Breaking Bharat: আপনার পরিবারের সদস্য কি গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার? বাড়ির মহিলাদের উপর শারীরিক নিগ্রহ মেনে নেওয়া যায় কি?
স্বাধীনতা পেয়েছিলাম অনেকটা আগেই কিন্তু স্বাধীনতা শব্দটার পূর্ণ মর্যাদা আজও দিয়ে উঠতে পারলাম না আমরা। শিক্ষা নিয়ে শিক্ষিত হয়েছি বটে কিন্তু সেই শিক্ষা শুধু ডিগ্রি এনে দিয়েছে, বাস্তবের সমাজ দর্পণে তার কোন প্রতিফলন পড়েনি। না হলে বিংশ শতাব্দী পেরিয়ে একবিংশ শতাব্দীর শেষ করার মুহূর্তেও নারীরা এখনো নির্যাতিতা, অত্যাচারিতা। আর সব জানার পর মুখ বুজে বসে থাকবেন আপনি?
গার্হস্থ্য ও পারিবারিক হিংস্রতা সম্বন্ধে:
ছোটবেলা থেকে ভাই বোনের খুনসুটি সম্পর্ককে মধুর করে। কিন্তু সেই ভাই যদি কখনো জানতে পারে তার দিদি বা বোন শ্বশুর বাড়িতে প্রত্যেকদিন অপমানিত হচ্ছে, মারধোরের শিকার হতে হচ্ছে সে কি চুপ করে বসে থাকতে পারে?
যে বাবা, নিজের বুক দিয়ে আগলে রেখে কন্যা সন্তানকে বড় করেছে, যে তার গর্বের আর অহংকারের কারণ, সে যদি অন্য বাড়ির বউ হয়ে সেখানে প্রত্যেকদিন লাঞ্ছনা পায়, সেটা কি বাবা হিসেবে কখনো সম্মানের হতে পারে? এই সবকটা উত্তর হল না এটা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিবাদ কতটা হয় সে বিষয়ে আমরা কেউ ভেবে দেখি না।
আসলে অন্যের মেয়েকে তুলে নিয়ে গেলে আমরা কথা বলি না, গায়ে লাগে যখন আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। এতটাই স্বার্থপর সমাজে বাস করছি আমরা। নিজেরা চেষ্টা না করলে কিন্তু এখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনও উপায় নেই। পরিস্থিতি যে কোনও মুহূর্তে হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
বাড়ির মহিলাদের উপর শারীরিক নিগ্রহ:
‘দাম্পত্যে অশান্তি লেগেই থাকে‘ কিন্তু তাই বলে গায়ে হাত দেওয়া কখনোই বরদাস্ত করা উচিত নয়। এমনটা নয় যে শুধুমাত্র পুরুষ নারীর উপর অত্যাচার করে। এরকমও দেখা গেছে যে নারী পুরুষের উপর এতটাই অত্যাচার করছে, যে চক্ষু লজ্জার ভয় থেকে পুরুষ সেটা বাইরের কাউকে জানাতে পারছে না।
এইরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে মুখ বুজে সবটা সহ্য করা মানে কিন্তু অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া। আপনি ছেলে হন বা মেয়ে কোনভাবেই আপনার গায়ে হাত তোলার ক্ষমতা বা অধিকার কিন্তু কারোর নেই। ছোটবেলায় মা-বাবার শাসন স্নেহের সম্পর্কের ইঙ্গিতবাহী কিন্তু দাম্পত্য সম্পর্কে এই জিনিসটা ঘটলে কিন্তু বুঝতে হবে এবার কোথাও একটা লাইন টানার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।
আরো পড়ুন – বাঁচতে গেলে টাকা লাগে, কিন্তু টাকা দিয়ে কি জীবনে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব?
প্রথমে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। যদি সেটা না হয় তাহলে আইনের সাহায্য কিন্তু নিতেই হবে। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স কে প্রশ্রয় দেবেন না। উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া আজকাল কিছুই হয় না তাই যে যে ঘটনা ঘটছে সম্ভব হলে মোবাইলে তার রেকর্ডিং করুন, যাতে পরবর্তীকালে প্রমাণের অভাবে একজন অপরাধী ছাড়া না পেয়ে যায়।
আরো পড়ুন – বিয়ের পর বউয়ের সঙ্গে নিত্যদিনের অশান্তি? স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া দূর করার উপায়
সুস্থ সম্পর্কে একজন মানুষ আর একজন মানুষকে কখনোই শারীরিকভাবে আক্রমণ করতে পারে না। যদি এটা হয় তাহলে বুঝতে হবে যে ব্যক্তি এই কান্ডটি ঘটাচ্ছেন তার মানসিক সমস্যা আছে আর সেটার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। ভেবে দেখুন, রাগের বশে কাউকে মেরে ফেলা এবং সেটা এতটাই মারাত্মক যে সেই মানুষটা মরে পর্যন্ত যেতে পারে, এমন ঘটনাও তো বারবার খবরের কাগজে উঠে আসে।
আরো পড়ুন – বিয়ে করতে চাইছেন? স্ত্রী হিসেবেই কাশ্মীরি মহিলাই কি আপনার প্রথম পছন্দ?
সেক্ষেত্রে অপরাধী ধরা পড়লে তার মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সিলিং সবার আগে করা হয়। তাই কোনভাবে যদি ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বাড়তে থাকে তাহলে সেটার দায় শুধুমাত্র স্বামী বা স্ত্রী, তাদের উপরেই বর্তায় না, দোষ যায় কিন্তু সেই পরিবারের উপরেও।
আরো পড়ুন – মেয়েদের জামা ডিজাইন! মেয়েদের পোশাকে বিশেষ ধরণের পকেট সিস্টেম থাকে জানেন?
চুপ করে সহ্য করে থাকা মানে আপনি দিনের পর দিন নিজেকে কষ্ট দিচ্ছেন আর সমাজের কাছে এমন একটা ধারণা তৈরি করে দিচ্ছেন যেন অসহায়তা মানেই যন্ত্রণা মুখ বুঝে সহ্য করা। একজন মানুষের এই ঘটনার জেরে সমাজে পরবর্তীতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবেই আক্রান্ত হতে থাকবে সেই হিসেবটা আপনি করছেন কি? একটু ভাবতে শিখুন গর্জে উঠুন প্রতিবাদ করুন।