Kedarnath Temple: মহাতীর্থ কেদারনাথ মন্দির সম্পর্কে কতটা জানেন আপনি? পুজো নিতে দেবতা কে আসন ছেড়ে নিচে নামতে হয়?
কেদারনাথ মন্দির মানেই ভক্তিতে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে আমাদের। কিন্তু খুব কম মানুষ আছেন যারা জানেন এই মন্দিরের আসল ইতিহাস। দেবাদিদেব মহাদেব রুষ্ট হলে সব শেষ এক নিমেষে। আর তাই কেদারখণ্ডকে একবার স্পর্শ করার জন্য সবথেকে বেশি করে মন প্রাণ এক হয়ে প্রার্থনার দিকে লক্ষ্য থাকে সবার (Kedarnath Temple News in Bengali)।
কেদারনাথ মন্দিরের রহস্য:
আপনি কি জানেন কেদারনাথ মন্দিরের কেদারখণ্ড কতটা প্রাচীন? হয়তো কল্পনাও করতে পারবেন না কিন্তু এটাই বড় সত্যি যে শিবের বয়স যত ঠিক ততটাই পুরনো এই খন্ড বলে মনে করা হয়। অনেকেই জানেন না যে বর্তমান কেদারনাথের মন্দিরটির নির্মাণকর্তা হলেন আদিগুরু শংকরাচার্য৷
সনাতন হিন্দু ধর্মে যে চার ধামের উল্লেখ আছে তার মধ্যে একটা হচ্ছে কেদারনাথ। হিন্দু ধর্মানুসারীদের অন্যতম প্রধান ও পবিত্র তীর্থস্থান যে এটাই তা তো বলাই বাহুল্য। ভৌগলিক অবস্থান হল ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গাড়োয়াল হিমালয় পর্বতশ্রেণী।
মন্দাকিনী নদীর তীরে স্থাপিত একটি শিব মন্দির ঘিরে রয়েছে একাধিক জনশ্রুতি। আদি মন্দির পাণ্ডবরা নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়। ভক্তদের বিশ্বাস শঙ্করের সেবক নন্দী নাকি শিবের রক্ষণাবেক্ষণ করেন আর সেই কারণেই মন্দিরের দরজায় নন্দীর বড় একটি মূর্তি দেখা যায়। যুগযুগ ধরে ভগবান আর বিশ্বাস এক সঙ্গে চলে এসেছে। এই তীর্থক্ষেত্রটির মহিমা অপার।
কেদারনাথ মন্দিরের ইতিহাস:
প্রচলিত বিশ্বাস কেদারনাথ মন্দিরে গিয়ে পঞ্চকেদার দর্শন না করলে নাকি কেদার-দর্শন সর্বার্থকরণে সার্থক হয় না। ঠিক কবে থেকে আর কী কারণে দেবতা কেদারে থাকতে শুরু করলেন এই প্রশ্ন অনেকেই করেন। জনশ্রুতি আছে এক সময় ভগবান নরনারায়ণ মাটি দিয়ে মূর্তি গড়ে শিবের পুজো করেন ।
সন্তুষ্ট হয়ে ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন শিব এবং সেই থেকেই তিনি কেদারে বাস করতে শুরু করেন। কোনোভাবেই এই বিশ্বাসের সত্যতা যাচাই সম্ভব নয়,সেটা আপনিও জানেন। যুগ যুগ ধরে এভাবেই ঈশ্বর আছেন মানুষের মননে।
আরো পড়ুন – শিকাগো স্মৃতির ঐতিহ্য! কিন্তু সেই শহরের হঠাৎ ‘কসাইখানা’ নাম হল কেন?
এমনিতেই দুর্গম জায়গা, যখন তখন প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। তাই অনেকেই মনে করেন কেদারনাথ বেড়ানোর সবচেয়ে ভাল সময় হল গ্রীষ্মকাল। আসলে এই সময়ে সাইট সিয়িং দারুন ভাবে উপভোগ করা যায়। বৃষ্টির সময়টা ভাল নয় ঘোরার জন্য আর ঠান্ডায় ছয়মাস কেদারনাথ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। স্বয়ং ভগবান শিব তখন থাকেন গুপ্তকাশী বা উখিমঠে।
কেদারনাথ সম্পর্কে অজানা এই কথাগুলো:
আসলে শীতে এখানে এত বরফ জমে যে সব বন্ধ হয়ে যায় ফলে পুরোহিতরা নেমে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু দেবতার পুজো নিশ্চয়ই বন্ধ করা যায় না, তাই ভগবানকেও ওই সময় অস্থায়ী ঠিকানা নিতে হয় উখিমঠে ৷ পালকিতে চড়ে শিবের এই অবরোহণ এবং আরোহণের একটা বিশেষ নাম আছে যা হল ‘ডোলিযাত্রা’৷ কেদারনাথ বিপর্যয়ের সময়েও কিন্তু মন্দিরের এতটুকু ক্ষতি হয়নি।
আরো পড়ুন – দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝুন বা না বুঝুন, আক্কেল দাঁতের মর্যাদা আপনাকে বুঝতেই হবে, তাই না?
ট্রেনে বা প্লেনে আজকাল কেদারনাথ যাওয়া কোনও ব্যাপার নয়।দুন এক্সপ্রেস, কুম্ভ এক্সপ্রেস, উপাসনা এক্সপ্রেস-এ করে সোজা হরিদ্বার পৌঁছে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে সীতাপুর। রাত্রিবাস করে শোনপ্রয়াগ চেকপোস্ট পৌঁছে মেডিকেল চেক-আপ হয় এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ড পরীক্ষা করা হয়৷ উত্তরাখণ্ড সরকারের নতুন নিয়ম অনুসারে কার্ড ছাড়া পুণ্যার্থীদের কেদার যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না৷
আরো পড়ুন – রান্নার তেল নিয়ে কতটা সচেতন আপনি? রিফাইন্ড তেল খাওয়া আজই বন্ধ করুন, না হলে বিপদ !
এরপর ফের চার কিলোমিটার দূরে গৌরীকুণ্ডর যাত্রা শুরু৷ সেখান থেকে ভীমবলি৷ এখানে মন্দাকিনীর ওপর একটা ব্রিজ তৈরি হয়েছে৷ ব্রিজ পেরিয়ে আরও প্রায় চার কিলোমিটার গেলে লিঞ্চোলি৷ লিঞ্চোলি থেকে কেদার পাঁচ কিলোমিটার৷ বিমানে জলিগ্রাণ্ট এয়ারপোর্টে নেমে তিরিশ মিনিট সফরে ঋষিকেশ পৌঁছতে পারেন, তারপর সেখান থেকে যোশিমঠ৷ উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে কেদার যেতে পারেন আপনি।