবং জিনগত কারণে এরা বেশীদিন বাঁচে নি।
আরো পড়ুন- Mithun Chakraborty : ডান্সের মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর সফলতার গল্প জানেন?
তবে এই নতুন লিটিগনগুলির মধ্যে কিউবাকানান নামে একটি লিটিগণ পূর্ণবয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিল। দাবী করা হয় এটাই পৃথিবীর বৃহত্তম বিগ ক্যাট।পরবর্তীকালে আইন করে প্রাণী সংকরায়ণ নিষিদ্ধ হলে ১৯৮৫ সালে কলকাতা চিড়িয়াখানা সংকরায়ন প্রথা বন্ধ করে । ২৫ বছর বয়সে, ১৯৯৫ সালে পৃথিবীর শেষ লিটিগন রঞ্জিনী মারা গেলে এই শঙ্কর প্রজাতির পশু পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়।
আরো পড়ুন- Ayodhya hills : ছৌ নাচের দেশ কি রামের অযোধ্যা পাহাড়? পুরুলিয়ার প্রিয় কি পাহাড় কি?
চিড়িয়াখানা মানেই ছোটবেলা আর নস্টালজিয়া। ছোট প্রজন্মকে এই স্থান থেকে দূরে সরিয়ে রাখা একদম উচিত নয়। আর আপনিও না হয় ঘুরে আসুন, ফিরে যান ছেলেবেলায়।