Breaking Bharat: মেয়ে নাকি ছেলে, কে বেশি পরিণত জানা আছে? ‘মেয়েদের ম্যাচুরিটি’ নাকি ছেলেদের আগে হয়? শারীরিক নাকি মানসিক ম্যাচুরিটি, কোনটা আলোচ্য?
এই পৃথিবীতে নানা প্রজাতির বসবাস যার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। যেকোনো প্রাণীর জীবনের বিভিন্ন পর্যায় থাকে। ছোট থেকে ধীরে ধীরে সেই পর্যায়ে অতিক্রম করে সে বড় হয়। এবার প্রশ্ন হচ্ছে বড় হওয়া মানে মানসিকভাবে পরিণত হওয়াও বটে কিন্তু সেটা কতটা হয় আর কার হয় আগে কার পরে?
চলুন এই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া যাক। বিজ্ঞান বলে ‘মেয়েদের ম্যাচুরিটি‘ নাকি ছেলেদের আগে হয়। এর পেছনে শুধুই মানসিক কারণ থাকে নাকি অন্য কিছু লুকিয়ে আছে, সেই দিকটায় লক্ষ্য দেওয়া যাক।
‘ম্যাচুরিটি‘ শব্দটার বাংলা অর্থ পরিণত হওয়া। কিন্তু এই পরিণত হতে গেলে পারিপার্শিক পরিস্থিতির দিকে গভীর নজর দিতে হয়। মনে রাখবেন, একটা মেয়ের বেড়ে ওঠা আর একটা ছেলের বেড়ে ওঠার মধ্যে অনেকটা তফাৎ থাকে। তারপর না হয় প্রশ্ন আসবে শারীরিক নাকি মানসিক ম্যাচুরিটি, কোনটা আলোচ্য। আমাদের পুরুষ তান্ত্রিক সমাজে আজও মেয়েরা সমান অধিকার পায় না।
আইন আগের থেকে অনেক বেশি উন্নত হয়েছে কিন্তু তার মাধ্যমেই কি সব সমস্যার সমাধান সম্ভব? উত্তরটা সম্ভবত না । মানুষের মানসিকতা না বদলাতে পারলে কোনও পরিবর্তন আসতে পারে না। আসলে চারপাশে ভাল মন্দের পার্থক্য করাটাই আসল ম্যাচুরিটি।
এটা কে ভাল পারে মেয়ে নাকি ছেলে?
মেয়ে মানেই বিয়ের জন্য বলি প্রদত্ত ভাবনা ছেড়ে একটু বাইরে আসুন। আর জানুন বিজ্ঞান কী বলছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় মেয়েদের মস্তিষ্ক বয়ঃসন্ধিকালে দু’বছরের মতো এগিয়ে থাকে। মানে একটি মেয়ে প্রকৃতপক্ষে যত বছর বয়সী তার থেকে দুবছর অ্যাডভান্স চলে তার ব্রেন।
আসলে নিউরো-ইমেজিং পরীক্ষায় দেখা গেছে যে প্রথমদিকে, সাধারণত কিশোরীদের মস্তিষ্কের যে অঞ্চলগুলি তথ্য অনুপ্রবেশকে নিয়ন্ত্রণ করে সেই অ্যামিগডালা এবং বিচারকাজের জন্য যে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স রয়েছে, এই দুইয়ের মধ্যে দৃঢ় সংযোগ রয়েছে। প্রাকৃতিক নিয়মে মেয়েদের যৌবন কিন্তু ছেলেদের আগে আসে অর্থাৎ এই ফারাক টা ২ থেকে ৩ বছর মতো হতে পারে।
কিশোরী থেকে যুবতীটি পরিণত হওয়া মাত্রই হরমোনের প্রভাব শুরু হয়ে যায়। আর দ্রুত এই দু বছরেই নারী সেই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এককথায় শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানসিক ম্যাচুরিটি। যেমন দ্রুত শুরু হয় তেমনই ছেলেদের তুলনায় দ্রুত বয়ঃসন্ধির পর্যায়ও শেষ করে মেয়েরা।
আরো পড়ুন – সুদখোর! জীবনে কখনো সুদখোর মানুষের পাল্লায় পড়েছেন?
বিশ্ব জুড়ে এই নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে গবেষণা আর সমীক্ষার ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় আগে মস্তিষ্কের সংযোগ অপ্টিমাইজ করতে পারে। আসলে কোনও জিনিস বা অঙ্গ যদি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা না হয় তবে তা কাজের যোগ্য থাকে না।
আরো পড়ুন – ব্যাংকে প্রচুর ঋণ আছে? মৃত্যুর পর কি ব্যাংক ঋণগ্রহীতার সমস্ত লোন মুকুব করে দেয়?
ঠিক তেমনই শৈশবকাল থেকে মানুষের মস্তিষ্ক একটি বড় পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়, যাতে প্রতি মুহূর্তে বদল ঘটতে থাকে । এবার মস্তিষ্কের যে সংযোগগুলি নিয়মিত ব্যাবহার করা হয় না, খুব স্বাভাবিক ভাবেই তা সঙ্কুচিত হয়ে যায় এবং ব্যবহারের না করায় অকেজো হয়ে পড়ে।
বিজ্ঞান বলে মস্তিষ্কের সংযোগগুলির নিয়মিত চর্চা ব্যবহারকারীকে বাড়তি সুবিধা দেয়। আর মেয়েরা আবেগপ্রবণ তাই এটা একটা অ্যাডেড অ্যাডভান্টেজ তো বটেই।
আরো পড়ুন – দুটি সন্তানের বেশি কখনই পরিবারে আনা উচিত নয়, কেন বলেন চিকিৎসকেরা?
আমরা সবাই জানি ইমোশনাল চ্যালেঞ্জে মেয়েরা এগিয়ে আছে ছেলেদের থেকে কিন্তু আবেগগত বুদ্ধিমত্তা নয়, বরং কার পেশীশক্তি কত বেশি তার উপর ভিত্তি করে সামাজিক সিস্টেম তৈরি করেছে পুরুষ। আজও তাই তারা মানতে পারেনি ‘মেয়েদের পরিণত হওয়ার প্রতিভার কথা‘। বিতর্ক নয় সামাজিক সমীক্ষা এটাই বলছে।