Breaking Bharat: পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিপীঠ কোথায় জানা আছে? ছ হাজার বছরের পুরনো মন্দিরের ইতিহাস জানলে চমকে উঠবেন আপনি!
এখানে মস্তকহীন দেবীর পুজো করা হয়:
ভারতবর্ষ হিন্দু ধর্মের দেশ। তার পাশাপাশি এটাও সত্যি যে এই দেশ সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা বহন করে এসেছে চিরকাল। এই দেশের পুরাণ এবং ধর্ম শাস্ত্রে সতীর একান্ন শক্তিপীঠের কথা উল্লেখ আছে। আজ আমরা শুধু দেশের নয় বরং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিপীঠ সম্পর্কে জানাবো আপনাদের।
এই মন্দিরের ইতিহাস জানলে চমকে উঠবেন আপনিও। কারণ এই মন্দিরে দেবীর ছিন্ন মস্তক পুজো করা হয়। অবিশ্বাস্য মনে হলে আপনাকে ঠিকানা সমেত জানিয়ে দিই যে ঠিক কোথায় রয়েছে এই মন্দির।
ছিন্নমস্তক দেবীর প্রকৃত রূপ কী?
ভৌগোলিক হিসেব মেনে চললে ছিন্নমস্তিকা দেবীর মন্দির ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি থেকে প্রায় ৮০ কিমি দূরে অবস্থিত। জায়গাটির নাম হল রাজরাপ্পা। সব জায়গায় দেবী মূর্তি মানে দেবীর চোখ, নাক, জিহ্বা, ললাট । কিন্তু এই মন্দিরে দেবী ছিন্নমস্তা আর ঠিক সেই কারণের জন্যই এখানে মস্তকহীন দেবীর পুজো করা হয়। এই মন্দিরের ইতিহাস প্রায় ছয় হাজার বছরের পুরনো বলে প্রামাণ্য নথি থেকে জানা যায়।
অনেকে নিশ্চয়ই আগ্রহ প্রকাশ করছেন যে দেবী এখানে কী ভাবে রয়েছেন। অর্থাৎ ছিন্নমস্তক বোঝা গেল কিন্তু দেবীর প্রকৃত রূপ কী? দেবী এখানে প্রেমের প্রতীক। তিনি এখানে কামদেবের উপর অধিষ্ঠাত্রী ,তার রূপ নগ্ন , তার পরিচয় রতি।
ছিন্নমস্তা দেবীর সৃষ্টির নেপথ্যের কাহিনী জানা আছে?
এই দেবী এবং এই মন্দির নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে যা পরবর্তীতে ইতিহাসের এক কিংবদন্তি অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। কেন দেবীর এই রূপ তা নিয়ে নানা রকমের জনশ্রুতি আছে। তার মধ্যে একটি বিশ্বাস হলো, এক বার দেবী তাঁর সখী সঙ্গে গঙ্গা নদীতে স্নান করতে গেছিলেন। তখন সেখানে তাঁর দুই সখী ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন।
আরো পড়ুন – দেশে কোন মহিলার নামে প্রথম রেলস্টেশন! এক মহীয়সী নারীর নামাঙ্কিত স্টেশন চোখে পড়েছে?
ক্ষুধা এতই প্রবল হয় যে তাঁদের দু’জনের গায়ের রং পরিবর্তিত হয়ে কালো হয়ে যায়। তখন দেবী সেই অবস্থায় তাঁর সখীদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য নিজের শিরশ্ছেদ করার সময় নিজের মাথা বাম হাতে পড়ে যায়। সেখান থেকে রক্তের স্রোত তিন ধারায় বইতে শুরু করে। দেবী দু’টি স্রোত সখীদের প্রদান করেন এবং অবশিষ্ট স্রোত থেকে নিজেই রক্ত পান করতে শুরু করেন।
আরো পড়ুন – অভিনয় না করেও বলিউডের মালাইকা আরোরা কি করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করে?
মা উগ্র রূপে অবস্থান করেন তাই তন্ত্র-মন্ত্রের উপাসকরাও এই দেবীকে পুজো করেন। সাধকরা বিশ্বাস করেন যে তন্ত্র সাধনার মাধ্যমে মাকে তুষ্ট করতে পারলে মা ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন। এই দেবী মূর্তির ডান হাতে তলোয়ার থাকে বাম হাতে নিজের বিচ্ছিন্ন মস্তক। সর্প মালা এবং মুণ্ডমালা পরিহিতা দেবী।
আরো পড়ুন – হাত কেটে পা কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখে ভালবাসার কথা বোঝানোর চেষ্টা মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়
পদ্মফুলের ওপরেই দেবী মূর্তিটি অধিষ্ঠাত্রী।দেবী ছিন্নমস্তিকার মন্দিরে যেতে হলে আপনাকে বীমা পথে রাঁচিতে পৌঁছে সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি বা বাস ধরতে হবে। ট্রেনে করে রামগড় রেল স্টেশনে নেমে ফের গাড়ি করে যেতে পারেন। আবার সড়কপথেও পৌঁছে যেতে পারেন সরাসরি এই মন্দিরে।
যদি এরকম কোন প্ল্যানিং করে থাকেন তাহলে আপনার অভিজ্ঞতার কথা আমাদের জানাতে ভুলবেন না যেন।