Manush Manusher Jonno: মানুষ মানুষের জন্য, এই ভাবনায় কি আপনি বিশ্বাসী? বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার একটা গানের লাইন বাংলা আধুনিক সংগীত জগতে একটা সময় খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। গানের লাইনগুলো ছিল এরকম।
” মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা !”
গানের কথাগুলো কী চরম সত্য সেটা বোধহয় আজকের পৃথিবীতে বোঝা সম্ভব। অনেকের ভাবেন যারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে যারা আমার শত্রু তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটা ভাবনা চিন্তার মধ্যে রাখলে যে পৃথিবীতে বন্ধুত্ব বলে কোন সম্পর্কই থাকবে না সেটা ভেবেছেন কি?
নিজে থেকে যেচে কারোর উপকার করার দরকার নেই কিন্তু কেউ সাহায্য চাইতে এলে তাকে ফেরাবেন না একথা বলে গেছিলেন স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ। সেই ভাবনাকে এবার বাস্তবায়িত করার সময় এসেছে না হলে পৃথিবীতে সব সত্যি গুলো আস্তে আস্তে মিথ্যে হয়ে যাবে।
কোন জিনিস গঠন করা খুব কঠিন অথচ ভেঙে ফেলা বড্ড সহজ। লক্ষ্য করে দেখবেন একটা বাড়ির ইমারত গঠন করতে যতটা সময় লাগে তার অর্ধেকের কম সময় লাগে সেটাকে ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে দিতে। তাই সব সময় সম্পর্ক গড়ার দিকে মন দিন তবেই একটা সুস্থ সমাজ তৈরি হবে আগামীতে ।
না হলে সবটাই তো টুকরো টুকরো হয়ে ভাঙতে থাকবে আর সবশেষে ধ্বংসাবশেষের অংশটুকু আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ধরুন আপনার প্রতিবেশী আপনার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করে , সেটা তার সমস্যা।কিন্তু এমন তো নয় যে প্রত্যেক দিন তার বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া করতে যাচ্ছেন বা আড্ডা মারতে যাচ্ছেন আপনি, তবে যদি দেখেন তার সত্যি সত্যি প্রয়োজন আছে তাহলে তার পাশে দাঁড়ানো অবশ্যই উচিত।
আরো পড়ুন – এক কমপ্লেক্সে থেকেও পাশের ফ্ল্যাটের মানুষকে চেনেন কি? গ্রাম আর শহরের মধ্যে এই তফাৎটা কেন?
শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলতেন ‘মান এবং হুশ থাকলে তবেই মানুষ হওয়া যায়‘। অন্তত মনুষ্যত্বের পরিচয়কে নিজের মধ্যে মরে যেতে দেবেন না। ঘটনা যাই হোক না কেন মনে রাখতে হবে এই পৃথিবীতে আপনার কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য আছে আর সেটা শুধুমাত্র আপনার নিজের পরিবারের প্রতি নয় বৃহত্তর পরিবার সমাজের কথাও মাথায় রাখতে হবে না হলে কিন্তু জীবনের সবটা স্বয়ং সম্পূর্ণ কিছুতেই হবে না।
আরো পড়ুন – অন্যান্য মহাদেশের থেকে এশিয়াতে কুসংস্কার এত বেশি কেন?
এখন আপনি বলতেই পারেন যে মানুষটা চিরকাল শুধু অপমান করেছে নানা অত্যাচার করেছে তার বিপদে তাকে দূরে ঠেলে দিয়ে নির্বাক প্রতিশোধ নেবার এটাই তো সময়। হয়তো আপনার জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে সেই মুহূর্তের ভাবনা-চিন্তার মধ্যে কোন অন্যায় নেই কিন্তু প্রত্যেকেই যদি এরকম ভাবেই ভাবতে থাকেন তাহলে ঠিক কোন বিশ্ব আগামীতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তৈরি করছি আমরা সেটা ভাবতে পারছেন?
আরো পড়ুন – সঞ্চয়ী আর কৃপণের মধ্যে ফারাক কোথায়? জানেন কি?
বন্ধু হওয়া বন্ধুত্ব বজায় রাখা এগুলো খুব কঠিন কাজ। সকলে সেটা পারেনা। যদি আপনার মধ্যে ঈশ্বর সেই ক্ষমতা দিয়ে থাকেন তাহলে ঐশ্বরিক সেই ভাবনাকে সম্মান করুন । আর আপনার মূল্যবোধ, বাড়ীর শিক্ষা যে বাকি পাঁচ জনের থেকে আলাদা, সেটা সকলকে বুঝিয়ে দেবার, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার এই তো সময়।
আরো পড়ুন – মহাতীর্থ কেদারনাথ মন্দির সম্পর্কে কতটা জানেন আপনি? পুজো নিতে দেবতা কে আসন ছেড়ে নিচে নামতে হয়?
যে আপনাকে বিপদে ঠেলে দিয়েছে তার বিপদে তাকে দূরে সরিয়ে না রেখে আপনি পাশে গিয়ে দাঁড়ালে সত্যি সত্যি তার বিবেকের দংশন হবে এটা কি আর কথায় বলে বোঝানোর প্রয়োজন আছে? তাহলে ভেবে দেখুন না।,এটাই কি চরম শাস্তি দেওয়া হলো না? আজ এই প্রশ্ন চিহ্ন দিয়েই প্রতিবেদন শেষ করলাম।