Breaking Bharat: এরোপ্লেনের গোল জানলা আপনাকে নিরাপত্তা দেয়, জানেন কি? ছোট থেকে শুনে এসেছি পৃথিবী গোল, পরে অবশ্য জানা গেছে দুদিকে চ্যাপ্টা মানে কমলালেবুর মত। কিন্তু গোলাকার কনসেপ্ট আজও রয়ে গেছে। গোলগোল কথা বললেই বলা হয় পৃথিবীর মত গোলাকার, ফুটবলকে বলা হয় পৃথিবীর মতো গোল। এত কাণ্ডের মাঝে একদিন হঠাৎ আবিষ্কার হলো আরেক প্লেনের জানলায় যে গোল (airplane round windows)। অবশ্য ডিম্বাকৃতির কিছু কিছু প্লেনের ক্ষেত্রে। আকাশপথে পাড়ি দেওয়া যাদের নিত্যদিনের প্রয়োজন, তারা কখনো এই বিশেষ ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন? (Why are windows on airplanes round?)
মনে হয়েছে এরোপ্লেনের উইন্ডো গোলাকৃতি কেন?
চেনা চারপাশের কত কিছু অচেনা-অজানা সেটা বোধহয় অন্য কেউ না বললে অনেক সময় বোঝা যায় না। আজকে ভীষণ চেনা অথচ প্রকৃত কারণ অজানা এমন একটি বিষয় তুলে ধরলাম আপনাদের কাছে। উড়োজাহাজ নামের মধ্যে বেশ একটা থ্রিলিং ব্যাপার আছে তাই না? যারা প্রথমবার উড়োজাহাজ বা এরোপ্লেন চড়বেন বা চড়েছেন সেই অভিজ্ঞতাই একেবারে আলাদা। বিমানের হরেক রকমের কারুকার্য মন কাড়ে। কিন্তু উইন্ডো নজর কেড়েছে? প্লেনে উঠলে জানলার ধারে সিটে বসার কথা মনে হয়।
শুধু সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্যই কি দেওয়া হয়েছে গোলাকার জানালা?
পৃথিবী থেকে অনেকটা ওপরে উঠতে উঠতেই চেনা বাড়ি গাছ চারপাশ কেমন ছোট হতে হতে বিলীন হয়ে যায়। এই অনুভূতিটা মনের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মত। কিন্তু প্লেনের জানালা (airplane windows) দিয়ে বাইরে দেখতে গিয়ে জানলার ডিজাইনটা মিস করে গেছেন তো? কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে, কেন বিমানের জানালা গোলাকার হয়? শুধু সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্যই কি দেওয়া হয়েছে গোলাকার জানালা (Round windows)? নাকি রয়েছে অন্য কোনো কারণ?
আপনি কি জানেন উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট যে উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেছিলেন তাতে কোনো জানলাই ছিল না? কন্ট্রোল রুমের নকশা বেশ কিছু বছর ধরে একই রকম ছিল। অর্থাৎ উড়োজাহাজের কোন ছাদ ছিল না। মানে মাথার উপরে খোলা আকাশ।পরবর্তীকালে উচ্চ গতি ও অধিক উচ্চতায় উড়তে পারে এমন বিমান নির্মাণ এবং যাত্রীদের ঝড়, বৃষ্টি ও তীব্র বায়ুপ্রবাহ থেকে রক্ষা করতে বিমানের ওপরের অংশটুকু ঢেকে দেওয়া হয় এবং বসানো হয় জানালা (Airplane Windows Are Round)।
তবে সেই জানলা এখনকার মতো ছিল না। বরং উল্টোটাই ছিল। সে জানালাগুলি ছিল এখনকার বাস-ট্রাকের মতই চারকোনা বা চতুর্ভুজাকৃতির। ইতিহাস বলছে, প্রায় পঞ্চাশ দশক পর্যন্ত চারকোনা জানালা দিয়েই নির্মাণ করা হচ্ছিল বিমান। কিন্তু ১৯৫৩ সালে মর্মান্তিক এক বিমান দুর্ঘটনা পাল্টে দেয় সবকিছু। প্রায় ৫৬ জনের মৃত্যুতে এরোপ্লেন – এর নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়। দুর্ঘটনার তদন্তে উঠে আসে অবাক করা তথ্য।
আরো পড়ুন- leech : শত্রুরা যদি জোঁক হয়, তাহলে কেন জোঁকের মুখে নুন দিতে বলা হয়?
১৯৫৩ সালে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল তার নেপথ্যের কারণ ছিল বিমানের বর্গাকার জানালা। যান্ত্রিক ত্রুটি বা ইঞ্জিনের সমস্যা নয়। কিন্তু তা কীভাবে সম্ভব?
আরো পড়ুন- Frogs : কথায় বলে ঘুম ছাড়া জীবন বাঁচে না, কিন্তু এই প্রাণী কে, যে কখনও ঘুমোয় না?
তদন্তকারী ইঞ্জিনিয়াররা জানান বর্গাকার বা আয়তকার জানালায় চারটি কোণ থাকে। উড়ন্ত অবস্থায় বাতাসের চাপ জানালার কাচের মাঝখানের তুলনায় চারটি কোণ বেশি পায়। কখনো কখনো চাপ অতিরিক্ত হয়ে গেলে জানালার কাঁচের কোণগুলোর পক্ষে তা ধরে রাখা সম্ভব হয় না। ফলে জানালাটি ভেঙে যায়। আর এ কারণেই ১৯৫৩ সালের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটে (plane crash)।
আরো পড়ুন- Hello : কথায় কথায় হ্যালো বলেন, কিন্তু শব্দটা এল কোথা থেকে? ইতিহাস জানেন ?
এ ঘটনার পর থেকেই গোলাকৃতির জানালা দিয়ে বিমান নির্মাণ শুরু হয় (Aircraft construction began with round windows)। এর ফলে বায়ুর চাপ জানালার চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তা ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না। বিমানযাত্রা নিরাপদ হয় নিঃসন্দেহে।