Breaking Bharat: লেখাপড়া করা আর জ্ঞানী হওয়া দুটোই কি এক? জ্ঞানী হওয়া বোধহয় সকলের দ্বারা সম্ভব হয় না। শিরোনামে আজকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে । আসলে শিক্ষার সঠিক সংজ্ঞা কী সেটা কখনোই কথাই বোঝানো যায় না সবটাই কাজ করে বোঝাতে হয়।
লেখাপড়া করার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে কারণ পড়াশুনা না করে ডিগ্রী না পেয়ে জীবনে একটা পা ও এগোনো যায় না। কিন্তু ডিগ্রি লাভ করে সবটা করা সম্ভব বা শিক্ষিত হওয়া যায় এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ভারতবর্ষের মতো দেশে পড়াশোনাটাকে চাকরি-মুখী করে দেওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে। অর্থাৎ ছোটবেলা থেকে শেখানো হয় মন দিয়ে লেখাপড়া করলে তবে বড় হয়ে গাড়ি ঘোড়া চড়া যাবে।
কিন্তু এই সবটাই যে নম্বর সর্বস্ব শিক্ষা, ভবিষ্যতে গিয়ে এর কোন কার্যক্ষমতা বাস্তব ক্ষেত্রে আছে কি, বা তার প্রয়োগ করার জায়গা রয়েছে কি, এই প্রশ্ন ছোটবেলা থেকে কারোর থাকে না। তাই মা-বাবা থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সকলেই নম্বর আর সার্টিফিকেটের পেছনেই দৌড়াতে থাকে। তবে এত কিছু করেও জ্ঞানী হওয়া বোধহয় সকলের দ্বারা সম্ভব হয় না।
শিক্ষা কোনদিনই কাউকে জ্ঞানী করতে পারে না:
প্রকৃত শিক্ষা মানুষকে উদার করে সব সংকীর্ণতাকে দূরে ঠেলে দেয়। শিক্ষার আলোয় পৃথিবী এক অন্য মাত্রায় উদ্ভাসিত হয়। যে শিক্ষা কুসংস্কার কে প্রাধান্য দেয়, পরিস্থিতির সঙ্গে প্রয়োজনের ভারসাম্য বুঝে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠার বার্তা বহন করতে পারে না সেই শিক্ষা কোনদিনই কাউকে জ্ঞানী করতে পারে না।
সবার আগে দরকার অন্তরের জ্ঞান তার জন্য পুঁথিগত বিদ্যার প্রয়োজন হয় না। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলতেন চাল কলা বিদ্যায় তার কোন অনুরাগ নেই। তিনি যুগাবতার, তাঁর থেকে পরম জ্ঞানী খুজলেও বোধহয় পাওয়া যাবে না। স্কুলের গণ্ডিতে যেতেই চাইতেন না বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জ্ঞানী মানুষের তালিকা তার নাম ছাড়া তৈরি করা সম্ভব কি?
এই সবকিছুই প্রমাণ করে শিক্ষা মানুষকে অর্জন করতে হয় আর সেটা পরীক্ষার খাতায় লেখা নম্বরের ভিত্তিতে হয় না। প্রকৃত শিক্ষা আসে সংস্কার থেকে, ভালো বিচার থেকে আর কোন কিছুকে অনুধাবন করার মানসিকতা থেকে যেটা তৈরি হয় বাড়িতে ছোটবেলায়।
টোলে গিয়ে গুরু মশাই পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে মাস্টারমশাই তারপর পরবর্তীতে শিক্ষক মশাই এবং বর্তমানে স্কুলে গিয়ে স্যার বা ম্যাডাম বইয়ের সিলেবাসের পড়াটুকু আপনাকে বোঝাতে পারে কিন্তু সেখান থেকে নির্যাস নিয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার পথটা সুগম করতে তাদের কাছে এগিয়ে যেতে হবে আপনাকেই।
আরো পড়ুন – সকলেই বলাবলি করছেন পৃথিবী ধ্বংস হবে। কিন্তু কী ভাবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎবাণী জানেন?
বর্তমানে সামাজিক ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একা দোষ দিলে চলবে না গণজ রয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে। জ্ঞান লাভের জন্য শিক্ষা নয় চাকরি লাভের জন্য শিক্ষা, এই ধারণায় যতদিন সমাজ চলবে ততদিন পর্যন্ত প্রকৃত জ্ঞানের সন্ধান এই সমাজেই পাওয়া সম্ভব হবে না।
আরো পড়ুন – চীনাদের প্রিয় খাদ্য? চীনারা রাতের খাবারে কি খায়? কিন্তু চীনাদের কি প্রিয় সেটা জানেন?
তারমানে এমনটা নয় যে পড়াশুনার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাকে কোন কিছু বোঝাতে গেলে আপনার ভেতর থেকে সেই বিষয়ে দক্ষতা বা জ্ঞান থাকা দরকার। আর যে শব্দগুলো বেছে নিয়ে মানুষকে আপনি বোঝাবেন সেই শব্দগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়ে তার মর্ম বোঝার জন্য অবশ্যই একটা স্কুলের ডিগ্রি থাকতে হবে আপনার।
আরো পড়ুন – ক্রিকেট জ্বরে কাবু ভারত, টিম ইন্ডিয়া জার্সির রং কেন নীল এই নিয়ে ভেবেছেন কি?
জ্ঞান অর্জনের জন্য উচ্চশিক্ষা লাভ করতে গেলে আগে ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নম্বর পেয়ে ভালো ফল করতে হবে আপনাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন একে অন্যের পরিপূরক। তাই পুঁথিগত শিক্ষা ছাড়া জ্ঞানী হওয়া কখনোই সম্ভব নয়। কিন্তু জ্ঞান লাভ করতে গেলে পুঁথিগত শিক্ষাই যে একমাত্র মাধ্যম এ ধারণা ভুল ।
আরো পড়ুন – কারোর কাছে ভিক্ষা চাওয়া কি অপরাধ? কিন্তু ভিক্ষার নামে এ কী কাণ্ড ঘটালেন মহিলা?
তার প্রমাণ এর আগেও মিলেছে, বর্তমানেও জ্বলজ্বল করে দেখতে পাচ্ছে এই সমাজ। মানুষের মত মানুষ হতে গেলে আবার সেই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কথার সুর ধরেই বলতে হয় মান এবং হুঁশ থাকাটা সবার আগে দরকার