Breaking Bharat: মন দিয়ে লেখাপড়া করতে গেলে কলম সবার আগে দরকার তাই না? কিন্তু এই কলম এলো কোথা থেকে? কে এই ‘কলম আবিষ্কার‘ করেন বলতে পারেন?
সরস্বতী পুজোর দিন বাণী সবার আগে মায়ের কাছে খাতা বই পেন জমা রাখা। যাতে পরীক্ষার সময় সহজে উতরে যাওয়া যায়। আর এই কলমের একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। অনেকেই ঠাকুর দেবতার পায়ের কাছে পেন বা পেন্সিল ছুঁয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু যাকে নিয়ে এত কান্ড তার আবিষ্কার সম্পর্কে খুব বেশি জানি না আমরা (Invention of the pen wikipedia)।
কে এই কলম আবিষ্কার করেন বলতে পারেন?
ইংরেজিতে এই কলমকে আমরা ‘পেন‘ বলি যেটা আসলেই একটি ল্যাটিন শব্দ। এত সময় ছিল যখন পালকের কলম ব্যবহার করা হতো আর তাতে কালি ডুবিয়ে দেওয়া হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে পরিস্থিতি। ভারতবর্ষে আগে খাগের কলম ব্যবহার হত।
আদিমকালের গুহাচিত্রে নানা ধরনের আঁকিবুকি লক্ষ্য করা যায়। পরবর্তীকাল চীনে উটের লোম দিয়ে তৈরি তুলির ব্যবহার লক্ষ করা যায়। মনে করা হয় যে প্রাচীন মিসরীয়রা সর্বপ্রথম এই কলম আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন। তবে সেই সময় মানুষ একটি কাঠির ডগায় তামার নিবের মত বা ধাতব কিছু একটা পড়িয়ে নিয়ে লেখালেখির কাজ করতে শুরু করে।
আধুনিক যুগে যে পেনের কথা বলা হয় তার আবিষ্কার ইংল্যান্ড। সাল প্রায় ১৭৮০, যদিও পরবর্তী ৫০ বছরে সেই নিয়ে আর খুব একটা হেলদোল দেখা যায় নি। সকলেই জানেন যে ১৮৮৪ সালে ‘ওয়াটারম্যান’ আবিস্কার করেন ‘ফাউন্টেন পেন‘। রবি ঠাকুরের ঝর্ণা কলমের সূচনা এটা থেকেই বলে অনেক সাহিত্যিকরা মনে করেন।
আরো পড়ুন – বুড়ো বয়সে ভীমরতি মানে কী? চক্ষু চড়ক গাছ? বুজরুকি কাণ্ড! বাংলা বাগধারার বাস্তব প্রয়োগ কতটা?
এই ধরনের কলমের নিব তৈরিতে প্রয়োজন হত ১৪ ক্যারেট সোনা। আর ডগা তৈরি করতে তৎকালীন সময়ে ব্যবহার করা হতো ইউরিডিয়াম। সুতরাং দাম খুব একটা সহজ বা কম ছিল না, বলাই যায়। এবার বলি বলপেনের কথা। ১৮৮৮ সালের ৩০ অক্টোবর এই ধরনের পেন আবিষ্কার হয়।
‘জন লাউড’ নামক একজন মার্কিনি চামড়া ব্যবসায়ী ব্যবসার প্রয়োজনে এটি আবিষ্কার করেন। সেই সময় দাঁড়িয়ে তিনি এমন একটি কলম বানিয়েছেন যাতে একটি ছোট খোপে কালি জমা রাখা থাকতো। আর সেই কলমের মাথায় এমন একটি স্টিলের বল লাগানো ছিল যা সহজেই এদিক ওদিক ঘুরতে পারে।
আরো পড়ুন – বিয়ে মানেই কি পাত্র পক্ষের দাবি পূরণ? টাকা, সোনা, আসবাব আর কত দেবে কন্যা পক্ষ?
পরবর্তী ত্রিশ বছরে বলপেনের আরও সাড়ে তিনশটি প্যাটেন্ট তৈরি হলেও কোনটাই সাফল্য পাইনি।কিন্তু চামড়ার উপর যে পেনে লেখা যেত তা কাগজে লেখা যেত না। বিংশ শতাব্দীতে অবশেষে তৈরি হয় ‘বলপয়েন্ট’ পেন বা ‘বলপেন’। ১৯৩৮ সালে বলপেনের ব্রিটিশ প্যাটেন্ট পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এই কলমের প্যাটেন্ট অনুযায়ী আর্জেন্টিনায় ‘বিশেষ পেন‘ তৈরি হয়।
সেসময় মিল্টন রেয়নোল্ডস নামের এক আমেরিকান ব্যক্তি আর্জেন্টিনায় ঘুরতে গিয়ে এই কলমের সন্ধান পান। তারপর তিনি তার ভাইদের কলমের মডেলকে আরও উন্নত করেন এবং একটি কোম্পানি তৈরি করেন যার নাম দেন রেনল্ডস।
আরো পড়ুন – জিন্সের সঙ্গে সোনার সম্পর্ক! জিন্স পরতে পছন্দ করেন? ডেনিম জিন্স কেন এত পছন্দের?
মার্সেল বিক ছিলেন একজন ইতালীয় বংশোদ্ভূত, ফরাসি নির্মাতা এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বলপয়েন্ট কলম, লাইটার এবং রেজার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘BiC’— এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এই বল পেনের মডেলকে আরো উন্নত করেন এবং গবেষণা চালিয়ে যান।
অবশেষে ১৯৫২ সালে সব সমস্যা দূর করে তিনি নিয়ে আসেন কম দামে অসাধারণ এক বলপেন, যায় নাম দেন “Ballpen BiC”। তাহলে আজকাল সহজেই যে বল পেন ব্যবহার করেন তার গভীর ইতিহাসটা সম্পর্কে জানতে পারলেন তো?