Breaking Bharat: ক্লাউড নাইন শুনেছেন হয়তো,গুগল ক্লাউড (Google Cloud) সম্পর্কে কতটা জানেন সাধারণ মানুষ? আজকের যুগে গুগল সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ নেই। শুধুমাত্র মেইল করা এবং মেইল চেক করা এর পাশাপাশি google এর ভূমিকা আরো অনেক। বিশ্বজুড়ে সেরা ব্রাউজার এর তকমা পেয়েছে গুগল। আজ আমরা বলবো গুগলের এমন একটি ফিচার সম্পর্কে যা জানলে আপনি অবাক হবেন, ভাববেন এও কি সম্ভব?
কিন্তু কী এই গুগল ক্লাউড?
আপনি কি জানেন, যারা টেক স্যাভি মানুষ তারা কিন্তু গুগল ক্লাউড সম্পর্কে (About Google Cloud) বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করেছেন। ক্লাউড সেবা থেকে তারকাদের ছবি ফাঁসের ঘটনায় তোলপাড় ওয়েব দুনিয়া। অনেকেই ‘ক্লাউড’ এর কথা শুনেছেন। সম্প্রতি অ্যাপলের ক্লাউড সার্ভিস থেকে তারকাদের নগ্ন ছবি ফাঁস হয়।
খুব সহজভাবে বলতে গেলে, ক্লাউডকে খুব সাধারণভাবে কম্পিউটারের পরিবর্তে ইন্টারনেটে চালিত সফটওয়্যার ও সার্ভিস বলা যেতে পারে। অ্যাপলের আইক্লাউড, ড্রপবক্স, নেটফ্লিক্স, আমাজন ক্লাউড ড্রাইভ, ফ্লিকার, গুগল ড্রাইভ, মাইক্রোসফট অফিস৩৬৫, ইয়াহুমেইল সবগুলোই ক্লাউড সেবার অংশ মাত্র। এবার এর সুবিধাগুলোর কথা বলব।
গুগল ক্লাউড ব্যবহারের সুবিধা:
কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রয়োজনীয় তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণের জন্য অনেকেই ব্যাক আপ রাখার পরিকল্পনা করেন। এক্ষেত্রে ক্লাউডে নিরাপদে তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
ক্লাউড ব্যবহার করে বিশেষ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কম্পিউটার থেকে কম্পিউটার বা অন্যান্য যন্ত্রে কম্পিউটিং সার্ভিস পেতে পারেন আপনি।
আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি ক্লাউডে থাকলে তা সুরক্ষিত এবং নিরাপদ থাকে। ক্লাউডে তথ্য রাখলে তথ্য চুরি, হার্ড ড্রাইভ অচল হয়ে যাওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পায়। এ ছাড়াও যে কোনো স্থানে বা ইন্টারনেট সুবিধাসম্পন্ন যন্ত্র থেকে তা ব্যবহার করা যায়।
বিনোদন জগতেও ক্লাউড বিশেষভাবে কার্যকরী। কোনও সিরিয়াল বা টেলিভিশনের কোনও বিশেষ তথ্যচিত্র আপনি মাঝপথে দেখা থামিয়ে দিয়েছেন। বাড়িতে অফিস যেতে যেতে ট্রেনে ক্লাউড ব্যবহার করে আপনি বাকিটা দেখতে পারেন। বাড়িতে আইপ্যাডে ক্যান্ডি ক্রাশ খেলতে খেলতে অফিসের সময় হয়ে গেলে পরবর্তী লেভেল অফিসে গিয়ে কম্পিউটারে খেলতে পারেন।
স্মার্টফোন ছবি তুললে আইক্লাউড কিংবা গুগল প্লাসের ফটো স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা ব্যাকআপ রাখে। তাই বলাই যায় মোবাইল অ্যাপস ও পিসি সফটওয়্যার এখন ক্লাউডের অংশ হয়ে যাচ্ছে।
যেখানে এত তথ্যের সংরক্ষণ তার নিরাপত্তা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে। ক্লাউড কী নিরাপদ? ক্লাউডের জগতে নিজেকে আড়াল করা খুবই কঠিন। কারণ ক্লাউডভিত্তিক সফটওয়্যারে আপনাকে লগ ইন করতেই হয়।
ক্লাউডে তথ্য রাখার বিষয়টি নিরাপদ কিনা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য হচ্ছে, আপনি যে প্রতিষ্ঠানের সেবা নিচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠানটি কতটা সুরক্ষা দেয় তা দেখতে হবে। এক্ষেত্রে সুরক্ষার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের ওপর আপনার আস্থা আর আপনার দেওয়া পাসওয়ার্ডের ওপর নির্ভর করে। অধিকাংশ ক্লাউড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা রেকর্ড ভালো।
ক্লাউডে জমা রাখা তথ্য কোথায় লুকানো থাকে?
