Breaking Bharat: ঘুষ খাওয়া অপরাধ নয়, প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া অপরাধ হতে পারে? ঠিক বললাম তো? এই দেশের এটাই কি চূড়ান্ত সত্যি?
যত সময় যাচ্ছে মানুষের মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা তত বাড়ছে। আজকাল যেন সত্যিই মানুষ অপরাধ করতে ক্লান্ত হয় না। আর সব থেকে বড় কথা ঘুষ খাওয়া যে নিজের কাজের সঙ্গে কত বড় বিশ্বাসঘাতকতা প্রবঞ্চনা সেটার সম্পর্কে ন্যূনতম বোধটুকু পর্যন্ত নেই।
আর এই কারণে টেবিলের তলা দিয়ে একের পর এক কাজ হয়েই চলেছে। সবচেয়ে কি আশ্চর্যের বিষয় ঘুষ খাবার তালিকায় একদম উপরে আসে সরকারি অফিসার আমলা আধিকারিক নেতাদের নাম। নিজের এত টাকা উপার্জন করেন তাও আরো টাকার লোভ? কী প্রয়োজন ঘুষ খাওয়ার?
ঘুষের লেনদেন সম্পর্কে:
সমস্যাটা আসলে গোড়া থেকে হয়েই আছে। একটা কথা আছে সহজ কাজকেই সহজ ভাবে ভাবাটা যেন আজকের দিনে বড্ড কঠিন হয়ে গেছে। আর এটাই বোধহয় সবথেকে সহজ সত্যিই এই মুহূর্তের বাস্তব জীবনে। যে কাজই করতে যান না কেন তার জন্য ঘুষ দিতে হবে ।
যেন সোজা পথে বা সৎ পথে এটা করা সম্ভবই নয়। চূড়ান্ত নির্লজ্জের মত ঘুষ চান এমন মানুষ, যাদের প্রচুর টাকা, একটা নিশ্চিন্ত জীবন রয়েছে। অথচ গরিব মানুষকে সর্বস্বান্ত হয়ে ঘুষ দিতে হয় নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজটুকু করানোর জন্য। যেটা নাগরিক অধিকার যেটা প্রাপ্য সেটা জন্য ভুল পথে গিয়ে বা বলা যেতে পারে পেছনের পথ দিয়ে গিয়ে কাজটি হাসিল করাতে হয় আর তার জন্য কী লাগে?
‘ঘুষ‘ – আসলে এই সমস্যাটা মানসিকতার। কে সরকারি পদে আছে বাকি বেসরকারি পদে আছে, উচ্চ পদে আছে নাকি অধীনস্থ পদে আছে এই সব কিছুর জন্য ঘুষ খাওয়াটা নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের মানসিকতার উপরে। আসলে এই বিষয়টা নেপথ্যে আছে ক্যাশ টাকা হাতে পাওয়ার প্রবণতা। মানুষের লোভের বশে এই বিষয়টার বাড় বাড়ন্ত হয়েই চলেছে।
চিরকাল দুর্বলের সুযোগ সবল নিয়ে এসেছে আর এক্ষেত্রেও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। যে মানুষটা সারা জীবন কাজ করে গেছেন, লড়াই করে গেছেন তার নিজের প্রাপ্য টুকু পাওয়ার জন্য জীবনের শেষ সম্বল টুকু পর্যন্ত বিসর্জন দিতে হয়েছে যেহেতু তাকে ঘুষ দিতে হবে। এমন ঘটনাও কিন্তু বিরল দৃশ্য নয় আজকের পৃথিবীতে। তবে কি এই অবস্থার পরিবর্তনের কোনও রাস্তা নেই?
আরো পড়ুন – আপনার কী সবসময় শীত শীত অনুভূতি হয়? লেপ কম্বল চাপা দিয়ে হাত পা ঠান্ডা থাকে?
আসলে পুরো সিস্টেমটাই খারাপ হয়ে গেছে তাই এই ধরনের দুর্নীতিকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলা দরকার। সত্যি কি অবাক করা বিষয় হলো যে দেশের অর্থনীতি অনুন্নত সেখানেই প্রবণতা তত বেশি। বিশ্বের উন্নত দেশে কিন্তু এই ধরনের ঘুষ নেওয়ার মানসিকতা বা প্রবণতা অনেকটাই কম থাকে।
কারণটা খুব সাধারন। যখন সব ধরনের মানুষই উন্নত জীবনযাত্রার মধ্যে থাকবেন তাহলে আমার আরো বেশি চাই এই মানসিকতা অচিরেই বিলোপ হতে থাকবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই নিম্ন আয়ের দেশে দুর্নীতি কিন্তু উন্নত দেশের থেকে অনেকটাই বেশি।
আরো পড়ুন – মহাতীর্থ কেদারনাথ মন্দির সম্পর্কে কতটা জানেন আপনি? পুজো নিতে দেবতা কে আসন ছেড়ে নিচে নামতে হয়?
তাই ঘুষ দিয়ে একটা শ্রেণীকে উন্নত করলেই হবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরো দেশের অর্থনীতির কাঠামো পরিবর্তন করা যাচ্ছে, নতুন সেই বিপ্লব আনা যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু এই মানসিকতা থেকে রেহাই পাবে না কেউ। আরেকটা কথা বিশেষভাবে বলা দরকার আইন করে কোন কিছুকে আটকানো অন্তত এই যুগে দাঁড়িয়ে সম্ভব নয়।
আরো পড়ুন – ‘ফাঁসি’ শব্দটা শুনলেই আঁতকে ওঠেন তাই না? সিনেমায় যেভাবে দেখানো হয় আদৌ কি তাই বলে জেল ম্যানুয়াল ?
পরিবর্তন তখনই আসবে যখন চিন্তা ভাবনা বদলাবে আর তার জন্য পরিস্থিতির বদল ঘটানো দরকার। ভালো থাকতে সকলেই চাই কিন্তু ভালো মানুষ হতে চায় ক’জন ? এটা পরিষ্কার করে বোঝার আর বোঝানোর সময় বোধহয় এসে গেছে।