Breaking Bharat: টেলিভিশনের পর্দায় স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন চলছে? বাড়ির ছোটদের সামনে অস্বস্তি এড়াতে কী করেন আপনি?
সময় পাল্টেছে যুগ বদলেছে তার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে মানসিকতার। যারা ৯০ এর দশকে বেড়ে উঠেছেন সেই সমস্ত মানুষের মানসিকতা আর যারা এখনকার প্রজন্ম তাদের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যদি সত্তর, আশি বা পঞ্চাশ- ষাট দশকে ফিরে যান তাহলে তো দুই প্রজন্মের মধ্যে কোনও মিল খুজেই পাবেন না।
আসলেই জেনারেশন গ্যাপ শব্দটা বড্ড তাড়াতাড়ি অনেক চওড়া হয়ে যাচ্ছে যেটা হয়তো আপনি আমি খালি চোখে বুঝতে পারছি না। এই প্রজন্ম অনেক কিছুই আপডেটেড এই কথাটা প্রায়ই শুনতে হয় তাই না? বিশেষ করে যে বাড়িতে বাচ্চা আছে সেই বাড়ির বয়স্করা বড় সমস্যায় পড়েন (advertisement of sanitary napkins)।
এখনকার বাচ্চারা এমন সব প্রশ্ন করে, এমন সব কান্ড ঘটায় যেহেতু আগেকার দিনে কল্পনাও করা যেত না। আর এটা কোনও একটা বাড়ির ঘটনা নয়। এটাই সমাজের সাধারণ চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন। তাহলে খাবো এখনকার বুদ্ধিমত্তার কাছে স্যানিটারি ন্যাপকিনের মত বিষয় লুকানো কি অতটাই সহজ হবে?
প্রতিবেদনের শিরোনামে এমন দুটো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যেটা এখনো সমাজের কাছে একটা ট্যাবুর মতো। ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন‘ – মহিলাদের একান্ত প্রয়োজনীয় অথচ এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশ্যে আলোচনা করা বা বলা একপ্রকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সমাজ। কিন্তু ওই যে আগেই বলেছি।
এখন সময় পাল্টেছে তাই মানুষকে এই বিষয়ে আরো বেশি করে জানানোর জন্য নানা মাধ্যমে রেডিও টেলিভিশন ডিজিটাল মিডিয়া বিনোদন জগত সর্বত্র প্রচার শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় তো আবার পোস্টারিং ক্যাম্পেইন হয় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের ভালো দিক তুলে ধরার জন্য। সবই ঠিক আছে, কিন্তু বাড়ির বাচ্চারা দেখে প্রশ্ন করলেই বিপাকে পড়েন আপনি ঠিক বললাম তো? তাহলে কী করবেন এটাই হচ্ছে মোক্ষম প্রশ্ন।
যৌনতা নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করার নিষেধাজ্ঞা জারি আগেও ছিল এখনো আছে। কিন্তু বুঝতে হবে এখন ছোট বয়স থেকেই শিশুরা অনেকটা পরিণত। এটার জন্য তারা নিজেরা দায়ী নয় চারপাশের পরিস্থিতি তাদের এভাবেই গড়ে তুলছে। সারল্য বড্ড তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে আর শৈশব বড় হচ্ছে চোখের নিমেষে।
আরো পড়ুন – মাথার উপর প্রচুর ঋণের বোঝা থাকলে দুশ্চিন্তা কি কমানো যায়?
মোবাইলের ইন্টারনেটে যুগে বয়সের আগেই অনেক বিষয় জেনে যাচ্ছে আজকের শৈশব। সহজেই তাদের মনে প্রশ্ন জাগছে। টেলিভিশনের পর্দায় যখন স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন দেখানো হয় তখন সেখানে নীল রঙের বা বর্তমানের লাল রঙের ড্রপ দিয়ে আসলে কী বোঝানো হচ্ছে বা ওই জিনিসটা কী, এটা জানার বা শোনার আগ্রহ বেশিরভাগ বাচ্চাদের মধ্যেই দেখা যায়।
আরো পড়ুন – মেয়ে নাকি ছেলে, কে বেশি পরিণত জানা আছে? ‘মেয়েদের ম্যাচুরিটি’ নাকি ছেলেদের আগে হয়?
বাড়ির গুরুজনেরা তখন চ্যানেল ঘুরিয়ে দিয়ে শিশুদের মন ঘোরানোর চেষ্টা করেন যদিও তাতে কোন লাভ হয় না। চেষ্টা করুন নিজের সন্তানকে ছোটবেলা থেকে এমন ভাবে তৈরি করতে যাতে ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা তার তৈরি হয়ে যায়। যদি প্রয়োজন হয় যৌনতা বা শরীর সম্পর্কিত তথ্য তাকে অবশ্যই জানাতে হবে।
কিন্তু সেই ভাষাটা হবে একেবারে তার মত সহজ সরল। স্যানিটারি ন্যাপকিন অচ্ছুত নয়, তাহলে সেই বিষয়টা সম্পর্কে অকারণে কৌতুহলে রাখবেন কেন আপনার বাড়ির বাচ্চাকে? খোলামেলা আলোচনা করে একটা সুস্থ পরিবেশ ছোটবেলা থেকে তৈরি করতে পারলে কিন্তু সেই শিশু ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন, বড় হয়ে সুস্থ মানসিকতায় সমাজ গঠন করতে পারে।
আরো পড়ুন – সুদখোর! জীবনে কখনো সুদখোর মানুষের পাল্লায় পড়েছেন?
নাহলে আজকালকার দিনে যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে মনস্তাত্ত্বিকরা বলছেন বেড়ে ওঠার মধ্যেই সমস্যা রয়ে গেছে। তাই শিশু মস্তিষ্ক যখন এক এক করে পরিণত হচ্ছে তখন তার ভাষায়, তার মতন করে প্রতিটা স্টেজে তাকে বাস্তব জিনিস গুলো বোঝানোর চেষ্টা করুন। এতে লজ্জার কিছু নেই, অন্যায়ের কিছু নেই।
বাবা-মা সন্তানের সবথেকে কাছের আর ভালো বন্ধু। তাই এই কাজটা সাবলীলভাবে সহজে তারাই করতে পারবেন।