এই প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগে। আসলে হার্ডডিস্ক বা ফোন মেমোরির পরিবর্তে ক্লাউডে রাখা তথ্য বিশ্বের বড় বড় ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত থাকে। গ্রাহক ক্লাউড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাজন, গুগল, অ্যাপল. মাইক্রোসফট ও ফেসবুক সবচেয়ে বড় ডাটা সেন্টারের মালিক।
এখন পর্যন্ত ৩২ কোটি আইক্লাউড ব্যবহারকারী রয়েছে। এখন পর্যন্ত ফেসবুকে ৪০০ বিলিয়ন ছবি আপলোড হয়েছে এবং প্রতিদিন ৩৫ কোটি ছবি যুক্ত হচ্ছে। ১৯০ টি দেশে ক্লাউড সেবা দেয় আমাজন। অনেকেই প্রশ্ন করেন এর জন্য বিশেষ অর্থ খরচ করতে হয় কিনা?
আপনাকে জানাই, ক্লাউডে নিরাপদে বিনামূল্যেই তথ্য সংরক্ষণ করার সুবিধা দেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান (Store data securely in the cloud for free)। বিনামূল্যেই অনলাইন স্টোরেজ সুবিধা দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সারডক, মেগা, এড্রাইভ, ওয়ানড্রাইভ, ড্রপবক্স।
আরো পড়ুন- পিঠের চামড়া তুলে নেবার হুমকি! প্রাচীন ভাষার রীতিতেও শাসকের দম্ভ আর ঔদ্ধত্য কেন দেখা যায়?
সারডকে সাইন আপ করার মাধ্যমে বিনামূল্যেই ১০০ জিবি জায়গা পাওয়া যায়। এর জন্য আলাদা করে কোনো অ্যাপ বা অন্য কোনো কিছু ডাউনলোড করারও দরকার পড়ে না। ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করেই এই সুবিধা নেওয়া যায়। ১০০ জিবি ডেটা স্টোরেজকে চাইলে আরও বাড়িয়ে এক টেরাবাইট পর্যন্ত করা যায়।
বিখ্যাত মেগাআপলোড ওয়েবসাইটের নির্মাতা কিম ডটকমের উদ্যোগ ‘মেগা’। নিরাপদে তথ্য সংরক্ষণ করতে মেগা ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যান্ড্রয়েড, ব্ল্যাকবেরি, আইওএস প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি ব্রাউজার থেকেও এই মেগা ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরো পড়ুন- Eiffel Tower : আইফেল টাওয়ার বিবাহিত জানেন? আইফেল টাওয়ারের ইতিহাস জানেন ?
এখানে ৫০ জিবি তথ্য বিনামূল্যে সংরক্ষণ করা যায়। অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস অ্যাপসের পাশাপাশি ওয়েব ব্রাউজার থেকেও এড্রাইভে তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। তাহলে আর এত চিন্তা-ভাবনা না করে এবার ব্যবহারিক প্রয়োগের দিকে নজর দিন। যদিও সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।