Breaking Bharat: ‘স্টেগনোগ্রাফি’ বলতে আপনি কী বোঝেন? প্রযুক্তিবিদ্যার সঙ্গে জড়িত এই বিদ্যা কোন কাজে লাগবে আপনার?
বিজ্ঞান আজকাল দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। একেরপর এক আবিষ্কার জীবনকে একাধিক স্বাছন্দ্য এনে দিয়েছে। আর ততই প্রশ্ন হচ্ছে গোপনীয়তা নিয়ে। প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার করতে করতে কোথায় যেন আমাদের যাবতীয় গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে সহজেই। হাজার চেষ্টা করেও তা আটকান যাচ্ছে না। ভাবছেন শিরোনামের সঙ্গে এই কথার যুক্তি কি, তাইতো?
তাহলে উত্তর হল, একেবারেই কম গুরুত্বপূর্ন জিনিষের মাঝে খুবই গোপনীয় বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে রেখে দেওয়ার মতো চমদপ্রদ কাজটি করে এই আলোচ্য স্টেগনোগ্রাফি। তাহলে চলুন এবার এই যন্ত্রকে পুরোপুরি চেনা যাক (types of steganography)।
স্টেগনোগ্রাফি কাকে বলে উদাহরণ দাও?
আসলে এটা সাধারণের জানার কথা নয় কারণ আইটি সেক্টরে বা হ্যাকারদের কাছে এর একটা আলাদা উপযোগীতা আছে। ব্যবহারকারীরা বলেন এই ব্যবস্থার সবথেকে বড় সুবিধা হল এতে মেসেজ সাংকেতিক ভাবে গোপন করতে হয় না। সহজে বলতে গেলে ছেলেবেলার অদৃশ্য কালি দিয়ে মেসেজ লেখার কথা মনে আছে?
মানে ঐ কাগজের উপরে কোন কিছু লেখা যেটা সাধারণ চোখে দেখা যায় না কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হল আগুনের উপরে ধরলে অদৃশ্য লেখা ফুটে ওঠে। স্টেগানোগ্রাফির ব্যাপারটাও ঠিক এইরকম। আজকের দিনে কম্পিউটারের বিশ্ব, প্রায় সবকিছুই ডিজিট্যাল। তাই ধরুন কোনো কম্পিউটারের ফাইল মানে তাতে গুপ্ত তথ্য নির্বিঘ্নে লুকিয়ে রাখা স্টেগানোগ্রাফির আসল কাজ।
এরই নাম হল ডিজিট্যাল স্টেগানোগ্রাফি।এবার বিষয়টা একটু টেকনিক্যালি বুঝতে হবে। আচ্ছা ধরুন কম্পিউটারে যে ছবি দেখি তা আসলে আলাদা আলাদা রঙের কয়েকটি পিক্সেল। লাল, সবুজ আর নীল তিনটি প্রধান রঙের মিশেল এই ছবি । একটি ছবির অর্থ হল একটি আয়তাকার সারি। প্রত্যেকটা রঙের আলাদা সংখ্যা থাকে যা ১০০ করে হিসেব হয়।
এইবারে এই ছবির একটি পিক্সেলে নীল ১৫০ না হয়ে ১৪৮ বা ৪৯ হলে যে তফাৎ হয়, তা মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। সুতরাং সংখ্যার এককের অঙ্কে হেরফের করে আপনি একটি ছোট্ট বার্তা লিখে ফেলতে পারেন। যারা এই নিয়ে কাজ করেন তাদের কাছে বিষয়টি জল ভাতের মত। ব্যাপারটা এখানেই শেষ নয়।
আরও ক্রিয়েটিভ হতে চাইলে হাই-রেজলিউশানের ছবি ব্যবহার করতে পারেন যাতে লক্ষাধিক পিকসেল থাকে। সেইসবের হের ফের করে দিলেই কেল্লাফতে।
আরো পড়ুন – ব্ল্যাক মাম্বা! এক ছোবলেই ছবি? কোন সাপের মাত্র দু’ফোঁটা বিষে এক মুহূর্তে সব শেষ?
এবার বলি যারা ডিজিটাল ওয়াটারমার্কিং সম্পর্কে জানেন তারা বোঝেন যে মিডিয়া ফাইলের ভিতরে স্টেগনোগ্রাফিক পদ্ধতিতে আপনার তথ্য বসিয়ে দেওয়া রইল। পরে কেউ সেই মিডিয়া নিজের বলে দাবী করলে আপনি কাকে উপযুক্ত জবাব দিতে পারবেন।
আরো পড়ুন – ‘কাক’ শুভ সংকেত বহন করতে পারে সেটা কি আপনি জানেন? ‘কাক’ কখন দেখলে দিনটা ভালো?
আসলে বর্তমান যুগে এত গোপনীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করেও যেভাবে সব তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে, সেক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তবে আজকের যে পদ্ধতির কথা আপনাদের জানানো হলো সেই সম্পর্কে সাধারণ মানুষ খুব একটা বেশি অবগত নন।
আরো পড়ুন – মহিলাদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রবণতা কি কমছে? পরবর্তী সময় কি আমাদের আরও পিছিয়ে দিল?
যারা প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করেন তাদের কাছে এই সবটাই অতি পরিচিত। তাহলে বুঝতে পারলেন পৃথিবী কত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, আপনিই বা কেন পিছিয়ে থাকবেন তাই না?