Breaking Bharat: জিন্সের সঙ্গে সোনার সম্পর্ক শুনেছেন কখনো? জিন্স পরতে পছন্দ করেন? ডেনিম জিন্স কেন এত পছন্দের?
আজকের যুগের ফ্যাশন বলতে তাতে ক্যাজুয়াল লুকের দাপট বড্ড বেশি। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সবার পছন্দের তালিকায় খুব সহজেই জায়গা করে নেয় নীল জিন্স বা ডেনিম জিন্স। ছেলে হোক বা মেয়ে এই জিন্স সবার মন জয় করেই নেয়। যতদিন যায় ততই জিন্সের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
আর এই ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে নয় বিশেষ করে নীল জিন্স প্রায় একশরও বেশি বছর আগে পথ চলা শুরু করেছিল। আর হ্যাঁ প্রতিবেদনের শিরোনামে যে প্রসঙ্গ উল্লেখ করা আছে সেটা জানলেও অবাক হতে হবে আপনাকে অর্থাৎ সোনার সঙ্গে জিন্সের সম্পর্ক।
সোনার সঙ্গে জিন্সের সম্পর্ক:
পোশাক মানুষের বাহ্যিক একটা আবরণ বটে। কিন্তু সেই পোশাকে আজকাল মিলেছে ফ্যাশনের ট্রেন্ড। অর্থাৎ কতটা আকর্ষণীয় করে নিজেকে উপস্থাপিত করা যায় পোশাকের মাধ্যমে সেটাই আসল লক্ষ্য। সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে জিন্স সকলেরই কমবেশি পছন্দের।
নানা রঙের জিন্স আজকাল প্রচুর দেখা গেলেও, এই প্যান্ট তার ঐতিহ্য তৈরি করেছে নীল রংয়ের মধ্যে দিয়ে। অবশ্য এই নীল রংটা আর চার-পাঁচটা নীলের মত নয়। অন্যান্য নীল যত গভীর হোক এটা যেন তার থেকেও বেশি করে সংমিশ্রণে তৈরি হওয়া একটা রং।
আপনি জানেন ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৮৪৮ এ সোনার সন্ধান পাওয়া যায়। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই জিন্সের প্যান্ট বিখ্যাত হয়ে ওঠে। বুঝতে নিশ্চয়ই একটু অসুবিধা হচ্ছে ? তাহলে চলুন বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া যাক।
আসলেই ক্যালিফোর্নিয়া তে যখন সোনা পাওয়া গেছে বলে চারিদিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে, তখন পৃথিবীর নানা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্যালিফোর্নিয়ায় সোনার সন্ধানে যেতে শুরু করেন। সন্ধান না হয় পাওয়া গেল কিন্তু সোনা উদ্ধার করা সহজ কাজ ছিল না।
এমনিতেই খনিতে কাজ করা যে কতটা কঠিন সে বিষয়ে হীরক রাজার দেশে ছবিতে খানিকটা আন্দাজ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়। সে যাই হোক আবার মূল প্রসঙ্গে ফিরে যাই। সোনার খনিতে নেমে কষ্ট করে সন্ধান চালানোর পরে পারিশ্রমিক হিসেবে মিলত এক চিলতে সোনা। কিন্তু কাজটা মোটেই সহজ ছিল না।
আরো পড়ুন – Hero Alom: হিরো না হয়েও কী করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে হিরো আলম?
সময় ঘড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিত তবুও একনাগারে কাজ করেও সোনার দেখা মিলতো না। কিন্তু এত কিছু করতে গিয়ে জামা কাপড়ের বারোটা বেজেই যেত। সূত্র ঘেঁটে জানা যায় সে সময় ক্যালিফোর্নিয়াতে বর্ন লিওয়ব স্ট্রস নামে এক জার্মান দোকান ডাই এবং কাপড়ের ব্যবসা করতে শুরু করেছিলেন। আমেরিকা আসার আগে লিওয়ব তার নাম পরিবর্তন করে লিভাই রেখেছিলেন।
আরো পড়ুন – টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সিরিয়াল কি খারাপ প্রভাব ফেলছে সমাজে?
এই দোকানেই নিয়মিত আসতেন জার্মান দর্জি জেকব ডেভিস। লিভাই-এর দোকানের নীল মোটা কাপড় দিয়ে জার্মান দর্জি সোনার খনিতে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য বিশেষ রকমের প্যান্ট বানাতেন। কিন্তু প্যান্ট বানানোর সময় জেকব খেয়াল করেন যে হালকা রঙের প্যান্ট তৈরি করলে সেটা বেশিদিন থাকবে না কারণ ময়লা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আরো পড়ুন – নিষিদ্ধ ছবি দেখতে পছন্দ করেন? কেন এটা নীল ছবি সেটা নিয়ে কোন ধারণা আছে কি?
তাই তিনি প্যান্টের রঙ গাঢ় নীল করে দেন সঙ্গে আবার কোমরের কাছে পকেটের দিকে যাতে ছিঁড়ে না যায় তাই জুড়ে দেন তামার পাত। ফলে টেকসই এই প্যান্ট অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। এরপর জেকব আর লিভাই স্ট্রস মিলিতভাবে একটি ‘লিভাই স্ট্রস অ্যান্ড কোং’ দামি একটি সংস্থা শুরু করেন।
আরো পড়ুন – বিজ্ঞানী না সেলিব্রেটি কে বেশি প্রিয়? জনপ্রিয়তা পাওয়ার মূল শর্ত কোনটি?
১৮৯০ সালের মধ্যে এই সংস্থার তৈরি জিন্স আমেরিকায় বিপুল জনপ্রিয়তা পায়, আর ১৯২০ সালের মধ্যে কার্যত আমেরিকার বাজার পুরোপুরি দখল করে নেয় লিভাইস-এর তৈরি করা ‘ডেনিম ওয়েস্ট’ জিন্স। তাহলে বুঝলেন তো সোনার কানেকশন টা ঠিক কিরকম!